বর্তমানে দেশে জঙ্গিবাদ নেই: নবনিযুক্ত এটিইউ প্রধান
Published: 25th, September 2025 GMT
জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার ও পরে দেশে ফেরা ১০ জনের বিষয়ে পুলিশের অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) অতিরিক্তি মহাপরিদর্শক মো. রেজাউল করিম বলেছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছেন, তাঁরা ও রকম ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বারিধারার কূটনৈতিক পাড়ায় এটিইউর সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এক প্রশ্নের জবাবে নবনিযুক্ত এটিইউ প্রধান রেজাউল করিম এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেককে আমরা আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সবাই শ্রমিকশ্রেণির মানুষ। জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জেনেছি, তারা কেউ ওই রকমভাবে জড়িত ছিল না। তারা মনে করেছিল, দুস্থ ও অসহায় মানুষজনকে সহযোগিতা করতে হবে। সেই জন্য মালয়েশিয়ার সরকারও তাদের ক্লিয়ার করে দিয়েছে। তবে এর পেছনে কেউ জড়িত কি না, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চলমান।’
প্রশ্নের জবাবে এটিইউ প্রধান রেজাউল করিম বলেন, ‘বর্তমানে দেশে জঙ্গিবাদ নেই। তবে ভবিষ্যতে কেউ জঙ্গিবাদে জড়াবেন না—এর নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। তাই থেমে থাকার সুযোগ নেই, আরও গুরুত্বসহকারে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।’
বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয়, সহনশীল মুসলিম দেশ, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী বলে উল্লেখ করেন পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল করিম। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ, মাদক এবং বিশেষ করে যুবকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অনলাইন ও সাইবার অপরাধ থেকে দেশকে মুক্ত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
রেজাউল করিম বলেন, দেশের মাটি ও মানুষ সবার। তাই এসব সমস্যা মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে বিশেষায়িত ইউনিটের ভূমিকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি জনসাধারণের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সাধারণ মানুষকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে ‘ইনফোমেট’ অ্যাপ এবং একটি যোগাযোগ নম্বর চালু করা হয়েছে, যেখানে তথ্যদাতার গোপনীয়তা সর্বোচ্চ গুরুত্বে রাখা হবে।
রেজাউল করিম বলেন, একটিমাত্র সন্ত্রাসী ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। স্বল্পশিক্ষিত ও বিভ্রান্ত মানুষ কীভাবে ভুল আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়, ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার উদাহরণ দিয়ে তিনি তা ব্যাখ্যা করেন। তাঁর ভাষ্যে, সব ধর্মই শান্তির শিক্ষা দেয়, কোনো ধর্মই উগ্রবাদ বা সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করে না। এ প্রেক্ষাপটে গণমাধ্যমকে সঠিক বার্তা প্রচার এবং ধর্মকে অপব্যবহারকারী বিভিন্ন গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করার আহ্বান জানান তিনি।
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এটিইউর অতিরিক্ত আইজিপি রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাসী নয়। তবে কখনো কখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে বা ভেজাল কোনো ব্যক্তির খপ্পরে পড়ে কিংবা দেশি-বিদেশি চক্রান্তে পড়ে কেউ কেউ বিচ্যুত হতে পারেন। এই আশঙ্কা তো থেকেই যায়। সে কারণে এসব বিষয়কে আমরা নজরদারিতে রাখব, যাতে ভবিষ্যতে কোনো ধরনের সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের সৃষ্টি না হতে পারে। আগামীতে যাতে কোনোভাবেই কোনো সন্ত্রাস–উগ্রবাদ জন্ম না নিতে পারে, সেই জায়গায় অবশ্যই আমরা জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করব।’
বর্তমান সরকার বলছে, বিগত সরকারের আমলে জঙ্গি দমনের নামে নাটক হতো। এটিইউর অনেক কর্মকর্তা পলাতক। এসব কারণে দেশে জঙ্গিবাদ বর্তমানে আসলেই আছে কি না, প্রশ্ন করা হলে অতিরিক্ত আইজিপি রেজাউল করিম বলেন, ‘পেছনে কী হয়েছে না হয়েছে, আপনারাও (সাংবাদিক) জানেন, আমরাও জানি। আমরা বলতে চাচ্ছি, সত্য সত্যই আর মিথ্যা মিথ্যাই। সেই জায়গায় আমরা অবিচল থাকব। কেউ অপরাধ করে থাকলে সেই অপরাধের কোনো ছাড় নেই। আমরা জঙ্গিবাদ নিয়ে দেশে এ রকম কিছু এখনো দেখিনি। কেউ যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিপথে চলে যায়, সে জায়গায় আমাদের কাজ করার সুযোগ আছে। সেটাই আমরা নজরদারি করব কেউ হঠাৎ করে বিপথগামী হয়ে যাচ্ছে কি না। পেছনে না গিয়ে আমরা ভবিষ্যতের দিকে এগোতে চাই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সন ত র স
এছাড়াও পড়ুন:
‘এটা তো চাপের খেলা’—বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারত কোচ
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ, উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এবারের লড়াইটা ভারতের জন্য বাড়তি চাপেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর হামজা-শমিতে উজ্জীবিত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে হয়তো কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হবে সফরকারীদের। আজ ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কোচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তেমনটাই।
আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। তার আগে আজ একটি হোটেলে ভারতীয় দলের কোচ খালিদ জামিল বলেন, ‘এটা তো চাপের খেলা’।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলেরই বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ভারত ম্যাচ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। যার বড় প্রমাণ অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ৬ মিনিটের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাওয়া।
এর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলাটা যে সব সময়ই কঠিন, সেই বাস্তবতা জানেন জামিলও। তাঁর দলের ওপর চাপ আছে কি না প্রশ্নে ভারত কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, চাপ আছে। আমাদের তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি একটি চাপের ম্যাচ। তবে সে জন্য আমাদের একটি ইতিবাচক ফলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে দুই দলের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল, যার মধ্যে দুটি করেছেন বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে।
ভারত কোচ অবশ্য একক কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কে বিবেচনায় নিচ্ছি না। বাংলাদেশ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। এটা খুব সিরিয়াস গেম।’
১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৬টিতে, বাংলাদেশ ২টিতে। ড্র বাকি ১৪টি (২০০৩ সাফে বাংলাদেশের গোল্ডেন গোলে জয়ের ম্যাচসহ)।