এবার অর্পিতাদের সাফ মিশন, অভিজ্ঞরাই ভরসা
Published: 14th, August 2025 GMT
সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে আগামীকাল ভুটান যাবে বাংলাদেশ দল। তার আগে আজ বিকেলে এই টুর্নামেন্টের জন্য ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)।
গত বছর অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে খেলা ১৫ জনই আছেন এই দলে। নতুন আটজন হলেন— রিয়া, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনী চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা, আমেনা খাতুন। দলটির অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস।
এ বছর এখনো কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দল। ২০২৪ সালে সাফে চার ম্যাচের চারটিতে জেতে তারা। সেই প্রতিযোগিতায় ভারতের সঙ্গে খেলা ফাইনালই মেয়েদের সর্বশেষ ম্যাচ।
জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ পিটার বাটলার গত ১১ আগস্ট লাওসে অনূর্ধ্ব-২০ দলের খেলা শেষে ছুটিতে গেছেন। আগস্টের বাকি সময় তিনি ছুটিতে থাকবেন। কোচ হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের সঙ্গে ভুটান যাবেন মাহবুবুর রহমান।
বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল—এই চার দেশ নিয়ে ২০ থেকে ৩১ আগস্ট থিম্পুতে হবে এই টুর্নামেন্ট। রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে একদল অন্য দলের সঙ্গে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। এরপর সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীর হাতে উঠবে ট্রফি।
২৩ সদস্যের বাংলাদেশ স্কোয়াড:ইয়ারজান বেগম, মেঘলা রানী, মমিতা খাতুন, শিউলি রায়, তানিয়া আক্তার, অর্পিতা বিশ্বাস (অধিনায়ক), ফাতেমা আক্তার, উম্মে কুলসুম, আরিফা আক্তার, মোসাম্মত আলমিনা, রেশমি আক্তার, থুইনুয়া মারমা, সুরভী আকন্দ, ক্রানুচিং মারমা, রিয়া, আলফি আক্তার, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনি চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা ও আমেনা খাতুন।২০ আগস্ট ভুটান ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করবে বাংলাদেশ। একদিন বিরতি দিয়ে ২২ আগস্ট দলটির প্রতিপক্ষ ভারত। ২৪ ও ২৭ আগস্ট পরপর দুই ম্যাচে নেপালকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। ২৯ আগস্ট ভুটান এবং ৩১ আগস্ট আবার ভারতের মুখোমুখি হবে মেয়েরা। সবগুলো ম্যাচ থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে।
এই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সাতবার অংশ নিয়ে দুবার ট্রফি জিতেছে তাঁরা। বাংলাদেশের সমান দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত।
এ বছর অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ের টুর্নামেন্ট হলেও ২০১৭ সালে প্রথম আসর থেকে চতুর্থ আসর পর্যন্ত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ে। এরপর ২০২৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ ও ২০২৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাফের এই প্রতিযোগিতা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ ওভারের রোমাঞ্চে ৩ রানের জয় খুলনার
‘এমন ফিফটি লইয়া আমরা কি করিব’—তানভীর হায়দারের ৪৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস নিয়ে এমন কথা বলতেই পারেন রংপুর সমর্থকেরা।
জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টিতে আজ খুলনার বিপক্ষে রংপুরের এই অলরাউন্ডার ব্যাট করতে নেমেছিলেন ওপেনিংয়ে, টিকে থাকলেন পুরো ২০ ওভার। কিন্তু দলকে জেতাতে পারলেন না। শেষ ওভারের রোমাঞ্চকর সমাপ্তিতে তানভীরের রংপুর বিভাগকে ৩ রানে হারিয়েছে খুলনা বিভাগ।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ১৩ রান। ওপেনার তানভীরের সঙ্গে ক্রিজে ছিলেন অভিজ্ঞ নাঈম ইসলাম। বোলিংয়ে মিডিয়াম পেস বোলিং অলরাউন্ডার জিয়াউর রহমান। প্রথম ডেলিভারিতেই তিনি দিয়েছেন ওয়াইড। এরপরও তানভীর ও নাঈম মিলে মোট ৯ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি।
উইকেটে থিতু তানভীর শেষ ওভারে ৪ বল খেলে নিতে পেরেছেন ৬ রান; কোনো বাউন্ডারি নেই। রংপুর ইনিংসের শেষ ১৫ বলেও কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ দলের হয়ে দুটি ওয়ানডে খেলা এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার।
রান তাড়ায় রংপুরের লক্ষ্য যে খুব বেশি ছিল, তা নয়। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেটে ১৪৯ রান করেছিল খুলনা। রংপুর করতে পেরেছে ৬ উইকেটে ১৪৬।
অথচ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ১৫ ওভারে ২ উইকেটে ১০৩ রান তুলে ফেলেছিল রংপুর। উত্তরবঙ্গের দলটির রান তোলার গতি বেশি না হলেও হাতে ৮ উইকেট ও পরে নাঈম ইসলাম-নাসির হোসেনের মতো অভিজ্ঞরা থাকায় শেষ ৩০ বলে ৪৭ রানের সমীকরণ মেলানো খুব কঠিন মনে হচ্ছিল না।
কিন্তু অধিনায়ক আকবর আলীর আউটে তাঁর সঙ্গে তানভীরের ৪২ রানের জুটি ভাঙার পর আর বড় জুটি হয়নি। নাসির হোসেনকে ব্যাটিংয়েই নামায়নি রংপুর। এমনকি নাঈমকেও নামানো হয়েছে আবদুল গাফফার, আলাউদ্দিন বাবু, আবদুল্লাহ আল মামুনের পরে। তাঁরা তিনজনই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
খুলনার পেসার রবিউল হক ৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। তবে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জাতীয় দলের সাবেক অলরাউন্ডার জিয়াউর ম্যাচসেরা হয়েছেন।
বোলিংয়ে ৩ ওভারে ১৯ রানে ১ উইকেট নেওয়ার আগে ব্যাট হাতে ৪ ছক্কায় ১৬ বলে ৩৬ বলে অপরাজিত থাকেন জিয়াউর। তাঁর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের রংপুরকে ১৫০ রানের লক্ষ্য দিতে পারে খুলনা।
এই ম্যাচ দিয়ে এনসিএল টি-টোয়েন্টির চার রাউন্ড শেষ হলো। টানা দ্বিতীয় জয়ে খুলনা উঠে এসেছে পয়েন্ট তালিকার তিনে। ঢাকা বিভাগ শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরখুলনা বিভাগ: ২০ ওভারে ১৪৯/৪ (জিয়াউর ৩৬*, এনামুল ৩৫, মিঠুন ২৫, নাহিদুল ২০*; হাশিম ২/২০, নাসির ১/৭, জাহিদ ১/১৮)।
রংপুর বিভাগ: ২০ ওভারে ১৪৬/৬ (তানভীর ৬০*, অনিক ২৮, আকবর ১৯; রবিউল ৩/৩২, নাহিদুল ১/১৭, জিয়াউর ১/১৯, মৃত্যুঞ্জয় ১/২৭)।
ফল: খুলনা বিভাগ ৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জিয়াউর রহমান।
একই মাঠে দিনের প্রথম ম্যাচে মাহমুদুল হাসানের অপরাজিত ৭৮ রানের সুবাদে বরিশাল বিভাগকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১২৮ রান করেছিল বরিশাল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন ওপেনার ইফতেখার হোসেন ইফতি। তিনে নামা ফজলে মাহমুদ করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬।
বরিশালের শুরুটা অবশ্য দারুণ হয়েছিল। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪০ রান। এরপর ইফতি ও ফজলে মিলে যোগ করেন ৩০ রান। তবে দশম ওভারে এই জুটি ভাঙার পর অধিনায়ক সোহাগ গাজী ছাড়া (১৪ বলে অপরাজিত ১৮) আর কেউ বলার মতো কিছু করতে পারেননি।
চট্টগ্রামের ফাস্ট বোলার মেহেদী হাসান রানা ২২ রানে ৩ উইকেট নেন। বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ ছিলেন বেশ ‘কিপটে’। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে চট্টগ্রামকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন মুমিনুল হক ও মাহমুদুল হাসান। তাঁদের উদ্বোধনী জুটি থেকে ৩.৩ ওভারেই আসে ৪৩ রান। মুমিনুল আউট হওয়ার পর শাহাদাত হোসেন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
তবে এরপর সৈকত আলীর সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৬৭ রানের জুটি গড়ে বাকি কাজ অনায়াসে সারেন মাহমুদুল। ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তাঁরই হাতে।
টুর্নামেন্টে এখন মাহমুদুলই সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। ৩ ম্যাচে তিনি করেছেন ১৫৫ রান। আজ ৭৮ রানের ইনিংস খেলার পথে ছাড়িয়ে গেছেন রাজশাহী বিভাগের হাবিবুর রহমানকে (৩ ম্যাচে ১২৫ রান)।
টানা তিন জয়ে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম। ঢাকার মতোই তাদের পয়েন্ট সমান ৭। তবে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় ঢাকা শীর্ষে আছে। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা বরিশাল এখনো কোনো জয় পায়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোরবরিশাল বিভাগ: ২০ ওভারে ১২৮/৭ (ইফতি ৩৩, ফজলে ২৬, সোহাগ ১৮*; রানা ৩/২২, মুরাদ ২/১০, রুবেল ১/১৮, হাসান ১/২৯)।
চট্টগ্রাম বিভাগ: ১৬.৩ ওভারে ১৩৩/২ (মাহমুদুল ৭৮*, সৈকত ২৩*, মুমিনুল ২২; সোহাগ ১/৩০, তানভীর ১/৩১)।
ফল: চট্টগ্রাম বিভাগ ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাহমুদুল হাসান।