শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ করতে হবে
Published: 14th, August 2025 GMT
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি করা নতুন নয়। বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এমন দলীয় কর্মসূচি আমরা দেখেছি। এ নিয়ে একাধিকবার সম্পাদকীয়ও প্রকাশ করেছে প্রথম আলো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও সেই নেতিবাচক সংস্কৃতি পাল্টাল না। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রেখে বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে। এমন রাজনৈতিক আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, চার ইউনিয়নের বিএনপির সম্মেলনের জন্য মঙ্গলবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। বক্সগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপি সম্মেলনের জন্য একই আঙিনায় থাকা তিনটি প্রতিষ্ঠান বক্সগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ আলিম মাদ্রাসা ও বক্সগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ছিল। আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের সম্মেলনের জন্য ভোলাইন বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এই সম্মেলনের মাইকের আওয়াজের কারণে পাশের ভোলাইন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানও বন্ধ ছিল। বটতলী ইউনিয়নের সম্মেলনের জন্য বটতলী এম এ মতিন উচ্চবিদ্যালয় ও বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ছিল। আর জোড্ডা ইউনিয়নের সম্মেলনের জন্য জোড্ডা বাজার পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ছিল।
এ ঘটনার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, বিকল্প কোনো জায়গায় চাইলে এ রাজনৈতিক কর্মসূচি করা যেত। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের কাছে শিশুদের শিক্ষার অধিকারের বিষয়টি উপেক্ষিতই থেকে গেছে। বলতেই হচ্ছে, রাজনৈতিক সম্মেলনের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা মানে সরাসরি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকারে হস্তক্ষেপ করা। মাইকের উচ্চ শব্দ, বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মীর আনাগোনা এবং নিরাপত্তার অভাবের মতো কারণ দেখিয়ে ছুটি ঘোষণা করা হলেও এর মূল কারণ রাজনৈতিক চাপ এবং প্রভাব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা দায় এড়াতে তাঁদের হাতে থাকা ‘বিশেষ ছুটি’ প্রয়োগের কথা বললেও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে এটি কোনো নিয়মতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত ছিল না। এটি প্রমাণ করে, রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় শিক্ষা ও নিয়মনীতিকে সহজেই উপেক্ষা করা হয়।
এমন রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে শিক্ষার্থীদের মনেও একটি ভুল বার্তা যায় যে তাদের পাঠদানের চেয়ে রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতি থেকে শিক্ষা গুরুত্ব হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও এমন ঘটনায় প্রতীয়মান হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মানসিকতার পরিবর্তন আসবে, এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি চালানোর মতো ঘটনা আমাদের হতাশ করে। আমরা আশা করব, বিএনপি এ ব্যাপারে দলীয় ব্যবস্থা নেবে। আর সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান থাকবে, এ ব্যাপারে সবাই সচেতন হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন বন ধ র খ ইউন য ন র বন ধ ছ ল সরক র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে ৬ ডাকাত গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পৃথক অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ ছয়জন ডাকাত ও বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার করেছে র্যাব-১১।
রবিবার (১০ আগস্ট) দিবাগত রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই রোধকল্পে সোনারগাঁয়ে উপজেলার পাঁচকানির কান্দি এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব।
সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাব-১১ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানান অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।
আরো পড়ুন:
কুবির নজরুল হল থেকে গুলি ও গাঁজা উদ্ধার
কালীগঞ্জে তরুণদের হাতে মাদক ব্যবসায়ী আটক
অভিযান চলাকালে ছয়জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, ছুরি, সুইচ গিয়ার ও দা জব্দ কর হয়। এছাড়া পিরোজপুরের বটতলা থেকে ১০১ কেজি গাঁজাসহ একটি মিনি ট্রাক জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন, মফিজুল ইসলাম ওরফে জামিল বাবু, সাইফুল ইসলাম ওরফে সাকিব,মানিক, সাদ্দাম, সহিদ ও মনির হোসেন।
লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা ব্রিজের টোল প্লাজার অভিমুখে যানজটে বা কৃত্রিমভাবে যানজট সৃষ্টি করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়িতে আক্রমণ করে মোবাইল, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে যায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ছয়জনকে আটক করলে তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়।
তিনি জানান, পিরোজপুর বটতলা এলাকা থেকে ১০১ কেজি গাঁজাসহ একটি মিনি ট্রাক জব্দ করা হয়। তবে এর সঙ্গে জড়িতদের আটক করা সম্ভব হয়নি, পালিয়ে যায় আসামীরা। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/অনিক/মেহেদী