অসুস্থ স্ত্রীকে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন আছর উদ্দিন (৪০)। পথে হঠাৎ তাঁর স্ত্রী চলন্ত ইজিবাইক থেকে লাফ দেন। স্ত্রীকে বাঁচাতে তিনিও লাফিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে আছর উদ্দিনের মৃত্যু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আছর উদ্দিন উপজেলার খারনই ইউনিয়নের বটতলা গ্রামের মৃত তহুর উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আছর উদ্দিন স্ত্রী শাহিনা আক্তার কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। তিনি মাঝেমধ্যে কাউকে কিছু না বলে ঘর থেকে বের হয়ে যান। গতকাল বিকেলে বাড়ি থেকে আছর উদ্দিন ইজিবাইকে করে স্ত্রীকে নিয়ে উপজেলার কেবলপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। সেখানে শাহিনাকে কিছুদিনের জন্য রেখে আসার কথা ছিল। পথে লেঙ্গুরা বাজার এলাকায় শাহিনা হঠাৎ ইজিবাইক থেকে লাফ দেন। এ সময় স্ত্রীকে বাঁচাতে আছর উদ্দিনও তড়িঘড়ি লাফ দেন। এ ঘটনায় সড়কের ওপর পড়ে গুরুতর আহত হন আছর উদ্দিন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় শাহিনাও সামান্য আহত হন। তাঁকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লেঙ্গুরা বাজারের ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, ‘ইজিবাইকটিতে চালকসহ চারজন যাত্রী ছিলেন। আছর উদ্দিন ও শাহিনা আক্তার দম্পতি পেছনের আসনে বসেছিলেন। হঠাৎ শাহিনা ইজিবাইক থেকে লাফ দিয়ে পড়ে যান। তাঁকে রক্ষা করতে স্বামী আছর উদ্দিনও লাফ দিয়ে পড়ে যান। এতে তিনি মাথায় ও শরীরে প্রচণ্ড আঘাত পান। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি মারা যান। শুনেছি, শাহিনা বেশ কিছুদিন ধরে মানসিকভাবে অসুস্থ। নিজের জীবন দিয়ে অসুস্থ স্ত্রীকে বাঁচিয়েছেন আছর উদ্দিন।’

কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই আছর উদ্দিন মারা যান।

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান আজ শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আছর উদ্দিনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ নিয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলম ক ন দ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ডিমে শিশুর অ্যালার্জি কেন হয়, কীভাবে বুঝবেন, সমাধান কী

কেন হয়

শিশুদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা পুরোপুরি গড়ে না ওঠায় অনেক সময় ডিমের প্রোটিনকে শরীর ‘অচেনা’ বা ক্ষতিকর হিসেবে ভুলভাবে শনাক্ত করে। ফলে ঠিক যেভাবে রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধব্যবস্থা কাজ করে, একই ধরনের প্রতিক্রিয়া এখানে সৃষ্টি হয়। এই প্রতিক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবেও হতে পারে, আবার অনেক ক্ষেত্রে কয়েক ঘণ্টা পরেও দেখা দিতে পারে।

লক্ষণ 

ত্বকে লাল লাল চাকা, একজিমা।

পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব বা মুখের চারপাশে চুলকানো।

সর্দি, শ্বাস নেওয়ার সময় শোঁ শোঁ শব্দ, শ্বাসকষ্ট হওয়া।

দ্রুত হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ কমে যাওয়া। 

অ্যানাফাইলেকসিস শক। 

আরও পড়ুনডিম দিনে কয়টি ও কীভাবে খাবেন০৫ জুলাই ২০২৫রোগনির্ণয় 

শিশুকে প্রথম ডিম খাওয়ানোর সময় অ্যালার্জি উপসর্গ বোঝা যায়। 

চিকিৎসক যদি মনে করেন ডিম বা ডিমযুক্ত খাবার খেলে অ্যালার্জি হয়, তবে তা স্কিন টেস্ট করে নিশ্চিত হতে পারেন।

চিকিৎসা

ডিম ও ডিমযুক্ত খাবার না খাওয়া। 

অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া দমনে অ্যান্টি হিস্টামিন, মারাত্মক অ্যানাফাইলেকসিসে শক ইনজেকশন এপিনেফ্রিন ব্যবহার।

● ডিমে অ্যালার্জি থাকলে কিছু খাদ্য উপাদান পরিহার করা যেমন—এলবুমিন, গ্লোবুলিন ইত্যাদি।

অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, সাবেক বিভাগীয় প্রধান, শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

আরও পড়ুনডিমের কমলা, না হলুদ কুসুম—কোনটি বেশি স্বাস্থ্যকর৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ