ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা তদারকের জন্য কেন সামরিক বাহিনী গঠন করছে পাকিস্তান
Published: 15th, August 2025 GMT
পাকিস্তান নতুন একটি সামরিক বাহিনী গঠন করতে যাচ্ছে, যে বাহিনী প্রথাগত যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা তদারক করবে। সম্ভবত প্রতিবেশী ও দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে মোকাবিলা করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে মে মাসে সংঘর্ষের স্মরণে গত বুধবার ইসলামাবাদে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আর্মি রকেট ফোর্স গঠনের ঘোষণা দেন। ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে মে মাসের সংঘাত গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল।
শাহবাজ শরিফের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই বাহিনী আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত হবে। শত্রুকে সব দিক থেকে আঘাত করার ক্ষমতাসম্পন্ন এই বাহিনী আমাদের প্রথাগত যুদ্ধসক্ষমতা আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে নতুন মাইলফলক হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করবে।’
তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ তাঁর বিবৃতিতে আর বিস্তারিত কিছু জানাননি।
পাকিস্তানের উচ্চপর্যায়ের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা বলেন, এই বাহিনী নিজস্ব কমান্ডের অধীন থাকবে এবং প্রথাগত যুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনা ও স্থাপনার দায়িত্ব নেবে। তিনি বলেন, এটি স্পষ্টভাবে ভারতের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এই বাহিনীসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে বলেন, পাকিস্তানি নেতৃত্বের পরিচিত কৌশল হলো, বারবার ভারতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা ঢেকে রাখা।
উভয় দেশই পারমাণবিক অস্ত্রধারী এবং ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদ্বন্দ্বী। তারা ক্রমাগত সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে চলেছে।
গত এপ্রিলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এই হামলার জন্য নয়াদিল্লি ইসলামাবাদকে দায়ী করেছিল, তবে পাকিস্তান তা অস্বীকার করে।
গত মে মাসে শুরু হওয়া সংঘাতে দুই দেশই ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন ও যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছিল।
স্বাধীনতার পর থেকে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কাশ্মীর ঘিরে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। দুই দেশই কাশ্মীরের আংশিক নিয়ন্ত্রণ করছে। তবে দুই দেশই পুরো কাশ্মীরকে নিজেদের অঞ্চল বলে দাবি করে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই ব হ ন ত র পর ক ষমত
এছাড়াও পড়ুন:
আইডিএলসির কার্যক্রম শুধু মুনাফার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়
আইডিএলসি ফাইন্যান্সের তিনটি প্রধান লক্ষ্য। এগুলো হলো পরিবেশের ওপর ব্যবসার নেতিবাচক প্রভাব কমানো, সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রবৃদ্ধি তথা উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি। এই লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের জন্য ২০২১ সালে আইডিএলসি পাঁচ বছর মেয়াদি একটি পথনকশা তৈরি করে। এতে ১০টি স্তম্ভ (মূল দিক) ও ৩০টি অঙ্গীকার রয়েছে। এই পথনকশা অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছে দেশের অন্যতম শীর্ষ আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।
আইডিএলসির এই প্রচেষ্টার স্বীকৃতিও মিলেছে। নীতিনির্ধারণী সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের বিচারে দেশের পরিবেশ, সমাজ ও মানুষের প্রতি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স। আমরা সব সময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিকে গুরুত্ব দিয়ে পরিবেশ, সমাজ ও সুশাসনে (ইএসজি) ভালো উদাহরণ গড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
টেকসই ও পরিবেশবান্ধব (গ্রিন) অর্থায়নেও ভালো করছে আইডিএলসি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণের ন্যূনতম ২০ শতাংশ হতে হবে টেকসই অর্থায়ন খাতে। সেখানে ২০২৪ সালে আমাদের মোট ঋণের ৪৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ ছিল টেকসই অর্থায়নভিত্তিক। এ ছাড়া গত বছর পরিবেশবান্ধব খাতে আমাদের ঋণ ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এটিও বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫ শতাংশের ন্যূনতম সীমার দ্বিগুণের বেশি।
২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক, এফএমও (নেদারল্যান্ডসভিত্তিক একটি উন্নয়নমূলক আর্থিক প্রতিষ্ঠান) এবং এফআই কনসাল্টের (পরামর্শক প্রতিষ্ঠান) সহায়তায় আইডিএলসি ফাইন্যান্স ‘গ্রিন ব্যাংকিং’ নীতিমালা ও ‘গ্রিন অফিস’ নীতিমালা চালু করে। এটি আমাদের পরিবেশবান্ধব ও দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক যাত্রায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এর মাধ্যমে আমরা শুধু আর্থিক সেবা প্রদানের ধরনে পরিবর্তন আনিনি; বরং পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্যকর অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি জোরদার করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে গড়ে তোলা হয় সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ইউনিট (এসএফইউ)। এই ইউনিট পরিবেশ ও সামাজিক ঝুঁকি বিশ্লেষণ, কার্বন নিঃসরণ পরিমাপ, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সাসটেইনেবিলিটি প্রতিবেদন প্রণয়ন এবং উদ্ভাবনী পরিবেশবান্ধব আর্থিক পণ্য উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ফলে আমাদের ব্যাংকিং কার্যক্রম শুধু মুনাফা অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা দেশের টেকসই উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখছে।
আইডিএলসির নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমেও পরিবেশের প্রতি নিবেদিত আচরণের প্রভাব লক্ষ করা যায়। যেমন আমাদের বিভিন্ন কার্যালয়ে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী লাইট, স্বয়ংক্রিয় সেন্সরযুক্ত পানি ও বিদ্যুৎব্যবস্থা রয়েছে।
বর্তমানে পরিবেশ, সমাজ ও সুশাসনের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে কাজ করে যাচ্ছে আইডিএলসি। এনজেডবিএর আওতায় ২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা প্রতিবছর নিয়মিত স্কোপ ওয়ান ও স্কোপ টু নিঃসরণের মাত্রা পরিমাপ করছি। ২০২২ সালের নির্গমন তথ্যকে ভিত্তি ধরে খাদ্য, টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক, কৃষি, মোটরযান এবং বিদ্যুৎ—এই পাঁচ প্রধান খাতে ধাপে ধাপে নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি।
আমাদের বিভিন্ন করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রম এই প্রতিশ্রুতির প্রমাণ দেয়। যেমন চট্টগ্রাম মা ও শিশু ক্যানসার হাসপাতালে আইডিএলসির সহযোগিতায় ২০ শয্যার কেমোথেরাপি ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি আর্থিকভাবে অসচ্ছল ক্যানসার রোগী চিকিৎসাসেবা পেয়েছেন। এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজ করছে আইডিএলসি। এভাবে টেকসই উন্নয়নের পথে দায়িত্বশীল অর্থায়ন ও সামাজিক দায়িত্বের দারুণ সব গল্প লিখে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আইডিএলসি।
আসিফ সাদ বিন শামস
অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আইডিএলসি ফাইন্যান্স