যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের সান আন্তোনিও পাবলিক লাইব্রেরির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবাক করা এক ঘটনার সাক্ষী হয়ে গেলেন। এই গ্রন্থাগার থেকে ধার নেওয়া একটি বই প্রায় ৮২ বছর পর ফেরত এসেছে। বইয়ের সঙ্গে পাঠানো হয়েছে একটি চিঠি। তাতে লেখা ছিল, ‘দাদি আর জরিমানা দিতে পারবেন না।’

সান আন্তোনিও পাবলিক লাইব্রেরি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বইটির নাম ইউর চাইল্ড, হিজ ফ্যামিলি, অ্যান্ড ফ্রেন্ডস। লেখক পারিবারিক ও বিবাহ-পরামর্শক ফ্রান্সেস ব্রুস স্ট্রেইন। ১৯৪৩ সালের জুলাইয়ে বইটি ধার নেওয়া হয়েছিল। গত জুনে ওরেগন অঙ্গরাজ্যের এক ব্যক্তি এটি ফেরত দিয়েছেন।

বইয়ের সঙ্গে পাঠানো চিঠিতে ওই ব্যক্তি লিখেছেন, ‘সম্প্রতি বাবার মৃত্যুর পর আমি তাঁর রেখে যাওয়া কয়েক বাক্স বই পেয়েছি। বাক্সগুলোর মধ্যে এই বইটি ছিল।’ চিঠিতে তিনি নিজের নাম না লিখে শুধু আদ্যক্ষর দিয়েছেন —পি.

এ.এ.জি। সান আন্তোনিও পাবলিক লাইব্রেরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে চিঠিটি প্রকাশ করেছে।

মা-বাবার সন্তানের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত—সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে এ বই লেখা হয়েছে। যে ব্যক্তি বইটি ফেরত দিয়েছেন, তাঁর বাবার বয়স যখন ১১ বছর, তখন বইটি ধার নেওয়া হয়েছিল।

ওই ব্যক্তি চিঠিতে লিখেছেন, ‘বইটি নিশ্চয়ই আমার দাদি মারিয়া দেল সকোরো আলদ্রেতে ফ্লোরেস (কর্তেজ) ধার নিয়েছিলেন। ধার নেওয়ার বছরেই তিনি মেক্সিকো সিটিতে মার্কিন দূতাবাসে কাজ করতে যান। তিনি বইটি সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রায় ৮২ বছর পর সেটি আমার হাতে এসে পৌঁছেছে।’

লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২১ সাল থেকে তারা জরিমানা তুলে দিয়েছে। যদিও বইটির ভেতরে একটি সিলমোহরে উল্লেখ আছে, সময়মতো বই ফেরত না দিলে প্রতিদিন তিন সেন্ট করে জরিমানা দিতে হবে। সে হিসাবে এ বছরের জুন পর্যন্ত জরিমানার পরিমাণ দাঁড়াত প্রায় ৯০০ ডলার। আর মূল্যস্ফীতি হিসাব করে দেখা গেছে, তিন সেন্টের বর্তমান মূল্য প্রায় ৫৬ সেন্ট। ফলে জরিমানা দাঁড়াত ১৬ হাজার ডলারের বেশি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বইটি এখনো ভালো আছে। আগস্টজুড়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে প্রদর্শিত হবে। এরপর তা বিক্রির জন্য তুলে দেওয়া হবে অলাভজনক সংগঠন ফ্রেন্ডস অব সান আন্তোনিও পাবলিক লাইব্রেরির হাতে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে বাংলাদেশের অবশিষ্ট কয়েকটি মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ

বিদেশে বাংলাদেশের অবশিষ্ট যেসব মিশনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি রয়েছে, তা সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেশ কয়েকটি মিশনে টেলিফোনে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আজ রোববার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।

গত শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মরত কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে ফোন করেন। ঢাকা থেকে বিদেশে বাংলাদেশের নির্ধারিত কয়েকজন কূটনীতিককে নিজেদের মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে নিতে ফোনে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অন্য মিশন, উপমিশন থেকে ছবি সরানোর জন্য অন্যদের জানাতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ৮২টি মিশন ও উপমিশন রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টির বেশি মিশন ও উপমিশন থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ওয়াশিংটন, দিল্লি, বেইজিংসহ বেশির ভাগ মিশন থেকে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্টের ছাত্র-গণ–অভ্যুত্থানের পর এসব ছবি সরানো হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গত শুক্রবারের আগেই যে মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে, তার মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারত।

ইউরোপ, আমেরিকা অঞ্চলে কর্মরত কয়েকজন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিদেশে বাংলাদেশের যে মিশনগুলো রয়েছে, সেখান থেকে আগেই সরানো হয়েছে রাষ্ট্রপতির ছবি। তবে এ ছবি রাখা না রাখার কোনো নির্দেশনাও ছিল না বলে জানান তাঁরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ