কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। গত দুইদিন ধরে এ নদীর পানি কমা অব্যাহত রয়েছে। এরপরও এই জেলার দৌলতপুর উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্লাবিত অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।

রবিবার (১৯ আগস্ট) পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রশিদুর রহমানের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, বর্তনামে পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রমের সম্ভাবনা নেই। প্লাবিত হওয়া রাজশাহী জেলার নিম্নাঞ্চলের পানি নেমে যেতে শুরু করায় পরিস্থিতি অপরিবর্তনীয় থাকবে। গত দুইদিন ধরে পানি কমতে শুরু করেছে। 

এলাকাবাসী জানান, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ। নতুন করে যদি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে তাহলে দুই-একদিনের মধ্যেই এসব এলাকার বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করার আশঙ্কা রয়েছে।

আরো পড়ুন:

তিস্তা পাড়ের ২০ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

কুষ্টিয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ১৩ স্কুল বন্ধ ঘোষণা

এই দুই ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ৫০০ হেক্টর জমির মরিচ, সবজি, কলা, ভুট্টা, ধান ও পাটসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা।

চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বলেন, ‍“রাস্তায় পানি উঠায় এই ইউনিয়ন মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।”

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, তার ইউনিয়নের নদীর ওপারের অন্তত ৩০ হাজার মানুষের বসবাস, যাদের অধিকাংশই পানিবন্দি। মাঠের আবাদি ফসল বিশেষ করে মরিচ, সবজি, পাট ও ধান ক্ষেত ডুবে গেছে।

দৌলতপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুশতাক আহম্মেদ বলেন, “বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ২১টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলো খোলা থাকবে যাতে বন্যাকবলিত মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন।”

দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.

নুরুল ইসলাম জানান, চরাঞ্চলের ৫০০ হেক্টর জমির মরিচ, রোপা আউশ, কলা, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ভুট্টা বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে। নিচু এলাকার কিছু বাড়িতেও পানি প্রবেশ করেছে।

দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, পদ্মা নদীতে হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিশেষ করে চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক বন্যা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে। বন্যায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া, শুকনো খাবারসহ দুর্যোগ মোকাবিলায় ত্রাণ সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন বন দ নদ দ লতপ র উপজ ল প ন বন দ

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যানচেস্টার সিটির দাপুটে জয়

কেভিন ডি ব্রুইনের বিদায়ের পর ম্যানসিটির সমর্থকরা হয়তো শূন্যতা অনুভব করছিলেন। কিন্তু মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই সেই অভাব কিছুটা হলেও পূরণ করে দিয়েছেন ডাচ মিডফিল্ডার টিজানি রেইন্ডার্স। এসি মিলান থেকে আসা এই তরুণ অভিষেকেই উজ্জ্বল হয়ে উঠলেন উলভারহ্যাম্পটনের বিপক্ষে ৪-০ গোলের দাপুটে জয়ে।

রেইন্ডার্স মাঝমাঠে খেলার ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করেছেন দারুণ দক্ষতায়। শুধু গোলই করেননি, সতীর্থদেরও গোল করিয়েছেন তিনি। সের্হিয়ো আগুয়েরোর পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে সিটির হয়ে অভিষেক ম্যাচেই গোল ও অ্যাসিস্ট দুটোতেই নাম লেখালেন এই ডাচ তারকা।

তাকে ঘিরে প্রশংসার ঝড় তুলেছেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি স্ট্রাইকার অ্যালান শিয়েরার। তার ভাষায়, “রেইন্ডার্স মাঠে প্রায় নিখুঁত ছিলেন। খেলার রাশ ছিল পুরোপুরি তার নিয়ন্ত্রণে। প্রতিপক্ষের জন্য ওকে সামলানো হবে সত্যিকারের দুঃস্বপ্ন।”

আরো পড়ুন:

গোলবন্যায় শেষ ষোলোতে ম্যানসিটি

১৪ কোটি টাকা জরিমানা গুনলো ম্যানসিটিকে

স্ট্যাটসে চোখ রাখলেও সিটির প্রাধান্য স্পষ্ট। পুরো ম্যাচে বল দখলে ছিল প্রায় ৫৯ শতাংশ। গোলমুখে ১৫ বার আক্রমণ করে ৪ বার বল পাঠিয়েছে জালে। অপরদিকে উলভসের ৯ শটের মধ্যে ৩টি ছিল লক্ষ্যে।

হলান্ড নিজের ধারা বজায় রেখে জোড়া গোল করেছেন, টানা চার মৌসুমের প্রথম ম্যাচেই গোল করার কীর্তি ধরে রেখেছেন নরওয়েজিয়ান তারকা। বাকি দুই গোল করেছেন নবাগত রেইন্ডার্স ও তরুণ রায়ান শেরকি।

গোলগুলোর ক্রমও ছিল নজরকাড়া। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে রেইন্ডার্সের তৈরি আক্রমণ থেকে লুইসের ক্রসে হলান্ডের প্রথম গোল। তিন মিনিট পরই অস্কার ববের পাস থেকে রেইন্ডার্স পেলেন নিজের অভিষেক গোল। দ্বিতীয়ার্ধে আবারও রেইন্ডার্সের পাস থেকে হলান্ডের জোড়া গোল। আর শেষ দিকে শেরকির নিখুঁত শটে ম্যাচের শেষ বাঁধ ভাঙে।

তবে জয় সত্ত্বেও কোচ পেপ গার্দিওলা কিছুটা অস্বস্তির কথা জানালেন। তার মতে, “দলের গভীরতা দরকার, কিন্তু এত বেশি খেলোয়াড় একসাথে রাখাও সমস্যার। আগামী দুই সপ্তাহে খেলোয়াড় ও এজেন্টদের সঙ্গে আলোচনা করে এর সমাধান বের করতেই হবে।”

ম্যানসিটির মৌসুমের শুরুটা তাই শুধু বড় জয়েই সীমাবদ্ধ নয়, নতুন নায়ক রেইন্ডার্সের উত্থানেও রঙিন হয়ে উঠেছে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ