ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটের খপ্পড়ে ৫৫ হাজার টাকা খোয়ালেন দুই ব্যবসায়ী
Published: 25th, September 2025 GMT
দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) পৌর ভূমি অফিসের সহকারী তহশিলদার জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট সাজিয়ে ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন করাতকল ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন ও গোলাপ হোসেন।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, গত আগস্ট মাসে সহকারী তহশিলদার জিল্লুর রহমান ফোন করে জানান যে, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ০১৯৪৮৭১০১৭৮ নম্বর থেকে এক ব্যক্তি নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে বলেন, যৌথ বাহিনী নিয়ে তাদের করাতকলে অভিযান চালানো হবে। মামলা হলে ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি জরিমানা হতে পারে। তবে, যদি তারা ৫৫ হাজার টাকা দেন, তাহলে রক্ষা পাবেন। ব্যবসায়ীরা তার দেওয়া ০১৬২৪৯৮২০৬১ বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেন। পরে সেই নাম্বারে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করতে না পেরে তারা বুঝতে পারেন যে, প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
অভিযোগকারীরা মনে করছেন, সহকারী তহশিলদার জিল্লুর রহমানের যোগসাজশেই এ কাণ্ড ঘটেছে। বিষয়টি লিখিতভাবে ইউএনওকে জানালে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
অভিযোগ বিষয়ে সহকারী তহশিলদার জিল্লুর রহমান বলেছেন, আমাকে একজন ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে ফোন দিয়ে করাতকল ব্যবসায়ীদের নাম্বার চেয়েছিলেন। আমি সরল বিশ্বাসে নাম্বারগুলো দিয়েছি এবং ব্যবসায়ীদেরও জানিয়েছি। এটা আমার ভুল হয়েছে।
হাকিমপুরের (হিলি) সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.
হাকিমপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেছেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/মোসলেম/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য় সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।
অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’
স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।
এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া