অসুস্থ স্ত্রী ইজিবাইক থেকে লাফ দিয়েছিলেন, বাঁচাতে গিয়ে স্বামীর মৃত্যু
Published: 15th, August 2025 GMT
অসুস্থ স্ত্রীকে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন আছর উদ্দিন (৪০)। পথে হঠাৎ তাঁর স্ত্রী চলন্ত ইজিবাইক থেকে লাফ দেন। স্ত্রীকে বাঁচাতে তিনিও লাফিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে আছর উদ্দিনের মৃত্যু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আছর উদ্দিন উপজেলার খারনই ইউনিয়নের বটতলা গ্রামের মৃত তহুর উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আছর উদ্দিন স্ত্রী শাহিনা আক্তার কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। তিনি মাঝেমধ্যে কাউকে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে যান। গতকাল বিকেলে বাড়ি থেকে আছর উদ্দিন ইজিবাইকে করে স্ত্রীকে নিয়ে উপজেলার কেবলপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। সেখানে শাহিনাকে কিছুদিনের জন্য রেখে আসার কথা ছিল। পথে লেঙ্গুরা বাজার এলাকায় শাহিনা হঠাৎ ইজিবাইক থেকে লাফ দেন। এ সময় স্ত্রীকে বাঁচাতে আছর উদ্দিনও তড়িঘড়ি লাফ দেন। এ ঘটনায় সড়কের ওপর পড়ে গুরুতর আহত হন আছর উদ্দিন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় শাহিনাও সামান্য আহত হন। তাঁকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লেঙ্গুরা বাজারের ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, ‘ইজিবাইকটিতে চালকসহ চারজন যাত্রী ছিলেন। আছর উদ্দিন ও শাহিনা আক্তার দম্পতি পেছনের আসনে বসেছিলেন। হঠাৎ শাহিনা ইজিবাইক থেকে লাফ দিয়ে পড়ে যান। তাঁকে রক্ষা করতে স্বামী আছর উদ্দিনও লাফ দিয়ে পড়ে যান। এতে তিনি মাথায় ও শরীরে প্রচণ্ড আঘাত পান। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি মারা যান। শুনেছি, শাহিনা বেশ কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। নিজের জীবন দিয়ে অসুস্থ স্ত্রীকে বাঁচিয়েছেন আছর উদ্দিন।’
কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই আছর উদ্দিন মারা যান।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান আজ শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আছর উদ্দিনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সকালে এক গ্লাস নাকি চার গ্লাস পানি পান করা ভালো
সকালে খালি পেটে পানি পান করলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়, একথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু কত গ্লাস পানি পান করা ভালো সে কথা জানেন? সেই প্রসঙ্গে আসছি, তার আগে বলে নেই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর খালি পেটে পানি পান করলে ঠিক কোন কোন উপকার পাওয়া যায়। অল্প কিছু বিষয় মেনে চললে সকালে খালি পেটে পানি পান করে সুস্থ-সবল থাকার পথে একধাপ এগিয়ে যেতে পারেন। জেনে নিনি বিস্তারিত—
এক. সকালে পানি পান করলে পাকস্থলী পরিষ্কার হয়। এই অভ্যাস অনেক রোগের ঝুঁকি কমায়। পরিপাকক্রিয়া থেকে সঠিকভাবে নানা পুষ্টি উপাদান গ্রহণে শরীরকে সাহায্য করে। সকালে খালি পেটে পানি পান করলে হজমশক্তি বাড়ে। আর এটা তো জানা কথা, হজমশক্তি ভালো হলে অনেক স্বাস্থ্য সমস্যাই দূর হয়।
আরো পড়ুন:
যেসব স্বাস্থ্যকর অভ্যাস জীবন বদলে দিতে পারে
লিভার ডিটক্সিফিকেশনের জন্য সাপ্লিমেন্ট খাওয়া কী জরুরি?
দুই. সকালে খালি পেটে পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর থাকে। রক্ত থেকে ‘টক্সিন’ বা বিষাক্ত নানা উপাদান দূর করে পানি।নতুন রক্ত কোষ এবং পেশি কোষ জন্মানোর প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
তিন. খালি পেটে পানি পান করলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
যেভাবে পুরোপুরি সুফল পাবেন
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সকালে পানি পান করার পারেই খাবার গ্রহণ করা উচিত নয়।
মনে রাখবেন, প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস পানি পান করেই অনেক উপকার পেতে পারেন। আরও ভালো ফলাফল পেতে প্রতিদিন সকালে গড়ে চার গ্লাস পানি (প্রায় এক লিটার) পানি পান করতে পারেন।
প্রথম দিকে এই অভ্যাস গড়ে তুলতে একটু সমস্যা হতে পারে। তবে চেষ্টা করলে এটা অনেক কিছুদিনের মধ্যে এই অভ্যাস আয়ত্বে চলে আসবে। এবং এর নানা উপকারিতাও বুঝতে পারবেন।
সূত্র: ওয়েবএমডি
ঢাকা/লিপি