উৎসবমুখর পরিবেশে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ
Published: 25th, September 2025 GMT
ঢাকার অদূরে সাভারে চতুর্থবারের মতো গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (গকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলে বেলা তিনটা পর্যন্ত। নির্বাচন উপলক্ষে নিরাপত্তা বাড়ানোসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সাত বছর পর ভোটের মধ্য দিয়ে তাঁদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।
গকসু নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদ ও অনুষদ সংসদ দুটি ভাগে ভোট হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সংসদের ১১টি পদে ৪৬ জন ও পাঁচটি অনুষদের মোট ১০টি পদসহ সর্বমোট ২১টি পদে ৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে সহসভাপতি (ভিপি) পদের এক প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়ের পর নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনে ভোট দেবেন ৪ হাজার ৭৬১ জন শিক্ষার্থী।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটকে শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র দেখে নিশ্চিত হওয়ার পর ক্যাম্পাসে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মীরা। একাডেমিক ভবনের মূল ফটকে নারী ও পুরুষের আলাদা সারি করে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। ওই ভবনের ১৯টি কেন্দ্রের ১৯টি বুথে ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। এসব কেন্দ্রের সামনে ভোটারদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিজুয়ানা আফরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জীবনে এটিই প্রথম ভোট। আমাদের ভোটে যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁদের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, তাঁরা যেন শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণে কার্যকর পদক্ষেপ নেন। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে আমরা ভোট দিয়েছি।’
ভোট দিতে আসা বিবিএ বিভাগের সাকিব হাসান বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে খুবই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রার্থীরাও একে অপরের সঙ্গে বেশ আন্তরিক। নির্বাচনে যাঁরা জয় পাবেন, তাঁরা শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে কাজ করবেন বলে তাঁদের প্রত্যাশা।
ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী তৃশা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একমাত্র আমাদের ইউনিভার্সিটিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। অনেকটা পাবলিক ইউনিভার্সিটির মতো নিয়ম মেনে এখানে নির্বাচন হচ্ছে। এমন সুন্দরভাবে নির্বাচন হবে, এটা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে একটু বেশি। সত্যিই খুব ভালো লাগছে।’
বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো.
রফিকুল আলম বলেন, আগামী সপ্তাহে পূজার ছুটি। যে কারণে ভোটার সংখ্যা কিছুটা কমতে পারে। সারা দিনই ভোট চলবে। বিকেলে ভোটার বেশি হলে নির্দিষ্ট সময়ের পরও কেন্দ্রে যাঁরা উপস্থিত থাকবেন, তাঁদের ভোট নেওয়া হবে। কোনো রাজনৈতিক প্রভাব নেই। আশা করছেন ভোট গ্রহণ হওয়ার পর তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হবে।
উপাচার্য মো. আবুল হোসেন বলেন, শুধু দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাচন কমিশনার ভেতরে গিয়েছেন। সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিচ্ছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শুধু গণ বিশ্ববিদ্যালয়েই ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এরপর কোভিড ছিল। এখন সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আশা করছেন, নির্বাচনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
নির্বাচনে ভিপি পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৪ জন এবং এজিএস পদে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া কোষাধ্যক্ষ পদে চারজন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে তিনজন, দপ্তর সম্পাদক পদে ছয়জন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে চারজন, সহক্রীড়া সম্পাদক পদে চারজন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে তিনজন, সহসাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে দুজন, সমাজকল্যাণ ও ক্যান্টিন সম্পাদক পদে চারজন প্রার্থী হয়েছেন।
গকসুর অনুষদ নির্বাচনে কৃষি অনুষদের কার্যনির্বাহী সদস্য পদে দুজন, ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেসে চারজন, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে চারজন, বিজ্ঞান ও প্রকৌশলী অনুষদে সাতজন, স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান অনুষদে চারজন প্রার্থী হয়েছেন। গত ১১ আগস্ট গকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন প র র থ পর ব শ করছ ন চ রজন
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাইব্যুনাল যে রায় দেবেন, সেটাই কার্যকর হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন জনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর)।
এ নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আদালত কি রায় দেয়, তার দিকে কান পেতে থাকুন। ট্রাইব্যুনাল যে রায় দেবেন, সেটাই কার্যকর হবে।’’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আদালতের রায় দেশের মানুষ মেনে নেবেন। তবু, যেকোনো বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।’’
রবিবার (১৬ নভেম্বর) বরিশাল পুলিশ লাইন্সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যে খুব ভালো তা বলব না, আবার খুব খারাপ তাও নয়; সন্তোষজনক রয়েছে।’’
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসবমুখর করতে প্রশাসন মাঠ গুছানোর কাজ করছে। ইতোমধ্যে প্রশাসনকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন উৎসবমুখর শুধু মাঠ প্রশাসনের ওপর নির্ভর করে না। এর মধ্যে নির্বাচন কমিশন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সর্বশেষ জনগণ। জনগণ যদি নির্বাচনমুখী হয় সেক্ষেত্রে কেউ তাদের থামিয়ে রাখতে পারবে না।’’
ঢাকা/পলাশ/রাজীব