ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে ২ দিনব্যাপী অগ্নিনিরাপত্তা প্রশিক্ষণ
Published: 25th, September 2025 GMT
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ সর্বদা কর্মীদের নিরাপত্তা প্রদানে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে দুই দিনব্যাপী অগ্নিনিরাপত্তা প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ ও শ্রম বিধি-২০১৫ এর নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত আয়োজন হিসেবে ইনভায়রনমেন্ট, হেলথ এন্ড সেইফটি (ইএইচএস) বিভাগের ফায়ার সেইফটি ম্যানেজমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে গাজীপুরের চন্দ্রাসহ ওয়ালটন হেডকোয়ার্টারে গত ২৩ তারিখ হতে দুই দিনব্যাপী ‘অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা’শীর্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
উক্ত প্রশিক্ষণটি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির এ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইউসুফ আলী তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, “অগ্নি নিরাপত্তা আমাদের সবার দায়িত্ব। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান কর্মক্ষেত্র ও দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগিয়ে আমরা একটি নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি। নিরাপত্তা হোক আমাদের অভ্যাস ও সংস্কৃতি।”
ইনভায়রনমেন্ট, হেলথ অ্যান্ড সেইফটি (ইএইচএস) বিভাগের প্রধান মোঃ.
প্রশিক্ষণে প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের টাঙ্গাইল ফায়ার স্টেশনের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর মো. আতাউর রহমান। এছাড়া সারাবো, কাশিমপুর, গাজীপুর ফায়ার স্টেশনের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরাও বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ও ব্যবহারিক অনুশীলন পরিচালনা করেন।
প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য
কর্মশালায় মূলত কর্মক্ষেত্রে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সক্ষমতা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। আলোচনায় উঠে আসে—
আগুনের ঝুঁকি সনাক্তকরণ ও প্রতিরোধ
আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন
প্রাতিষ্ঠানিক সম্পদ ও কর্মী সুরক্ষা
প্রযোজ্য আইন ও প্রবিধান মেনে চলা
নিরাপত্তা সংস্কৃতি গড়ে তোলা
মনোবল ও দলগত প্রতিক্রিয়া দক্ষতা বৃদ্ধি
অংশগ্রহণকারীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের সময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রদানের কৌশল শেখানো হয়। এ সময় অগ্নি নির্বাপন, জরুরি উদ্ধার কার্যক্রম এবং প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে বাস্তব অনুশীলন করানো হয়।
আশ্বিন মাসে অগ্নি নিরাপত্তার বিশেষ গুরুত্ব
বিশেষজ্ঞরা জানান, আশ্বিন মাসে বৃষ্টি, বজ্রপাত ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে বৈদ্যুতিক গোলযোগ ও অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। ইলেকট্রনিক্স শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য এ সময় বাড়তি সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি।
বিশেষজ্ঞদের ভাষায়—“একটি ছোট্ট অসতর্কতা শরতের সৌন্দর্যকে মুহূর্তে ধ্বংস করতে পারে—সতর্ক থাকুন, নিরাপদ থাকুন।”
ওয়ালটনের প্রতিশ্রুতি
ওয়ালটন সর্বদা বিশ্বাস করে যে সচেতনতা ও প্রস্তুতিই নিরাপত্তার মূল চাবিকাঠি। এজন্য প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে কর্মীদের অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ, মহড়া ও আপডেট প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে সনদপত্র প্রদান করা হয়। পুরো আয়োজনের সার্বিক সমন্বয় করেন ওয়ালটন ইএইচএস বিভাগের ফায়ার সেফটি ম্যানেজমেন্ট সেকশনের ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার মো. ইশাদুল ইসলাম।
ঢাকা/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের সেরা কর্মস্থল হিলটন হোটেল, সেরা তালিকায় আছে মেটলাইফ
আধুনিক মানুষের দিনের বড় একটা সময় যায় কর্মস্থলে। ফলে সেই কর্মস্থলের পরিবেশ কেমন, কর্তৃপক্ষ কর্মীদের কথা কতটা ভাবছে—এ সবকিছু এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে।
সম্মান, নিরাপত্তা, উন্নতির সুযোগ ও কাজের অর্থবহতা আছে—মানুষ সাধারণত এমন কর্মস্থলই চায়। এসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে ফরচুন ম্যাগাজিন বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। তারা মূলত বিশ্বের সেরা ২৫ কর্মস্থলের তালিকা করে। সেই তালিকায় সবার ওপরে আছে হিলটন হোটেল। মূলত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে নিয়ে এই জরিপ ও তালিকা করা হয়েছে।
এবারের তালিকায় ২৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি যুক্তরাষ্ট্রের। অন্যগুলো বিভিন্ন দেশের, মূলত ইউরোপের। কোম্পানিগুলোর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে—২৫টি কোম্পানির মধ্যে ৮টি এই খাতের। এ ছাড়া নির্মাণ, জৈব ওষুধ, উৎপাদন, কুরিয়ার, আর্থিক ও পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানিগুলোও তালিকায় আছে।
সেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি কোম্পানি হলো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জীবনবিমা কোম্পানি মেটলাইফ। ২০২৫ সালে দশম স্থান অর্জন করে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক স্বীকৃতি ধরে রাখল কোম্পানিটি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টি দেশে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম রয়েছে।
৯০ লাখের বেশি উত্তরের ওপর ভিত্তি করে ফরচুনের সেরা ২৫টি কর্মক্ষেত্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী আড়াই কোটি কর্মীর কাজের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরা হয়েছে।
এ বিষয়ে মেটলাইফের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মিশেল খালাফ বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকায় স্থান পাওয়া কর্মীদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগের প্রমাণ।’
কারা আছে তালিকায়দেখে নেওয়া যাক এবারের তালিকায় কোন কোন দেশের কোম্পানি আছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে কুরিয়ার ও যাতায়াত খাতের কোম্পানি ডিএইচএল। তৃতীয় স্থানে আছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সিসকো। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রে। চতুর্থ স্থানে আছে পেশাদার সেবা দেওয়া আইরিশ কোম্পানি অ্যাক্সেনচিউর, পঞ্চম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিশ্বখ্যাত হোটেল ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল। ষষ্ঠ স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি অ্যাব ভিয়ে, সপ্তম স্থানে আছে ফ্রান্সের পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানি টিপি। অষ্টম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনভিত্তিক কোম্পানি স্ট্রাইকার, নবম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি সেলস ফোর্স।
দশম স্থানে আছে মার্কিন বিমা কোম্পানি মেটলাইফ, ১১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সার্ভিস নাউ। ১২তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতা কোম্পানি স্পেকসেভার্স। ১৩তম স্থানে আছে জার্মানির স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি সিমেন্স হেলদিনেস; ১৪তম স্থানে আছে আইরিশ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এক্সপেরিয়েন। ১৫তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এনভিডিয়া, ১৬তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি কেডেন্স। ১৭তম স্থানে আছে জার্মানির বিমা ও আর্থিক কোম্পানি আলিয়াঞ্জ এবং ১৮তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের কোম্পানি ডাও।
১৯ থেকে ২১তম স্থানে আছে তিনটি মার্কিন কোম্পানি। ১৯তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি ভিয়াট্রিস, ২০তম স্থানে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাডোবি, ২১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ক্রাউডস্ট্রাইক।
২২ ও ২৩তম স্থানেও আছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি কোম্পানি—উৎপাদন খাতের এসসি জনসন ও খুচরা বিক্রয় খাতের ট্রেক বাইসাইকেল। ২৪তম স্থানে আছে লিচেনস্টাইনের নির্মাণ কোম্পানি হিলতি ও ২৫তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের বিমা ও আর্থিক খাতের কোম্পানি অ্যাডমিরাল গ্রুপ।
কীভাবে এই মূল্যায়ন৩০ বছর ধরে এই জরিপ পরিচালনা করছে ফরচুন ম্যাগাজিন। সারা বিশ্বের কর্মীদের কাছ থেকে তারা জানতে চায়, কর্মস্থলে তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন। এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তারা কিছু মানদণ্ড তৈরি করে। সেই মানদণ্ডের ভিত্তিতে বোঝা যায়, কোনো কর্মস্থল প্রকৃত অর্থেই ‘দারুণ’ কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা সে প্রতিষ্ঠানে থাকতে চান কি না, প্রতিষ্ঠান কত দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে ও তার সামগ্রিক ব্যবসায়িক সাফল্য কতটা মিলবে—এসব বিষয়েও ধারণা পাওয়া যায় জরিপে।
ফরচুন ম্যাগাজিন নিজস্ব ট্রাস্ট ইনডেক্স বা আস্থাসূচক তৈরি করেছে। ব্যবস্থাপনার প্রতি কর্মীদের আস্থা কতটা, সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ও কোম্পানির প্রতি কর্মীদের আনুগত্য কতটা—এসব আস্থাসূচকের মাধ্যমে এসব বিষয় পরিমাপ করা হয়।
এ জরিপে কর্মীরা গোপনীয়তার সঙ্গে তাঁদের মতামত জানাতে পারেন। ৬০টি বিষয়ের ওপর ৫ পয়েন্টের ভিত্তিতে উত্তর দিতে হয়, সঙ্গে থাকে ২টি উন্মুক্ত প্রশ্ন।
কর্মীদের কাছ থেকে যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়, সেগুলো হলো নেতৃত্বের কাছে কি সহজে যাওয়া যায়, নেতৃত্ব সততা ও স্বচ্চতার সঙ্গে কথা বলেন ও কাজ করেন কি না, নেতৃত্বের কথা ও কাজে মিল আছে কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে সম্মানিত বোধ করেন কি না এবং তাঁদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কতটা। নেতৃত্ব কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানান কি না এবং কর্মীদের সুস্থতা বজায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না। এ ছাড়া কর্মীদের অবদান রাখার সুযোগ আছে কি না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়।
জরিপে কর্মীদের কাছে আরও যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয় সেগুলো হলো:বেতন, মুনাফা, পদোন্নতি, স্বীকৃতি ও সুযোগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কতটা ন্যায়সংগত;
কর্মীরা নিজেদের কাজ, কর্মদল ও প্রতিষ্ঠানের জন্য গর্ব বোধ করেন;
কাজ অর্থবহ এবং তা পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে;
সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে;
কর্মীরা নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারেন।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভিজ্ঞতার ভিন্নতা কতটা, তা–ও জরিপে পরিমাপ করা হয়। কর্মীদের অভিজ্ঞতার ধারাবাহিকতা ও গুণগত মানও মূল্যায়ন করা হয়। এভাবে প্রতিটি ধাপে কঠোর মানদণ্ড মেনে এই তালিকা করা হয় বলে জানিয়েছে ফরচুন ম্যাগাজিন।