ডাকসু নির্বাচনে নারী ভোটকেন্দ্র পরিবর্তনের দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের
Published: 14th, August 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে নারীশিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ভোটকেন্দ্রের স্থান পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। ছাত্রসংগঠনটি মনে করে, বর্তমান কেন্দ্রগুলো হল থেকে অনেক দূরে হওয়ায় নারীশিক্ষার্থীদের ভোটদানে আগ্রহ কমবে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার।
আবু বাকের মজুমদার বলেন, যারা নারী নেতৃত্ব চায় না, তারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগসাজশ করে পরিকল্পিতভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি নির্দিষ্ট কিছু কেন্দ্রের স্থান পরিবর্তনেরও প্রস্তাব দেন।
সুফিয়া কামাল হলের ভোটকেন্দ্র টিএসসিতে (ছাত্র–শিক্ষক কেন্দ্র) না করে কার্জন হলে, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও কুয়েত মৈত্রী হলের ভোটকেন্দ্র টিচার্স ক্লাবে না দিয়ে সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে এবং রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের জন্য টিএসসিতে বা বিকল্প ভোটকেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক বলেন, টিএসসির মতো ছোট জায়গায় ১৪ হাজারের বেশি ভোট কাস্ট করা সম্ভব নয়। সর্বোচ্চ তিন থেকে চার হাজার ভোট কাস্ট করা সম্ভব। কিন্তু এখানে একটা পরিকল্পনা আছে। একদল চায় না নারীরা ভোটে অংশগ্রহণ করুক। এ সময় তিনি প্রশাসনকে অতি দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দাবি জানান।
আসনসংকট পরিকল্পিত
সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘আমরা দেখেছি, ক্ষমতাসীন দলগুলো সব সময় শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। ইতিহাসে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের একটি বড় অংশ এসেছে ছাত্রদের মধ্য থেকে। এই নিয়ন্ত্রণের জন্য তারা দুটি প্রধান কৌশল ব্যবহার করে।’
আবদুল কাদের বলেন, প্রথমত, ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনগুলো হলে কৃত্রিম আসনসংকট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের চাপে রাখে। দ্বিতীয়ত, হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রায়ই ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ উপেক্ষা করে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক বলেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসে এবং আর্থিক সংকটে থাকে। এই পরিস্থিতিতে পরিকল্পিতভাবে আসনসংকট তৈরি করে ছাত্রসংগঠন ও প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালায়। সাম্প্রতিক আন্দোলনগুলোর একটি মূল কারণ ছিল এ ধরনের ‘দাসত্ব’ থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ টক ন দ র
এছাড়াও পড়ুন:
সংসদে নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি। ৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম এই কমিটি আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে প্রত্যাখ্যানের কথা জানায়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদে মনোনয়নের মাধ্যমে ২০৪৩ সাল পর্যন্ত ৫০টি সংরক্ষিত আসন বহাল রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সংরক্ষিত নারী আসনসংখ্যা বাড়ানো ও সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচনব্যবস্থা চালুর জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে নারী সংগঠনগুলো। অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা করলেও এ বিষয়ে একমত হয়নি দলগুলো। এ অবস্থায় নারী আসন নিয়ে আগের ব্যবস্থাই বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে আজ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে জাতীয় সংসদে সমান অধিকার, সমমর্যাদা ও দায়িত্বের সঙ্গে ভূমিকা পালন করতে বাংলাদেশের নারীরা এখন প্রস্তুত রয়েছেন। সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে এলে গণতান্ত্রিক চর্চা আরও শক্তিশালী হবে, যা নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণকে আরও বিস্তৃত ও অর্থবহ করে তুলবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নারী সমাজের দীর্ঘদিনের এই আন্দোলন ও দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো পশ্চাৎপদ সিদ্ধান্তে কীভাবে একমত হলো, সে বিষয়েও সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি গভীর বিস্ময় প্রকাশ করছে।
বিবৃতিতে দাবি করা হয়, জাতীয় সংসদের সাধারণ আসনে নারী–পুরুষ উভয়ই নির্বাচন করতে পারবেন। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনও থাকবে। জাতীয় সংসদে মোট আসনসংখ্যা ৪৫০ করতে হবে, যেখানে ৩০০ সাধারণ আসন ও ১৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন হবে। সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নের প্রথা বাতিল করে একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সংরক্ষিত নারী আসনে জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং এ ব্যবস্থাটি দুই থেকে তিন মেয়াদের জন্য বলবৎ থাকবে।
বিবৃতিতে নারী আসন নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার দাবি জানানো হয়।