আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি মাটি নিয়েও কোনো চুক্তি সম্ভব নয়
Published: 21st, September 2025 GMT
আফগানিস্তানের বাগরাম সামরিক ঘাঁটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন আফগান তালেবান সরকারের এক কর্মকর্তা। আজ রোববার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফ ফাসিহউদ্দিন ফিতরাত বলেন, এই ঘাঁটি নিয়ে কোনো চুক্তি সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাবেক এই মার্কিন সামরিক ঘাঁটি ফিরিয়ে নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করার পর তালেবান সরকারের এই কর্মকর্তা এ কথা বলেন।
বাগরাম ঘাঁটি ফিরিয়ে না দিলে গতকাল শনিবার ট্রাম্প আফগানিস্তানকে শাস্তির হুমকি দেন। তবে কী ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে, তা তিনি উল্লেখ করেননি। এর মাত্র কয়েক দিন আগে যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরকালে তিনি বাগরাম ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
৭৯ বছর বয়সী এই নেতা নিজের মালিকানাধীন ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘আফগানিস্তান যদি যারা বাগরাম বিমানঘাঁটি তৈরি করেছে, সেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এটি ফিরিয়ে না দেয়, তবে খারাপ কিছু ঘটবে!’
এর প্রতিক্রিয়ায় আজ আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফ ফাসিহউদ্দিন ফিতরাত বলেন, ‘কিছু লোক’ একটি ‘রাজনৈতিক চুক্তি’র মাধ্যমে ঘাঁটিটি ফিরিয়ে নিতে চান। তিনি বলেন, ম্প্রতি কিছু লোক বলেছেন যে তাঁরা বাগরাম বিমানঘাঁটি ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অব স্টাফ বলেন, ‘আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি মাটি নিয়েও কোনো চুক্তি সম্ভব নয়। আমাদের এর কোনো প্রয়োজন নেই।’
আরও পড়ুন‘বাগরাম বিমানঘাঁটি ফিরিয়ে না দিলে দেখবেন, আমি কী করি’, তালেবানকে হুমকি ট্রাম্পের৭ ঘণ্টা আগেআফগানিস্তানের বৃহত্তম বিমানঘাঁটি বাগরাম ছিল তালেবানদের বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যুদ্ধ পরিচালনার মূল কেন্দ্র। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ২০০১ সালে আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। এই যুদ্ধের মাধ্যমে তালেবান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
পরে তালেবানদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে হওয়া চুক্তির অংশ হিসেবে ২০২১ সালের জুলাইয়ে মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা বিশৃঙ্খলভাবে বাগরাম সামরিক ঘাঁটি ছেড়ে যান। গুরুত্বপূর্ণ এই বিমানঘাঁটি হাতছাড়া হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই আফগান সামরিক বাহিনী ভেঙে পড়ে এবং তালেবানরা আবার ক্ষমতা দখল করে।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে চান ট্রাম্প, আছে যেসব সমস্যা১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন র ত ল ব ন সরক র য ক তর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
৫২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ, মামলা হচ্ছে ৬ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে
৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সিন্ডিকেট করে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সরকার নির্ধারিত টাকার পরিবর্তে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে ৫২৫ কোটি ২২ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন। এই অভিযোগে ৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
মালয়েশিয়ার পেট্রোনাস টাওয়ার থ্রিতে আগুন
ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর
তিনি বলেন, “সরকার নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার পরিবর্তে ৩১ হাজার ৩৩১ জনের কাছ থেকে পাঁচগুণ বেশি অর্থ আদায় করে তারা বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এসব অভিযোগে গত মঙ্গলবার মামলাগুলো অনুমোদন করেছে দুদক। ৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মামলায় আসামি করা হচ্ছে।”
মামলায় যারা আসামি:
মেসার্স আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মাধ্যমে ৭ হাজার ৪৩০ জনের কাছ থেকে ১২৪ কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক রুহুল আমিনকে প্রথম মামলায় আসামি করা হচ্ছে।
মেসার্স মেরিট ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ৩ হাজার ৪৮৯ জনের কাছ থেকে ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের নামে দ্বিতীয় মামলা হচ্ছে। এ মামলায় কিরণের স্ত্রী ও মেরিট ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের এমডিকেও আসামি করা হচ্ছে।
সাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৩ হাজার ৩২১ জনের কাছ থেকে ৫৫ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির মালিক শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমানকে তৃতীয় মামলার আসামি করা হচ্ছে।
ইমপেরিয়াল রিসোর্স লিমিটেডের মাধ্যমে ৮ হাজার ১০১ জনের কাছ থেকে ১৩৫ কোটি ৬৯ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসাইন ও এমডি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর রামে মামলা হচ্ছে।
আরআরসি হিউম্যান রিসোর্ট সার্ভিস লিমিটেডের মাধ্যমে ৫ হাজার ২০২ জনের কাছ থেকে ৮৭ কোটি ১৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, এমডি মো. আলমগীর কবীরকে আসামি করে মামলা হচ্ছে।
থানেক্স ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭৮৮ জনের কাছ থেকে ৬৩ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ৩ জনকে আসামি করে মামলা হচ্ছে। তারা হলেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক এমডি আব্দুল্লাহ শাহেদ, পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন নোমানী ও এমডি শমসের আহমেদ।
এর আগে গত ১১ মার্চ মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩২ জনের নামে ও ১৪ সেপ্টেম্বর এক হাজার ১৫৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সির শীর্ষ কর্মকর্তার নামে মামলা করে দুদক।
বিভিন্ন অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়া বন্ধ করেছিল মালয়েশিয়া। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ফের বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রমিক নেওয়ার চুক্তি করে দেশটি। তখন শ্রমিক ভিসায় দেশটিতে যেতে সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা ফি নির্ধারণ করে সরকার। ২০২২ সালে এক অফিস আদেশে এ খরচ নির্ধারণ করেছিল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি