পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছে। তারা অভিযোগ করেছে, যুক্তরাষ্ট্র সফরে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের বক্তব্যকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘বিকৃত’ ও ‘বিভ্রান্তিকরভাবে ঘুরিয়ে’ (টুইস্ট) প্রকাশ করেছে।

ফিল্ড মার্শাল মুনির দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন। তিনি গত রোববার তাঁর সফর শেষ করেন। আগের সফরের মতো এবারও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন। ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের টাম্পায় তিনি মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) কমান্ড পরিবর্তন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

সেনাপ্রধান আসিম মুনির টাম্পায় পাকিস্তানের কনসাল আদনান আসাদের আয়োজিত এক ব্ল্যাক-টাই নৈশভোজে অংশ নেন। সেখানে প্রায় ১৫০ জন অতিথি উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি, রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান শেখ, দূতাবাসের কর্মকর্তা ও প্রবাসী সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন।

এ অনুষ্ঠানে মুনিরের কিছু মন্তব্য ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, যা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই খবর নিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র সফররত পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের বক্তব্য আমাদের নজরে এসেছে। আসিম মুনিরের মন্তব্য ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’।

ভারতের বিবৃতিতে পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি দেওয়াকে পাকিস্তানের ‘চিরচেনা কৌশল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ ধরনের মন্তব্যের অন্তর্নিহিত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার বিষয়টি নিজেরাই মূল্যায়ন করতে পারছে। এতে দীর্ঘদিনের সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়েছে। যে দেশে সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলে, তাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে সন্দেহ আছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ তৃতীয় কোনো দেশের (যুক্তরাষ্ট্রে) মাটিতে এ ধরনের মন্তব্য করা অত্যন্ত দুঃখজনক।’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘ভারত ইতিমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছে, পারমাণবিক হুমকির সামনে মাথা নোয়াবে না। আমরা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ অব্যাহত রাখব।’

ভারতের বিবৃতির জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপরিণত মন্তব্য পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। তথ্য বিকৃত করা ও বক্তব্যকে প্রেক্ষাপট থেকে বিচ্ছিন্ন করে উপস্থাপন করা তাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাস।’

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ভারতের কথিত ‘পারমাণবিক ব্ল্যাকমেল’ বর্ণনা বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থান্বেষী। পাকিস্তান বলপ্রয়োগ বা বলপ্রয়োগের হুমকির বিরোধী। ভারত যখনই চাপে পড়ে, তখন যুদ্ধোন্মাদ ভাষণ দিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, পাকিস্তান একটি দায়িত্বশীল পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র, যেখানে ‘নাগরিক নিয়ন্ত্রণে উন্নত কমান্ড ও কন্ট্রোল ব্যবস্থা’ রয়েছে। সব সময় শৃঙ্খলা ও সংযমের সঙ্গে এমন বিষয় পরিচালনা করা হয়।

মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধান শক্তি। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই তারা এমন অভিযোগ করেছে।’

পাকিস্তান বলেছে, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, তারা পাকিস্তানের ওপর চাপ দিতে তৃতীয় দেশের প্রসঙ্গ এনেছে। এটি ভারতের কূটনৈতিক আত্মবিশ্বাসের অভাবের পরিচয় এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে অন্য দেশকে জড়ানোর ব্যর্থ চেষ্টা।’

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছে, ‘ভারতের আগ্রাসী ও যুদ্ধোন্মাদ মনোভাবের বিপরীতে পাকিস্তান বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে আচরণ চালিয়ে যাবে। তবে ভারতের কোনো আগ্রাসন বা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা লঙ্ঘন হলে সঙ্গে সঙ্গে সমান জবাব দেওয়া হবে। ফলে উত্তেজনা বাড়লে তার দায় ভারতের নেতৃত্বের ওপরই বর্তাবে।’

ডনের খবরে বলা হয়, গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে। এরপরই দুই দেশের মধ্যে সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র সামরিক সংঘর্ষ শুরু হয়। ৭ মে ভারত পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিমান হামলা চালায়, যাতে বেসামরিক লোক নিহত হন। জবাবে পাকিস্তান বিমানবাহিনী ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। উভয় পক্ষের ঘাঁটিতে পাল্টা হামলার পর ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

গত মে মাসের এই সংক্ষিপ্ত, কিন্তু প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর থেকে নয়াদিল্লি ট্রাম্পের ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা নিয়ে অসন্তুোষ প্রকাশ করেছে। আবার ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনায় প্রভাব পড়েছে। যদিও আগে ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে প্রকাশ্য সৌহার্দ্য দেখা গিয়েছিল, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কঠোর মনোভাব দেখিয়েছে।

ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, গত ১০ মে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি যে ঘোষণা করেছিলেন, সেটি তার মধ্যস্থতা ও বাণিজ্য চাপের ফল। ভারত বারবার এই দাবি অস্বীকার করেছে। সংঘর্ষের পর ট্রাম্প পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে হোয়াইট হাউসে আতিথ্য দেন।

ট্রাম্প ভারতের অর্থনীতি নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছেন। তিনি রাশিয়া থেকে ভারতের জ্বালানি আমদানি ও শুল্কনীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন।

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় অচলাবস্থার পর রাশিয়ার তেল আমদানির কারণে ‘জরিমানা’ হিসেবে গত সপ্তাহে ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। নতুন এই শুল্ক ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হতে পারে। সব মিলিয়ে এখন ভারতীয় পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ৫০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো বাণিজ্য অংশীদারের ওপর আরোপিত সর্বোচ্চ শুল্কগুলোর একটি হচ্ছে এটি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র আস ম ম ন র আম দ র প রক শ র সফর

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের সেরা কর্মস্থল হিলটন হোটেল, সেরা তালিকায় আছে মেটলাইফ

আধুনিক মানুষের দিনের বড় একটা সময় যায় কর্মস্থলে। ফলে সেই কর্মস্থলের পরিবেশ কেমন, কর্তৃপক্ষ কর্মীদের কথা কতটা ভাবছে—এ সবকিছু এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে।

সম্মান, নিরাপত্তা, উন্নতির সুযোগ ও কাজের অর্থবহতা আছে—মানুষ সাধারণত এমন কর্মস্থলই চায়। এসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে ফরচুন ম্যাগাজিন বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। তারা মূলত বিশ্বের সেরা ২৫ কর্মস্থলের তালিকা করে। সেই তালিকায় সবার ওপরে আছে হিলটন হোটেল। মূলত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে নিয়ে এই জরিপ ও তালিকা করা হয়েছে।

এবারের তালিকায় ২৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি যুক্তরাষ্ট্রের। অন্যগুলো বিভিন্ন দেশের, মূলত ইউরোপের। কোম্পানিগুলোর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে—২৫টি কোম্পানির মধ্যে ৮টি এই খাতের। এ ছাড়া নির্মাণ, জৈব ওষুধ, উৎপাদন, কুরিয়ার, আর্থিক ও পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানিগুলোও তালিকায় আছে।

সেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি কোম্পানি হলো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জীবনবিমা কোম্পানি মেটলাইফ। ২০২৫ সালে দশম স্থান অর্জন করে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক স্বীকৃতি ধরে রাখল কোম্পানিটি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টি দেশে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম রয়েছে।

৯০ লাখের বেশি উত্তরের ওপর ভিত্তি করে ফরচুনের সেরা ২৫টি কর্মক্ষেত্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী আড়াই কোটি কর্মীর কাজের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরা হয়েছে।

এ বিষয়ে মেটলাইফের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মিশেল খালাফ বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকায় স্থান পাওয়া কর্মীদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগের প্রমাণ।’

কারা আছে তালিকায়

দেখে নেওয়া যাক এবারের তালিকায় কোন কোন দেশের কোম্পানি আছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে কুরিয়ার ও যাতায়াত খাতের কোম্পানি ডিএইচএল। তৃতীয় স্থানে আছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সিসকো। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রে। চতুর্থ স্থানে আছে পেশাদার সেবা দেওয়া আইরিশ কোম্পানি অ্যাক্সেনচিউর, পঞ্চম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিশ্বখ্যাত হোটেল ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল। ষষ্ঠ স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি অ্যাব ভিয়ে, সপ্তম স্থানে আছে ফ্রান্সের পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানি টিপি। অষ্টম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনভিত্তিক কোম্পানি স্ট্রাইকার, নবম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি সেলস ফোর্স।

দশম স্থানে আছে মার্কিন বিমা কোম্পানি মেটলাইফ, ১১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সার্ভিস নাউ। ১২তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতা কোম্পানি স্পেকসেভার্স। ১৩তম স্থানে আছে জার্মানির স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি সিমেন্স হেলদিনেস; ১৪তম স্থানে আছে আইরিশ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এক্সপেরিয়েন। ১৫তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এনভিডিয়া, ১৬তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি কেডেন্স। ১৭তম স্থানে আছে জার্মানির বিমা ও আর্থিক কোম্পানি আলিয়াঞ্জ এবং ১৮তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের কোম্পানি ডাও।

১৯ থেকে ২১তম স্থানে আছে তিনটি মার্কিন কোম্পানি। ১৯তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি ভিয়াট্রিস, ২০তম স্থানে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাডোবি, ২১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ক্রাউডস্ট্রাইক।

২২ ও ২৩তম স্থানেও আছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি কোম্পানি—উৎপাদন খাতের এসসি জনসন ও খুচরা বিক্রয় খাতের ট্রেক বাইসাইকেল। ২৪তম স্থানে আছে লিচেনস্টাইনের নির্মাণ কোম্পানি হিলতি ও ২৫তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের বিমা ও আর্থিক খাতের কোম্পানি অ্যাডমিরাল গ্রুপ।

কীভাবে এই মূল্যায়ন

৩০ বছর ধরে এই জরিপ পরিচালনা করছে ফরচুন ম্যাগাজিন। সারা বিশ্বের কর্মীদের কাছ থেকে তারা জানতে চায়, কর্মস্থলে তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন। এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তারা কিছু মানদণ্ড তৈরি করে। সেই মানদণ্ডের ভিত্তিতে বোঝা যায়, কোনো কর্মস্থল প্রকৃত অর্থেই ‘দারুণ’ কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা সে প্রতিষ্ঠানে থাকতে চান কি না, প্রতিষ্ঠান কত দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে ও তার সামগ্রিক ব্যবসায়িক সাফল্য কতটা মিলবে—এসব বিষয়েও ধারণা পাওয়া যায় জরিপে।

ফরচুন ম্যাগাজিন নিজস্ব ট্রাস্ট ইনডেক্স বা আস্থাসূচক তৈরি করেছে। ব্যবস্থাপনার প্রতি কর্মীদের আস্থা কতটা, সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ও কোম্পানির প্রতি কর্মীদের আনুগত্য কতটা—এসব আস্থাসূচকের মাধ্যমে এসব বিষয় পরিমাপ করা হয়।

এ জরিপে কর্মীরা গোপনীয়তার সঙ্গে তাঁদের মতামত জানাতে পারেন। ৬০টি বিষয়ের ওপর ৫ পয়েন্টের ভিত্তিতে উত্তর দিতে হয়, সঙ্গে থাকে ২টি উন্মুক্ত প্রশ্ন।

কর্মীদের কাছ থেকে যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়, সেগুলো হলো নেতৃত্বের কাছে কি সহজে যাওয়া যায়, নেতৃত্ব সততা ও স্বচ্চতার সঙ্গে কথা বলেন ও কাজ করেন কি না, নেতৃত্বের কথা ও কাজে মিল আছে কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে সম্মানিত বোধ করেন কি না এবং তাঁদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কতটা। নেতৃত্ব কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানান কি না এবং কর্মীদের সুস্থতা বজায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না। এ ছাড়া কর্মীদের অবদান রাখার সুযোগ আছে কি না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়।

জরিপে কর্মীদের কাছে আরও যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয় সেগুলো হলো:

বেতন, মুনাফা, পদোন্নতি, স্বীকৃতি ও সুযোগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কতটা ন্যায়সংগত;

কর্মীরা নিজেদের কাজ, কর্মদল ও প্রতিষ্ঠানের জন্য গর্ব বোধ করেন;

কাজ অর্থবহ এবং তা পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে;

সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে;

কর্মীরা নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারেন।

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভিজ্ঞতার ভিন্নতা কতটা, তা–ও জরিপে পরিমাপ করা হয়। কর্মীদের অভিজ্ঞতার ধারাবাহিকতা ও গুণগত মানও মূল্যায়ন করা হয়। এভাবে প্রতিটি ধাপে কঠোর মানদণ্ড মেনে এই তালিকা করা হয় বলে জানিয়েছে ফরচুন ম্যাগাজিন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ