ক্লাসে প্রবেশ নিয়ে ইবি শিক্ষকের সঙ্গে শিবিরের বাকবিতণ্ডা
Published: 13th, August 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২৪-২৫ বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে ক্লাসে প্রবেশ নিয়ে শাখা ছাত্রশিবির নেতাদের সঙ্গে এক শিক্ষকের বাকবিতণ্ডা হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে মীর মশাররফ হোসেন একাডেমিক ভবনের ২০৫ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিভাগের শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি ও শিবির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসা করা হয় বলে জানা গেছে।
জানা যায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
জন্মদিনের পরদিন নদীতে ঝাঁপ কলেজছাত্রীর
ডাকসু নির্বাচন: বুধবার মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন ১৩ প্রার্থী
তিনি শাখা ছাত্রশিবিরের কাছে জানতে চান, তারা কেন এসেছে। এ সময় বিভাগের সভাপতির অনুমতি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে এসেছেন বলে জানায় শিবির নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে শিক্ষকের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে ক্লাসের বাইরেও এ নিয়ে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, “শিবিরের কিছু নেতাকর্মী আমাদের ক্লাসে ঢুকে তাদের সংগঠন সম্পর্কে বলছিলেন। স্যার ক্লাসে প্রবেশ করে প্রথমে ওনারা (প্রতিনিধি) কারা জিজ্ঞেস করেন এবং ‘গেট আউট’ বলে বের হতে বললেন। তখন শিবিরের নেতাকর্মীরা জানান, বিভাগীয় সভাপতির অনুমতি নেওয়া হয়েছে। এ সময় স্যার বলেন, ‘এটা সভাপতির বিষয় না, এটা আমার ক্লাসের সিডিউল।’ এরপর তাদের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে স্যার ক্লাস ক্যানসেল করে চলে যান।”
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাস থেকে বের হয়ে অধ্যাপক মতিনসহ শিবিরের সবাই করিডোরের দিকে যায়। ওখানে বিভাগীয় সভাপতি ছিলেন। অধ্যাপক মতিন তাকে বলেন, ‘আমার ক্লাসের সময় এদের ঢোকার অনুমতি কেন দিয়েছেন?’ এরপর শিবিরের নেতাকর্মীরা বলা শুরু করেন, স্যার, আপনি এভাবে অপমান করে কেন বের করে দিলেন? একটা সংগঠনের সেক্রেটারিকে এভাবে গেট লস্ট বলতে পারেন না। এ সময় শিবিরের কয়েকজন অধ্যাপক মতিনকে জেরা করেন। অধ্যাপক মতিন বলেন, ‘তোমরা কোন সংগঠনের সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমার দেখার বিষয় যে তোমরা ছাত্র।’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক শিবির নেতা বলেন, “আমরা প্রায় ৭-৮ জনের মতো বিভাগে গিয়েছিলাম। আমরা জানতাম না ক্লাস ছিল। বিভাগের সভাপতির অনুমতিক্রমে গিয়েছি। সভাপতি যদি জানাতেন ক্লাস আছে, তাহলে আমরা যেতাম না। আমরা ৫-৭ মিনিটের মতো আলোচনা করেছি। তখন অধ্যাপক মতিনুর রহমান স্যার ক্লাসে ঢোকেন। তিনি উচ্চস্বরে বলেন, ‘তোমরা কারা? এখানে কেন?’ এ সময় শিবির সেক্রেটারি ইউসুফ বলেন, ‘আমরা ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান স্যারের অনুমতি নিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচিত হতে এসেছি।’ তখন স্যার বলেন, ‘ক্লাসের সময় এখানে কি? এখনই বের হয়ে যাও।’ তখন শিবির সেক্রেটারি স্যারকে বলেন, ‘আমরা চলে যাচ্ছি।’ পরে বিভাগের সভাপতি ও প্রক্টর স্যারের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।”
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলামের কক্ষে দুপুর ১টার দিকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।
বৈঠকে অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বেগম রোকসানা মিলি, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট, শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান, সেক্রেটারি ইউসুব আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী বলেন, “আমরা বিভাগের সভাপতির অনুমতি নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। একটা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছিল। মাঝখানে কমিউনিকেশন গ্যাপ ছিল। পরবর্তীতে বিষয়টার সমাধান করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মতিনুর রহমান বলেন, “শিডিউল অনুযায়ী বেলা ১২টার দিকে আমার ক্লাস ছিল। আমি শ্রেণিকক্ষে যাওয়ার পর তাদের দেখি। চিনতামও না তারা আসলে কারা। পরে জানতে পেরেছি একটি ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে আসছে। আমি জানতাম না, তারা অনুমতি নিয়েছে।”
তিনি বলেন, “বিভাগের সভাপতির উচিত ছিল তাদের অনুমতি দেওয়ার আগে কারো শিডিউল আছে কিনা সেটা দেখা। তবে তারা উপস্থিত হয়ে ক্ষমা চেয়েছে। ক্ষমা চাওয়ার পর আসলে কিছু করার থাকে না। একজন শিক্ষকের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, সেটা অপ্রত্যাশিত।”
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম বলেন, “আমি জানতাম না ওই সময়ে কারো ক্লাস আছে। ক্লাসের বিষয়টি জানলে আমি তাদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দিতাম না। এটা একটু মিসটেক হয়েছে। পরে সবাইকে নিয়ে বসেছি। শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে। তারা শিক্ষকের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছে।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মত ন র রহম ন ন ত কর ম উপস থ ত প রব শ ব ষয়ট স গঠন এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
‘এটা তো চাপের খেলা’—বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারত কোচ
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ, উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এবারের লড়াইটা ভারতের জন্য বাড়তি চাপেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর হামজা-শমিতে উজ্জীবিত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে হয়তো কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হবে সফরকারীদের। আজ ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কোচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তেমনটাই।
আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। তার আগে আজ একটি হোটেলে ভারতীয় দলের কোচ খালিদ জামিল বলেন, ‘এটা তো চাপের খেলা’।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলেরই বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ভারত ম্যাচ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। যার বড় প্রমাণ অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ৬ মিনিটের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাওয়া।
এর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলাটা যে সব সময়ই কঠিন, সেই বাস্তবতা জানেন জামিলও। তাঁর দলের ওপর চাপ আছে কি না প্রশ্নে ভারত কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, চাপ আছে। আমাদের তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি একটি চাপের ম্যাচ। তবে সে জন্য আমাদের একটি ইতিবাচক ফলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে দুই দলের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল, যার মধ্যে দুটি করেছেন বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে।
ভারত কোচ অবশ্য একক কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কে বিবেচনায় নিচ্ছি না। বাংলাদেশ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। এটা খুব সিরিয়াস গেম।’
১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৬টিতে, বাংলাদেশ ২টিতে। ড্র বাকি ১৪টি (২০০৩ সাফে বাংলাদেশের গোল্ডেন গোলে জয়ের ম্যাচসহ)।