সিলেটে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে রাতভর অভিযান
Published: 14th, August 2025 GMT
সিলেটের ভোলাগঞ্জ থেকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণের পাথর উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে যৌথ বাহিনী। বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সড়কে পুলিশ ও সেনাবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে ট্রাকে তল্লাশি চালিয়েছে।
এদিকে, ভোলাগঞ্জের প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধারকৃত পাথর পুনরায় নদীতে রাখার কাজ শুরু হয়েছে।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদীর তীরবর্তী সাদাপাথর এলাকা থেকে পাথর চুরি শুরু হয়। গত দুই সপ্তাহে কোটি কোটি টাকার পাথর লুটপাট হয়। সেই পাথর উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের অভিযান জোরদার হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মাদারীপুরে ২ কলেজে দুদকের অভিযান
মানসম্মত খাবার নিশ্চিতে রাবিতে অভিযান
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সমন্বয় রেখে অভিযান চালাচ্ছি। সাদাপাথর থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষাই আমাদের মূল লক্ষ্য। যারা এই এলাকায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানাধীন সিলেট ক্লাবের সম্মুখে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়েছে। এ ধরনের অপরাধ বন্ধ করতে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।”
এদিকে, সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চুরি হওয়া পাথর ফেরত না আসা পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে। পাশাপাশি, চুরির সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত বুধবার রাতে সিলেট সার্কিট হাউজে সিলেট জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় পাথর লুটপাট ঠেকানো ও লুটের পাথর পুনঃস্থাপনে ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে- জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথ বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টসহ যৌথ বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। অবৈধ ক্রাশিং মেশিন বন্ধ ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নসহ অভিযান চলমান থাকবে। পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনা হবে। চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে আনার কাজ করা হবে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, “এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পর্যটনকেন্দ্র ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করা হবে। পাশাপাশি অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/নূর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১২ দিনের নতুন কর্মসূচি দিল জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১ থেকে ১২ অক্টোবর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এর আগে একই দাবিতে সেপ্টেম্বর মাসে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল দলটি।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজারে ছাত্রলীগ কর্মীর ছুরিকাঘাতে জামায়াতের যুব বিভাগের নেতা নিহত
ক্ষমতায় গেলে কাউকে দাবি নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না: জামায়াতের আমির
পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জামায়াত ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো-
৫ দফা দাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে গণসংযোগ। এ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা। গোলটেবিল বৈঠক। সেমিনার ইত্যাদি।
এছাড়া কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১০ অক্টোবর রাজধানীসহ সব বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং ১২ অক্টোবর সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ।
যে পাঁচ দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো হলো-জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা। আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা। ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা। স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।
এতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি' হিসেবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান বারবার ব্যক্ত করে আসছে। এ লক্ষ্যে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়ার জন্য আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জামায়াত ইতোমধ্যে সরকারের কাছে দুটি প্রস্তাব করেছে।
প্রথমত, জুলাই জাতীয় সনদের জন্য ‘সংবিধান আদেশ' জারি করা। দ্বিতীয়ত, এই সনদের অধিকতর আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য নির্বাচনের আগে গণভোট করে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, সেটা না হলে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ছাড়া ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।
জনগণের দাবিগুলো কার্যকর করতে সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে জানিয়েছে জামায়াত।
জামায়াতের এর আগে ঘোষণা করা পাঁচ দফা জনগণের কাছে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটি। তাই জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করার দাবি জানিয়েছে জামায়াত।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম ও হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাইফুল আলম খান, মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ