পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী দুজনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 17th, August 2025 GMT
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী দুই ব্যক্তিকে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পঁয়ষট্টিবাড়ী সীমান্ত দিয়ে তাঁদের ঠেলে পাঠানো হয়। পরে তাঁদের আটক করে থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
আটক ব্যক্তিরা হলেন সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ছাত্তারকোনা গ্রামের আবু সিদ্দিক (৫০) ও নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সিতারামপুর গ্রামের রানু মোল্লা (৬০)। তাঁরা অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করতেন বলে বিজিবিকে জানিয়েছেন।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের প্রধান পিলার ৮৪৫ নম্বরের সীমান্ত দিয়ে কোচবিহার ৯৮ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের বিএসবাড়ী ক্যাম্পের সদস্যরা ওই দুজনকে ঠেলে পাঠান। খবর পেয়ে ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (তিস্তা–২) পঁয়ষট্টিবাড়ী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা সীমান্ত থেকে প্রায় এক কিলোমিটার বাংলাদেশের ভেতরে প্রধানপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের আটক করেন। ওই ব্যক্তিরা বিজিবিকে জানান, বছরখানেক আগে অবৈধভাবে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে তাঁরা ভারতে যান। পরে ভারতের গুজরাট এলাকায় ভিক্ষাবৃত্তি করতেন।
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভারত থেকে ঠেলে পাঠানো দুই ব্যক্তিকে থানায় হস্তান্তর করেছে বিজিবি। তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের খবর পাঠানো হয়েছে। নাগরিকত্ব যাচাইয়ের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পঞ্চগড় সীমান্তে যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শুকানি সীমান্তে করতোয়া ও সাও নদীর মোহনা থেকে মানিক হোসেন (৩২) নামে এক যুবকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা করেছে পুলিশ ও বিজিবি। ওই যুবক দুই দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে পানিতে মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশ ও বিজিবিকে খবর দেন স্থানীয়রা। তার মাথায় গুলির ক্ষতচিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। দুপুরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
মানিক হোসেনের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ভোরে সীমান্তে একদল চোরাকারবারি গরু আনতে গেলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বিএসএফ। এ সময় বাকিরা পালিয়ে গেলেও নিখোঁজ হন মানিকসহ চারজন। তাদের মধ্যে আব্দুল হুদা ওরফে জমির উদ্দিন নামে একজনকে শনিবার সকালে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। তার বিরুদ্ধ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিজিবি। এখনো আরো দুজন নিখোঁজ আছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
দেবনগড় ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আইবুল ইসলাম বলেছেন, স্থানীয় মানুষদের একটি দল সীমান্তে গরু আনতে গেলে বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ওই দিন থেকে চারজন নিখোঁজ ছিলেন। আজ মানিকের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া গেছে। ধারণা করছি, বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কেউ অপরাধ করলে তাকে প্রচলিত আইনে শাস্তি দেওয়া হোক। কিন্তু, নির্বিচারে গুলি করে হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নাজির হোসেন বলেছেন, খবর পেয়ে আমরা মানিকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ওই যুবকের মাথায় গুলির আঘাতের চিহ্ন আছে। তার মাথার পেছনে গুলি ঢুকে চোখের পাশ দিয়ে বেড়িয়ে গেছে। আগে তার নিখোঁজের বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেছেন, তদন্ত ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে ওই যুবকের মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ভারতের অভ্যন্তরে আটক করে একজনকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হবে।
ঢাকা/নাঈম/রফিক