কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, “যারা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন, শেষ হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন আমি তাদের সমর্থন করি। কারণ, শেখ হাসিনার পতন আল্লাহর তরফ থেকে হয়েছে।” 

তিনি বলেন, “জনগণ রাস্তায় নেমেছিল বলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আইন অনুযায়ী তার বিচার করুন, শাস্তি দিন মাথা পেতে নিব। শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনা এক নয়।” 

শনিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে  ঘাটাইল উপজেলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজড়িত মাকড়াই দিবস উপলক্ষে কাদেরিয়া বাহিনী মুক্তিযোদ্ধার মহাসমাবেশে প্রধান প্রক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। 

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে তিনি বলেন, “আপনার গ্রামীন ব্যাংকের বিরুদ্ধে সমস্ত সরকার, বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ রুখে দাড়িয়েছিল, আমি কাদের সিদ্দিকী না দাঁড়ালে আপনার অর্ধেক গ্রামীণ ব্যাংক মাটির নিচে চলে যেত। আপনার এক বছরের শাসন   হৃদয় থেকে নিতে পারছি না। আপনাকে আবার আমি অনুরোধ করছি, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না দিলে এবং নির্বাচন করতে না পারলে শেখ হাসিনার চাইতে আপনার পরিণতি ১০ গুণ খারাপ হবে।” 

মুক্তযোদ্ধা নিয়ে তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। তাদের সম্মানী এক লাখ টাকা করতে হবে। তবে, এ বছরই তাদের সম্মানী ৫০ হাজার করার দাবি জানাচ্ছি। আমরা ভিক্ষা চাই না, সম্মানী চাই। যুদ্ধ বড় কঠিন জিনিস। যখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন জীবনের মায়াও ছিল না। আমি কোনো দারগা-পুলিশকে ভয় পাই না। আমি আল্লাহ ও রসূলকে ভয় করি। আমি মানুষকে ভয় করি। আমি মুক্তিযোদ্ধার সম্মান বৃদ্ধি করার চেষ্টা করেছি।” 

মুক্তিযুদ্ধের সাবেক জেলা কমান্ডার  ফজলুর হক বীরপ্রতীকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, ঘাটাইল উপজেলার সাবেক কমান্ডার এমদাদুল হক খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন, হুমায়ুন বাংগাল, ঘাটাইল উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আতিকুর রহমান।

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ স ন র পতন আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

বাণিজ্য আলোচনায় অংশ নিতে ভারতে আসছে না মার্কিন প্রতিনিধিদলপ্রতিনিধিদল

২৫ থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিনিধিদলের ভারত সফরের করার কথা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা আপাতত স্থগিত হলো। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্রের বরাতে এনডিটিভি এই সংবাদ জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চুক্তি নিয়ে আলোচনার বর্তমান পর্বটি অন্য কোনো সময় হতে পারে। ফলে ২৭ আগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত বা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা আপাতত ভেস্তে গেল; যদিও বিষয়টি রয়টার্স তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি।

চলতি আগস্ট মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। রাশিয়ার তেল আমদানির শাস্তি হিসেবে ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপ করে।

২৭ আগস্ট থেকে এই শুল্ক কার্যকর হলে কিছু ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের যত শুল্ক আরোপ করেছে, তার মধ্যে এটি অন্যতম সর্বোচ্চ হার।

ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচানায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল ভারতের বিশাল কৃষি ও দুগ্ধ খাত উন্মুক্ত করা। কিন্তু ভারত এ বিষয়ে একেবারে অনড়। নিজের কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় তারা এই ছাড় দিতে চায় না। এ ছাড়া আরও কিছু কারণে দেশ দুটির মধ্যে চুক্তি হলো না।

এমনকি ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারতের কৃষক ও মজুরের স্বার্থ রক্ষায় একবিন্দু ছাড়া দেওয়া হবে না। সে জন্য হয়তো তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে বড় মূল্য দিতে হবে, কিন্তু তিনি সে জন্য প্রস্তুত। এ পরিস্থিতিতে খবর এল, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল ভারতে আসছে না। ফলে বাণিজ্যচুক্তির ভবিষ্যৎ অনেকটা ঝুলে গেল বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

রয়টার্সের সংবাদে সাবেক মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি মার্ক লিন্সকট বলেন, একসময় দুই পক্ষই চুক্তি স্বাক্ষরের খুব কাছাকাছি ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী মোদির মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ না হওয়া মূল বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা বলেন, অন্যান্য দেশের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে সরাসরি ফোন ছাড়াই।

ভারতের এক কর্মকর্তা বলেন, মোদি ফোন করতে চাননি। কেননা, তাঁর আশঙ্কা ছিল, তিনি ট্রাম্পের একতরফা কথার ফুলঝুরির মধ্যে পড়তে পারেন।

ওয়াশিংটনের একটি সূত্র জানায়, ট্রাম্প ভারতের কাছ থেকে বড় কিছুর আশা করছিলেন। যেমন তাঁর আশা ছিল, ভারতের বাজার আরও উন্মুক্ত হবে, বিনিয়োগ ও বড় ক্রয়ের প্রতিশ্রুতি আসবে। কিন্তু ভারতের এক কর্মকর্তা স্বীকার করেন, ভারত তেমন ছাড় দিতে প্রস্তুত ছিল না। দক্ষিণ কোরিয়া চুক্তির আগে ৩৫ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ ও জ্বালানি আমদানির প্রতিশ্রুতি এবং চাল ও গরুর মাংস আমদানিতে ছাড় দিয়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক আদায় করে। কিন্তু ভারত তেমন কোনো চমকপ্রদ ছাড়ের কথা বলেনি, বরং তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় কট্টর অবস্থানে ছিল। যে বিষয়ে ট্রাম্পও বলেছেন, ভারত আলোচনার সময় অত্যন্ত কঠোর।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার পণ্য কেনা চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ রাশিয়ার তেল কেনার জন্য শুধু ভারতকে আলাদাভাবে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ