‎সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে আগামীকাল ভুটান যাবে বাংলাদেশ দল। তার আগে আজ বিকেলে এই টুর্নামেন্টের জন্য ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।

গত বছর অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে খেলা ১৫ জনই আছেন এই দলে। নতুন আটজন হলেন— রিয়া, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনী চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা, আমেনা খাতুন। দলটির অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস।

‎এ বছর এখনো কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দল। ২০২৪ সালে সাফে চার ম্যাচের চারটিতে জেতে তারা। সেই প্রতিযোগিতায় ভারতের সঙ্গে খেলা ফাইনালই মেয়েদের সর্বশেষ ম্যাচ।

জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার গত ১১ আগস্ট লাওসে অনূর্ধ্ব-২০ দলের খেলা শেষে ছুটিতে গেছেন। আগস্টের বাকি সময় তিনি ছুটিতে থাকবেন। কোচ হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সঙ্গে ভুটান যাবেন মাহবুবুর রহমান।

‎বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল—এই চার দেশ নিয়ে ২০ থেকে ৩১ আগস্ট থিম্পুতে হবে এই টুর্নামেন্ট। রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে একদল অন্য দলের সঙ্গে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। এরপর সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীর হাতে উঠবে ট্রফি।  ‎

‎২৩ সদস্যের বাংলাদেশ স্কোয়াড:ইয়ারজান বেগম, মেঘলা রানী, মমিতা খাতুন, শিউলি রায়, তানিয়া আক্তার, অর্পিতা বিশ্বাস (অধিনায়ক), ফাতেমা আক্তার, উম্মে কুলসুম, আরিফা আক্তার, মোসাম্মত আলমিনা, রেশমি আক্তার, থুইনুয়া মারমা, সুরভী আকন্দ, ক্রানুচিং মারমা, রিয়া, আলফি আক্তার, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনি চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা ও আমেনা খাতুন।

২০ আগস্ট ভুটান ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করবে বাংলাদেশ। একদিন বিরতি দিয়ে ২২ আগস্ট দলটির প্রতিপক্ষ ভারত। ২৪ ও ২৭ আগস্ট পরপর দুই ম্যাচে নেপালকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। ২৯ আগস্ট ভুটান এবং ৩১ আগস্ট আবার ভারতের মুখোমুখি হবে মেয়েরা। সবগুলো ম্যাচ থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে।

‎এই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সাতবার অংশ নিয়ে দুবার ট্রফি জিতেছে তাঁরা। বাংলাদেশের সমান দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত।

‎এ বছর অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ের টুর্নামেন্ট হলেও ২০১৭ সালে প্রথম আসর থেকে চতুর্থ আসর পর্যন্ত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ে। এরপর ২০২৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ ও ২০২৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাফের এই প্রতিযোগিতা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

পোশাক ও বস্ত্র খাতে ঋণ দিতেই বেশি আগ্রহ ব্যাংকের

তৈরি পোশাক ও বস্ত্র খাতে ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি ঋণ দিতে আগ্রহী। রপ্তানি সম্ভাবনা, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন ও উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকায় ব্যাংকগুলো এই দুটি খাতে বেশি আগ্রহ দেখায়। ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোর কম আগ্রহ উৎপাদন বা শিল্প ও নির্মাণ খাতে।

আজ সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ‘ব্যাংক খাতের ঋণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব কথা বলা হয়েছে। কর্মশালায় একটি গবেষণার তথ্য তুলে ধরা হয়। বিআইবিএমের চার শিক্ষক মোট ৩৭টি ব্যাংকে প্রশ্ন-উত্তরের তথ্য দিয়ে গবেষণাপত্রটি তৈরি করেন। গবেষণার প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের শিক্ষক প্রশান্ত কুমার ব্যনার্জী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, বিআইবিএমের এ কে গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ার ফারুক এম আহমেদ, সুপারনিউমারারি অধ্যাপক মো. আলী হোসেন প্রধানিয়া, রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মারুফ, বিআইবিএমের মহাপরিচালক এস এম আবদুল হাকিম প্রমুখ।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ২০২৪ সালে মোট ঋণের মধ্যে ইচ্ছাকৃত খেলাপির হার ছিল ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আর মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে ইচ্ছাকৃত খেলাপির পরিমাণ ছিল ১১ দশমিক ৮১ শতাংশ। গবেষণার প্রশ্নে ২৯ দশমিক ১৬ শতাংশ উত্তরদাতা জানান, ব্যবসায়িক ব্যর্থতার কারণে ঋণখেলাপি হয়।

ব্যাংকিং খাতে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনো ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে বন্ডের বাজারে পর্যাপ্ত ঋণ প্রবাহ হচ্ছে না। এর সঙ্গে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি ও সুশাসনের অভাব রয়েছে।—নুরুন নাহার, ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জী বলেন, বিশ্বব্যাংকের ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট ইন্ডিকেটরসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলোর দেশীয় ঋণের পরিমাণ ছিল জিডিপির ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ। এ অনুপাত কোনোভাবেই সন্তোষজনক নয়। এটি বাড়ানো না গেলে দেশে সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে না।

কোন অঞ্চলে কত ঋণ

গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালে দেশে মোট ঋণের মধ্যে প্রায় ৮৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ দেওয়া হয় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে। বাকি ১৩ দশমিক ৫১ শতাংশ ঋণ যায় অন্যান্য বিভাগে। বিদেশি ব্যাংকগুলো তাদের মোট ঋণের ৯৩ শতাংশ ঢাকায় বিতরণ করে। গবেষণায় নগর ও গ্রামীণ অঞ্চলে ঋণ বিতরণে বড় ধরনের পার্থক্য উঠে আসে। যেমন ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ঋণের ৯১ দশমিক ৮৪ শতাংশ নগর অঞ্চলে প্রদান করা হয়। গ্রামীণ অঞ্চলে এই পরিমাণ মাত্র ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ।

বড় শিল্পঋণ অনুমোদন হয় ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে। তাই ঋণখেলাপি কমাতে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত যোগ্য ও সৎ ঋণগ্রহীতা নির্বাচন। পরিচালনা পর্ষদ যদি নিরপেক্ষভাবে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সুচিন্তিত নির্দেশনা দেয় তাহলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানো সম্ভব।—কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম, এমডি, রূপালী ব্যাংক।

প্রশান্ত কুমার বলেন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে আবাসন খাতে ঋণের পরিমাণ বাড়াতে হবে। দেশের প্রতিটি পরিবার থেকে অন্তত একজনকে ব্যাংকের সেবার আওতায় আনতে হবে। এ ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠানে ঋণ প্রদানের আগে সেটির আর্থিক স্থিতিপত্রের ওপর নির্ভর না করে সম্পদ ও মূলধন অর্থায়নের মতো পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনো ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে বন্ডের বাজারে পর্যাপ্ত ঋণ প্রবাহ হচ্ছে না। এর সঙ্গে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি ও সুশাসনের অভাব রয়েছে।’

কোন খাতে কত ঋণ

২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ব্যাংকগুলো শিল্প খাতে মেয়াদি ঋণ দেয় ২২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর শিল্পের চলতি মূলধন খাতে ঋণ দেয় ১৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। কৃষি, মৎস্য ও বনসম্পদে ঋণের হার ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ ছাড়া পরিবহন ও নির্মাণ খাতে দেওয়া ঋণের হার হচ্ছে যথাক্রমে শূন্য দশমিক ৬৭ ও ৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। তবে এই দুটি খাতে ঋণের পরিমাণ গত বছরের তুলনায় কমেছে।

ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মোহাম্মদ মারুফ বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ঋণ সম্পর্কিত ধারণা; বিশেষ করে ঋণ বাছাই ও পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আমাদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে। যেসব ব্যাংক কেন্দ্রীয়ভাবে ঋণ পর্যবেক্ষণ ও বাছাইয়ের কাজ করে, তারা তুলনামূলকভাবে ভালো ফল পায়। ব্যাংকগুলোর এক মডেলে সব ধরনের ঋণ দিয়ে ব্যবসা করা সম্ভব নয়।’

গবেষণায় বলা হয়, ২০২৪ সালে নেওয়া ১ থেকে ২০ কোটি টাকার ঋণ হচ্ছে মোট ঋণের ৩২ দশমিক ২৩ শতাংশ। ২০ কোটি টাকার বেশি এমন অঙ্কের ঋণ হচ্ছে মোট ঋণের ৪৩ দশমিক ৮১ শতাংশ। শতাংশের হিসাবে এই দুই শ্রেণির ঋণ নেওয়ার হার বেড়েছে।

শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রভাব ও উদ্দেশ্য নিয়ে কিংবা ব্যবসায়িক স্বার্থে বলপ্রয়োগ করে ঋণ নেওয়া হয়েছিল—এসবই ছিল বাস্তবতা। এ ক্ষেত্রে আমরাও পুরোপুরি দায়মুক্ত নই। বেসরকারি বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থান বাড়বে না। ব্যাংকগুলো যখন সরকারি বন্ড থেকে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ সুদ পায়, তখন তাদের অন্য খাতে ঋণ দেওয়ার আগ্রহ কমে যাওয়াই স্বাভাবিক।’

রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, বড় শিল্পঋণ অনুমোদন হয় ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে। তাই ঋণখেলাপি কমাতে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত যোগ্য ও সৎ ঋণগ্রহীতা নির্বাচন। পরিচালনা পর্ষদ যদি নিরপেক্ষভাবে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সুচিন্তিত নির্দেশনা দেয় তাহলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমানো সম্ভব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ২১ সেপ্টেম্বর
  • জুলাই আন্দোলনের হামলা মামলার আসামি পেলেন ‘সাহসী সাংবাদিক’ সম্মাননা
  • টেকসই ঋণে লাভবান ব্যাংক ও গ্রাহক
  • শিক্ষা সংস্কার: প্রেক্ষিত ২০২৪ পরিবর্তন ও আমার ভাবনা
  • বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল, তবে উদ্বেগ রয়ে গেছে
  • গাজা দখল করে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়তে চান নেতানিয়াহু
  • অভ্যুত্থানের বছরে জামায়াতের আয়-ব্যয় বিএনপির চেয়ে অনেক বেশি
  • আবারও সেই গোলের ‘গাড়ি’ নিয়ে প্রস্তুত বার্সেলোনা
  • পোশাক ও বস্ত্র খাতে ঋণ দিতেই বেশি আগ্রহ ব্যাংকের