জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠের নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

এ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তুসিবা এন্টারপ্রাইজের ইঞ্জিনিয়ার সাব্বিরের বিরুদ্ধে ওই সাংবাদিককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেওয়া অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক মোমিন ইসলাম ‘আমার বার্তা’র নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।

আরো পড়ুন:

এবার সাংবাদিক তুহিনের হত্যাস্থলে শরবত বিক্রেতাকে ছুরিকাঘাত

মুন্নী সাহা ও তার স্বামীকে সম্পদ বিবরণীর নো‌টিশ

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনের অংশে চলমান নির্মাণ কাজ চলাকালে এ হুমকি দেওয়াার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী মোমিন ইসলামের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, চলাচলের জন্য নির্মাণাধীন স্থাপনায় ব্যবহৃত অধিকাংশ ইটই নিম্নমানের। ওই ইটের বিষয়ে খোঁজ নিতে যান ‘আমার বার্তা’র নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোমিন ইসলামসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এ সময় ছবি তুলতে গেলে ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির সাংবাদিক মোমিনকে হুমকি দিয়ে বলেন, “এতোদিন আমাদের ছবি তুলে ভাইরাল করেছেন, আজ আপনার ছবি আমরা তুলছি।” পাশাপাশি প্রতিবেদনের বিষয় নিয়ে ব্যঙ্গ করে তিনি বলেন, “ভালো করে লিখিয়েন, বেশি করে লিইখেন, যা পারবেন কইরেন।”

হুমকির বিষয়ে সাংবাদিক মোমিন ইসলাম, “কেন্দ্রীয় মাঠের নির্মাণকাজের নিম্নমানের ইটের ব্যবহার করা নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তুসিবা এন্টারপ্রাইজের ইঞ্জিনিয়ার সাব্বির আমাকে দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এতদিন আপনারা আমাদেরকে ভাইরাল করেছেন, আজ আপনাকে আমরা ভাইরাল করি। আপনি তো সারাজীবন আমগোর ছবি তুল্লেন, আজ আপনার টা তুলি।’ এরপর সে তার মুঠোফোনে আমার ছবি ধারন করে এবং নিউজের বিষয়ে ব্যঙ্গ করে।”

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিক সিরাজউদ্দীন দাবি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের অনুমতিতেই কাজ চলছে। তারা মাঝে মাঝে এসে দেখাশোনা করে যায়। তারা অনুমতি না দিলে আমরা কি কোনো কাজ করতে পারি?”

প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী পরিচালক মো.

রাহাত হাসান দিদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সহকারী প্রকৌশলী (ইনস্ট্রিুমেন্ট) মিজানুর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠান। নিম্নমানের ইট ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করলেও মিজানুর রহমান এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

পরে নির্বাহী পরিচালক রাহাত হাসান দিদার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিম্নমানের ইট দিয়ে নির্মাণকাজ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) সৈয়দ মোফাছিরুল ইসলাম বলেন, “নতুন ঠিকাদার বলে হয়তো এমন বলছে। আমি ইতোমধ্যে ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরের মাহবুব স্যারকে বলেছি, মনিটরিং টিম দিনে অন্তত দুই-তিনবার পাঠাতে হবে। ঠিকাদারকে আগামী রবিবার একটি চিঠিও পাঠানো হবে।”

তবে সাংবাদিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারকারী ইঞ্জিনিয়ার সাব্বিরের বিষয়ে তিনি বলেন, “আজ আমরা বলে দিয়েছি, পরেরবার আর যেন এমন না করে। আর এগুলো ছোটখাটো বিষয়, প্রথমবার বলে ক্ষমা করে দেওয়াই ভালো।”

ঢাকা/মুজিবুর/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ম ন ইসল ম ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

৫০ পেরিয়েও ‘জ্বলছে’ ‘শোলে’, কেন এখনো নতুন

তখনো ডিজিটাল জমানা আসেনি। গ্রামগঞ্জে ভিসিআর চালিয়ে চলচ্চিত্র দেখানোর চল; টিকিট পাঁচ টাকা। নব্বইয়ের দশকে স্কুল পালিয়ে সিরাজগঞ্জের জামতৈল বাজারে ‘নুন শো’তে দেখা ‘শোলে’ কিশোর মনে যতটা আঁচড় কেটেছিল, আজ এত বছর পরেও তা খুব একটা ফিকে হয়নি।
৫০ বছর। কোনো চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তা পরিমাপে সময়ের এই হিসাবের চেয়ে জুতসই মাপকাঠি আর কীই–বা হতে পারে! এখনো দর্শককে যেভাবে আবিষ্ট করে রেখেছে ‘শোলে’—আবেগে, মুগ্ধতায় তার তুলনা কেউ কেউ ক্ল্যাসিক সাহিত্য বা শিল্পের সঙ্গে টানতে পারেন। এককথায় একে বলিউডের ‘আলটিমেট ফিল্ম’ বললে এতটুকু অত্যুক্তি হবে না। ‘শোলে’ শুধু চলচ্চিত্রই নয়, এটি ভারতীয় সিনেমার মিথ।
রমেশ সিপ্পি পরিচালিত চলচ্চিত্রটিকে শুরুতে সাধারণ অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার বলেই মনে করা হয়েছিল। তবে কালের চাকায় সমানতালে দৌড়ে এসে এটি এখন ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী এক নির্মাণ। এর সঙ্গে জুড়ে গেছে ‘কালজয়ী’র তকমা। বহুবার দেখেও তাই পুরোনো হয় না।

কেন এখনো ‘নতুন’? কেননা ‘শোলে’ একটি বৃহৎ সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা। এটিকে বলা চলে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘মাসালা ফিল্ম’; যেখানে রোমাঞ্চ, কমেডি, অ্যাকশন, ট্র্যাজেডি, প্রেম, প্রতিশোধ, সর্বোপরি সুর-অসুরের দ্বন্দ্ব—কী নেই!  ‘স্প্যাগেটি ওয়েস্টার্ন’ ঘরানার প্রভাব স্পষ্ট, বিশেষ করে এই ঘরানার জনক সার্জো লেওনের চলচ্চিত্র থেকে যে অনুপ্রাণিত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে আলাদা করে বলার কথাটি হলো ইতালীয় সেই ঘরানাকে পুরোপুরি ভারতীয় বাস্তবতায় রূপান্তরের দুর্দান্ত এক উদাহরণ ‘শোলে’। সেলিম–জাভেদ জুটির চমৎকার চিত্রনাট্যে মহাভারতীয় নৈতিক দ্বন্দ্বের প্রতীকী উপস্থাপন সমসাময়িক ভারতীয় সমাজবাস্তবতার দারুণ এক প্রতিরূপ।

‘শোলো’ সিনেমার পরিবর্ধিত সংস্করণের দৃশ্য। কোলাজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ