সাড়ে ১২ লাখ টাকা নিয়ে বের হন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কর্মী, দুদিন পর লাশ উদ্ধার
Published: 13th, August 2025 GMT
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার মগড়া নদী থেকে হাত বাঁধা অবস্থায় রিজন মিয়া (২২) নামের এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের দুই দিন পর গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রাম–সংলগ্ন নদী থেকে তাঁর অর্ধগলিত লাশটি উদ্ধার করা হয়। পরিবারের দাবি, নিখোঁজের সময় রিজনের কাছে ১২ লাখের বেশি টাকা ছিল।
রিজন মিয়া জেলা শহরের পশ্চিম নাগড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা (এমএফএস) বিকাশ এজেন্টের কর্মী হিসেবে জেলা শহরে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার সকালে নেত্রকোনা শহরের বিকাশ এজেন্টের কার্যালয় থেকে সাড়ে ১২ লাখ টাকা নিয়ে বের হন রিজন। সর্বশেষ বেলা তিনটার দিকে তিনি সদর উপজেলার বাজারে অবস্থান করছিলেন। এরপর থেকে তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাঁকে না পেয়ে ওই রাতে পরিবারের লোকজন নেত্রকোনা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গতকাল সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে মগড়া নদীতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় গলিত লাশটি ভাসতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে লাশটিকে রিজনের বলে শনাক্ত করেন তাঁর পরিবারের লোকজন।
এ বিষয়ে আটপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, লাশের সুরতহাল শেষে পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি আজ বুধবার সকালে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে রিজনের নিহতের খবর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য ফাহিম খান পাঠান ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘কে জানত, এটাই হবে রিজনের শেষ ডিউটি! বিকেলে কে বা কারা তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায় মোটরসাইকেলটি বাজারে রেখেই। আজ (মঙ্গলবার) তাঁর লাশ আটপাড়া থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। রিজনের এরিয়া ছিল দুগিয়া, আমতলা, সদর নেত্রকোনা। এ দেশে নিরাপত্তা বলতে কিচ্ছু নেই। কর্মক্ষেত্রে গিয়ে সেফলি বাসায় ফেরার মতো নিরাপত্তা নেই। এ দেশে আছে লুটপাট, চাঁদাবাজি এবং পেশিশক্তির অপব্যবহার।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ত রক ন পর ব র র জন র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন
চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন নগরের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। আজ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে ‘সর্বস্তরের চিকিৎসকবৃন্দ’ ও ‘ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম, চট্টগ্রাম’–এর ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তারা হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় সন্ত্রাসীদের চাঁদা না দেওয়ায় এক চিকিৎসককে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইকবাল হোসেন নামের ওই চিকিৎসকের সাহায্য চাওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ধারণের সময় তাঁর মুখে রক্ত দেখা যায়।
৩৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে চিকিৎসককে বলতে শোনা যায়, ‘আমি ডাক্তার ইকবাল। বাকলিয়ায় পুরাতন চারতলায় আছি। আমাকে...বিএনপির হারুন; ওদের সন্ত্রাসীদেরকে টাকা দিই নাই বলে আমাকে মারছে, আমাকে মারার জন্য খুঁজতেছে। আমি লুকাই আছি একটা ঘরের মধ্যে। ৯৯৯–এ ফোন দিয়েছি। ২০ থেকে ৩০ মিনিট হয়ে গেছে ওরা আসতেছে না। আমার ভাগনে–ভাগনিকে নিয়ে গেছে। আমাকে বাঁচান ভাই।’
পুলিশ সূত্র জানায়, ভিডিওতে থাকা ওই ব্যক্তি চট্টগ্রাম নগরের ইবনে সিনা হাসপাতালের চিকিৎসক ইকবাল হোসেন (৩৮)। ঘটনাটি ঘটেছে নগরের বাকলিয়া এলাকার পুরাতন চারতলা এলাকায়। ওই চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক রেজাউল করিম, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম চট্টগ্রামের সভাপতি এ টি এম রেজাউল করিম, সাধারণ সম্পাদক এরফান চৌধুরী, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাসের প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমলেও ইকবাল হোসেন নির্যাতিত হয়েছেন। তাঁকে কারাগারে নিয়ে অত্যাচার করা হয়েছে। ফ্যাসিস্টের দোসররা এখনো এ দেশে থেকে গেছে। তারা অন্য একটি দলের নাম দিয়ে এখনো চাঁদাবাজি ও ফ্যাসিবাদী আচরণ চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন মোড়কে এখনো চাঁদাবাজি চলছে।
আরও পড়ুনসন্ত্রাসীদের চাঁদা না দেওয়ায় চিকিৎসককে মারধর, সাহায্য চেয়ে ফেসবুকে ভিডিও১৫ ঘণ্টা আগেবিচারের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, একজন চিকিৎসকের বাসায় গিয়ে চাঁদাবাজেরা হামলা চালিয়েছে। সেখানে পুলিশ প্রশাসন ও সিডিএর পরিদর্শক উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনে একজন চিকিৎসকের ওপর হামলা হয়েছে। এটি চিকিৎসকদের জন্য উদ্বেগজনক। দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় না আনলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।