রাত নামলেই পাহাড় থেকে নেমে আসছে হাতির পাল, ১০ গ্রামে আতঙ্ক
Published: 15th, August 2025 GMT
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় ভারত সীমান্তঘেঁষা ১০টি গ্রামে বন্য হাতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। খাবারের সন্ধানে প্রতি রাতেই লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতির পাল। গুঁড়িয়ে দিচ্ছে সুপারি ও অন্যান্য গাছের বাগান, নষ্ট করছে ফসলি জমি। আক্রমণ থেকে বাঁচতে নির্ঘুম রাত কাটছে গ্রামবাসীর।
কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রায় ৪০টি হাতির একটি পাল সীমান্তবর্তী পাহাড়ে অবস্থান করছে। এর মধ্যে গত সোমবার থেকে প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর উপজেলার ধানুয়াকামালপুর ইউনিয়নের বালুরচর, সাতানীপাড়া, সোমনাথপাড়া, অশেনাকোনা, টিলাপাড়া, পাগলাগোছা, দিঘলকোনা, গারোপাড়া, রামক্ষণজোড়া ও হাতিবারকোনা গ্রামে হানা দিচ্ছে। হাতির পালটি দিনের বেলায় পাহাড়ে অবস্থান নেয় আর সন্ধ্যা হলেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করে হাতির পাল। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পালটি সাতানীপাড়া এলাকায় ঢুকে ধানখেত, সবজিখেত মাল্টা ও লেবুর বাগান তছনছ করেছে। গ্রামবাসীর হইহুল্লোড়, মশালের আলো ও ঢাকঢোলের শব্দে হাতিরা ঘরবাড়িতে ঢুকতে পারেনি। তবে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নষ্ট করেছে। সারা রাত তাণ্ডব চালিয়ে ভোরে তারা পাহাড়ে ফিরে যায়।
বুধবার সাতানীপাড়া এলাকার মাসুদ মিয়ার ধানখেত নষ্ট করে গেছে। তিনি বলেন, ভারতের কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে প্রায় ৪০টি ছোট-বড় হাতি হানা দিচ্ছে। একেক দিন একেক এলাকায় হানা দেয়। শুধু তাঁর নয়, এলাকার আমিনুল ইসলাম, মিজানুর রহমান, আল-মামুন, ইয়াকুব আলীসহ প্রায় ৩০ জনের ধানখেত, বিভিন্ন সবজির খেত ও গাছপালা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। হাতির আতঙ্কে গ্রামবাসীরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
বকশীগঞ্জের এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সদস্য মো.
গারোপাড়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, তাঁরা পাহাড় থেকে লাকড়ি সংগ্রহ ও পাহাড়ের পাদদেশে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিবছর এ সময়ে হাতির আক্রমণ হয়। হাতির আতঙ্কে অনেক জমি পতিত রাখতে হয়। হাতির তাণ্ডবের কারণে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যান।
ধানুয়াকামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) গোলাপ জামাল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তঘেঁষা গ্রামগুলোতে হাতির আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতিবছরই বিভিন্ন সময় হাতির পাল এসব গ্রামে ঢুকে ফসল ও ঘরবাড়ি নষ্ট করে। কয়েক দিন ধরে আবার আক্রমণ শুরু হয়েছে। হাতির সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জামালপুরে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বন্য হাতির পাল। গত মঙ্গলবার ভোরে বকশীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী বালুরচর গ্রামেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ ত র আতঙ ক ষ ট কর ঘরব ড়
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।
পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি এখন সারানো হয়েছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।
ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’
ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’
ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে