সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণের পাথর উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে যৌথ বাহিনী। বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সড়কে পুলিশ ও সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে ট্রাকে তল্লাশি চালিয়েছে।

এদিকে, ভোলাগঞ্জের প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকৃত পাথর পুনরায় নদীতে রাখার কাজ শুরু হয়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর তীরবর্তী সাদাপাথর এলাকা থেকে পাথর চুরি শুরু হয়। গত দুই সপ্তাহে কোটি কোটি টাকার পাথর লুটপাট হয়। সেই পাথর উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের অভিযান জোরদার হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

মাদারীপুরে ২ কলেজে দুদকের অভিযান 

মানসম্মত খাবার নিশ্চিতে রাবিতে অভিযান

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‍“আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয় রেখে অভিযান চালাচ্ছি। সাদাপাথর থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য। যারা এই এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানাধীন সিলেট ক্লাবের সম্মুখে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করতে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।”

এদিকে, সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চুরি হওয়া পাথর ফেরত না আসা পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে। পাশাপাশি, চুরির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

গত বুধবার রাতে সিলেট সার্কিট হাউজে সিলেট জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় পাথর লুটপাট ঠেকানো ও লুটের পাথর পুনঃস্থাপনে ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে- জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টসহ যৌথ বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। অবৈধ ক্রাশিং মেশিন বন্ধ ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ অভিযান চলমান থাকবে। পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনা হবে। চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার কাজ করা হবে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পর্যটনকেন্দ্র ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করা হবে। পাশাপাশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/নূর/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য ন

এছাড়াও পড়ুন:

রংপুরে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: আসক

রংপুরে তারাগঞ্জ উপজেলা এলাকায় ভ্যান চুরির সন্দেহে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, ঘটনাটি প্রচলিত আইন, সংবিধান ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের দৃষ্টিতে অত্যন্ত বিপজ্জনক ও অগ্রহণযোগ্য।

আজ সোমবার সংগঠনটি এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়।

৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় ভ্যানচোর সন্দেহে পিটিয়ে দুই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর এলাকার বাসিন্দা রুপলাল দাস (৪০) ও মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)।

বিবৃতিতে আসক বলেছে, আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে হত্যা করা আইনের শাসন ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংবিধানের ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিকের আইনগত সুরক্ষা ও জীবন রক্ষার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, যা এই ঘটনায় গুরুতরভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।

গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলেছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের ঘটনা দেশের নাগরিকের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিক সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ ও ভুক্তভোগী পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়ে আসক বলেছে, যেকোনো সংঘবদ্ধ প্ররোচনামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত গোষ্ঠী বা ব্যক্তিবিশেষকে দায়মুক্তি না দিয়ে তাদের শনাক্ত করে কঠোরভাবে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। কেননা এ ধরনের নির্মম ঘটনা মানবাধিকারের ভিত্তিকে সরাসরি আঘাত করে।

আসক–এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত অন্তত ১১১ জন নাগরিক ‘মব–সন্ত্রাসের’ শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে ডাকাতির লুন্ঠিত রড উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
  • সাদা পাথর রক্ষায় ঢাবি শিক্ষার্থীদের ৩ দাবি
  • রংপুরে দুজনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: আসক