Prothomalo:
2025-11-17@08:32:16 GMT

বাড়াতে হবে ভোজ্যতেলের উৎপাদন

Published: 26th, September 2025 GMT

দেশে বছরে প্রায় ২৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ভোজ্যতেল আমদানি করা হয়। অথচ ভোজ্যতেলের উচ্চ চাহিদা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয়ভাবে তেলবীজ (যে বীজ থেকে তেল হয়) উৎপাদনের পরিমাণ খুবই কম। বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করতে হলে দেশে তেলবীজের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সঠিক বীজ, প্রযুক্তি ও নীতিসহায়তা। অন্যদিকে ভোক্তারাও শুধু এক ধরণের তেল না খেয়ে কয়েক ধরনের তেল খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের স্বয়ংসম্পূর্ণতার পথ অন্বেষণ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথাগুলো জানান বিশেষজ্ঞ ও খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। গোলটেবিল বৈঠকটি যৌথভাবে আয়োজন করে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া ও প্রথম আলো। সহযোগিতা করেছে ঢাকার নেদারল্যান্ডস দূতাবাস।

গোলটেবিল সভায় বক্তারা জানান, দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশই আমদানি করা হয়, পরিমাণে তা প্রায় ৩০ লাখ টন। এর মধ্যে ১৫ লাখ টন পাম তেল ও ১০ লাখ টন সয়াবিন তেল। ২০৩০ সালের মধ্যে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়ে ৩৫ লাখ টন হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ থাকলেও সম্মিলিত প্রচেষ্টার অভাব রয়েছে।

সভায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো.

আবদুল মুঈদ বলেন, ধান চাষকে কৃষকেরা সব সময়েই অগ্রাধিকার দেবেন। কিন্তু বোরো ও আমনের মধ্যবর্তী সময়ে পতিত জমিতে উচ্চফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদি শর্ষে বা সয়াবিন চাষ করা যায়। বর্তমানে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীতে যেভাবে সয়াবিন চাষ হচ্ছে, সেভাবে সারা দেশেই চাষ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

দেশে শর্ষে দানা প্রক্রিয়াজাতের সময় ভালো যন্ত্র ব্যবহার করলে তেলের উৎপাদন আরও ১০ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, অনেক সময় বাজারে শর্ষের দাম পড়ে যায়। তাই ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে তেল কেনা হলে কৃষকেরা উপকৃত হবেন। শর্ষের তেলের পাশাপাশি সয়াবিন, সূর্যমুখী ও কুঁড়ার তেলেরও ভালো বাজারের সম্ভাবনা রয়েছে, যা কাজে লাগানো প্রয়োজন।

গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ বলেন, কৃষকদের জোর করে কোনো কিছু ধরিয়ে দেওয়া যাবে না। তেলবীজের উৎপাদন বাড়াতে, বিশেষ করে জমি ও উপযোগী বীজ বাছাই, সেচ প্রভৃতি বিষয়ে কৃষকদের নির্দেশনা দিতে হবে। অন্যদিকে ফসল সংরক্ষণের জন্য গুদামের ব্যবস্থা করা ও আধুনিক যন্ত্রে তা প্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা করতে হবে।

দেশে ভোজ্যতেলের স্বয়ংসম্পূর্ণতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক। তাদের সহায়তা করছে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দ্য হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি)। তারা সারা দেশে ৭০ হাজারের বেশি কৃষককে জলবায়ু-সহনশীল কৃষি পদ্ধতি ব্যবহারে প্রশিক্ষিত করেছে। সরবরাহ করছে উন্নত মানের তেলবীজ।

এ প্রসঙ্গে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান বলেন, ‘দেশেই ভোজ্যতেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে আমরা করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও কৃষকদের নিয়ে একটি টেকসই ব্যবসা মডেল তৈরি করতে পেরেছি। তবে বিভিন্ন এলাকা ও মৌসুমভেদে উন্নত প্রজাতির বীজ উদ্ভাবন ও বীজের সুরক্ষা জরুরি। এ জন্য আমাদের একটা উপযুক্ত বীজনীতি থাকা উচিত।’

এইচএসবিসির সাসটেইনেবিলিটি বিভাগের প্রধান সৈয়দা আফজালুন নেসা বলেন, ‘যেসব ফসল মাটি ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য ভালো, সেগুলোর বিস্তার বাড়াতে আমরা সহযোগিতা করে থাকি। আমরা চাই এসব ফসল চাষের মাধ্যমে কৃষকেরা নিজেরাই যেন টেকসই ও লাভজনক ফসল উৎপাদনে যেতে পারেন।’

স্থানীয় পর্যায়ে সয়াবিন বা শর্ষে চাষ বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভালো বীজের সংকটকে বড় সমস্যা বলে মনে করছেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল করিম। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে বীজ কোম্পানিগুলো এগিয়ে আসতে পারে। বিশেষ করে কৃষকের মাঝে কম তাপ ও লবণসহনীয় বীজ সরবরাহ করা গেলে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপক রীনা রানী পাল বলেন, বর্তমানে দেশে একজন মানুষ খাবার হিসেবে দৈনিক গড়ে ৩১ গ্রাম তেল গ্রহণ করেন। এর বেশির ভাগই মূলত সয়াবিন তেল। তবে রান্নায় শুধু এক ধরনের তেল ব্যবহার না করে একাধিক ধরনের তেল খেলে সেটি শরীরের জন্য বেশি নিরাপদ ও পুষ্টিকর হয়।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক অ্যান্ড প্ল্যান্ট ব্রিডিং বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম আরিফ হাসান জানান, ভোজ্যতেলে শতভাগ স্বয়ংসম্পূর্ণতা বাড়ানো সম্ভব নয়, তবে অবশ্যই উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। তিনি বলেন, বীজের বৈচিত্র্য বাড়ানো ও সেগুলো কৃষক পর্যন্ত পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা রয়েছে।

গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে দেশে শর্ষে চাষের জমির পরিমাণ চার গুণ বেড়েছে বলে সভায় জানান শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনটোমলজি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, শর্ষের মতো সয়াবিন চাষও আশার আলো দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও নীতিসহায়তা দিয়ে এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার অ্যাগ্রিকালচারের (বিনা) গবেষণা পরিচালক মো. হোসেন আলী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন আবহাওয়ায় ও জমিতে চাষ উপযোগী বীজ নিয়ে কাজ করছি। এ ধরনের কিছু প্রজাতি কৃষকের কাছে পৌঁছানো গেলে সেটি ফলনে প্রভাব ফেলবে। এ জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।’

গোলটেবিল সভায় আরও বক্তব্য দেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন আবদুল বাসেত মিয়া, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এ মান্নান, সুপারশপ ইউনিমার্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) গাজী মাহফুজুর রহমান, নারিশ ফুডের উপমহাব্যবস্থাপক (পণ্য উন্নয়ন) মোহাম্মদ ফসিউল আলম ভূঁইয়া, চেঞ্জ মেকার ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক সৈয়দ তামজিদুর রহমান, ফৌজিয়া ফুডসের স্বত্বাধিকারী আফরোজা সুলতানা ও নোয়াখালীর সুবর্ণচরের সয়াবিনচাষি মো. নিজাম উদ্দিন জাহাঙ্গীর।

সভার শুরুতে ভোজ্যতেল নিয়ে ধারণাপত্র উপস্থাপনা করেন সলিডারিডাড নেটওয়ার্কের প্রাইভেট সেক্টর এনগেজমেন্টের হেড অব সাপ্লাই চেইন মো. মুজিবুল হক।

গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহকারী সম্পাদক ফিরোজ চৌধুরী।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ জ যত ল র ব যবস থ ল খ টন র জন য ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের সেরা কর্মস্থল হিলটন হোটেল, সেরা তালিকায় আছে মেটলাইফ

আধুনিক মানুষের দিনের বড় একটা সময় যায় কর্মস্থলে। ফলে সেই কর্মস্থলের পরিবেশ কেমন, কর্তৃপক্ষ কর্মীদের কথা কতটা ভাবছে—এ সবকিছু এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে।

সম্মান, নিরাপত্তা, উন্নতির সুযোগ ও কাজের অর্থবহতা আছে—মানুষ সাধারণত এমন কর্মস্থলই চায়। এসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে ফরচুন ম্যাগাজিন বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। তারা মূলত বিশ্বের সেরা ২৫ কর্মস্থলের তালিকা করে। সেই তালিকায় সবার ওপরে আছে হিলটন হোটেল। মূলত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে নিয়ে এই জরিপ ও তালিকা করা হয়েছে।

এবারের তালিকায় ২৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি যুক্তরাষ্ট্রের। অন্যগুলো বিভিন্ন দেশের, মূলত ইউরোপের। কোম্পানিগুলোর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে—২৫টি কোম্পানির মধ্যে ৮টি এই খাতের। এ ছাড়া নির্মাণ, জৈব ওষুধ, উৎপাদন, কুরিয়ার, আর্থিক ও পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানিগুলোও তালিকায় আছে।

সেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি কোম্পানি হলো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জীবনবিমা কোম্পানি মেটলাইফ। ২০২৫ সালে দশম স্থান অর্জন করে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক স্বীকৃতি ধরে রাখল কোম্পানিটি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টি দেশে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম রয়েছে।

৯০ লাখের বেশি উত্তরের ওপর ভিত্তি করে ফরচুনের সেরা ২৫টি কর্মক্ষেত্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী আড়াই কোটি কর্মীর কাজের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরা হয়েছে।

এ বিষয়ে মেটলাইফের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মিশেল খালাফ বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকায় স্থান পাওয়া কর্মীদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগের প্রমাণ।’

কারা আছে তালিকায়

দেখে নেওয়া যাক এবারের তালিকায় কোন কোন দেশের কোম্পানি আছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে কুরিয়ার ও যাতায়াত খাতের কোম্পানি ডিএইচএল। তৃতীয় স্থানে আছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সিসকো। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রে। চতুর্থ স্থানে আছে পেশাদার সেবা দেওয়া আইরিশ কোম্পানি অ্যাক্সেনচিউর, পঞ্চম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিশ্বখ্যাত হোটেল ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল। ষষ্ঠ স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি অ্যাব ভিয়ে, সপ্তম স্থানে আছে ফ্রান্সের পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানি টিপি। অষ্টম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনভিত্তিক কোম্পানি স্ট্রাইকার, নবম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি সেলস ফোর্স।

দশম স্থানে আছে মার্কিন বিমা কোম্পানি মেটলাইফ, ১১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সার্ভিস নাউ। ১২তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতা কোম্পানি স্পেকসেভার্স। ১৩তম স্থানে আছে জার্মানির স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি সিমেন্স হেলদিনেস; ১৪তম স্থানে আছে আইরিশ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এক্সপেরিয়েন। ১৫তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এনভিডিয়া, ১৬তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি কেডেন্স। ১৭তম স্থানে আছে জার্মানির বিমা ও আর্থিক কোম্পানি আলিয়াঞ্জ এবং ১৮তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের কোম্পানি ডাও।

১৯ থেকে ২১তম স্থানে আছে তিনটি মার্কিন কোম্পানি। ১৯তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি ভিয়াট্রিস, ২০তম স্থানে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাডোবি, ২১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ক্রাউডস্ট্রাইক।

২২ ও ২৩তম স্থানেও আছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি কোম্পানি—উৎপাদন খাতের এসসি জনসন ও খুচরা বিক্রয় খাতের ট্রেক বাইসাইকেল। ২৪তম স্থানে আছে লিচেনস্টাইনের নির্মাণ কোম্পানি হিলতি ও ২৫তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের বিমা ও আর্থিক খাতের কোম্পানি অ্যাডমিরাল গ্রুপ।

কীভাবে এই মূল্যায়ন

৩০ বছর ধরে এই জরিপ পরিচালনা করছে ফরচুন ম্যাগাজিন। সারা বিশ্বের কর্মীদের কাছ থেকে তারা জানতে চায়, কর্মস্থলে তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন। এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তারা কিছু মানদণ্ড তৈরি করে। সেই মানদণ্ডের ভিত্তিতে বোঝা যায়, কোনো কর্মস্থল প্রকৃত অর্থেই ‘দারুণ’ কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা সে প্রতিষ্ঠানে থাকতে চান কি না, প্রতিষ্ঠান কত দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে ও তার সামগ্রিক ব্যবসায়িক সাফল্য কতটা মিলবে—এসব বিষয়েও ধারণা পাওয়া যায় জরিপে।

ফরচুন ম্যাগাজিন নিজস্ব ট্রাস্ট ইনডেক্স বা আস্থাসূচক তৈরি করেছে। ব্যবস্থাপনার প্রতি কর্মীদের আস্থা কতটা, সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ও কোম্পানির প্রতি কর্মীদের আনুগত্য কতটা—এসব আস্থাসূচকের মাধ্যমে এসব বিষয় পরিমাপ করা হয়।

এ জরিপে কর্মীরা গোপনীয়তার সঙ্গে তাঁদের মতামত জানাতে পারেন। ৬০টি বিষয়ের ওপর ৫ পয়েন্টের ভিত্তিতে উত্তর দিতে হয়, সঙ্গে থাকে ২টি উন্মুক্ত প্রশ্ন।

কর্মীদের কাছ থেকে যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়, সেগুলো হলো নেতৃত্বের কাছে কি সহজে যাওয়া যায়, নেতৃত্ব সততা ও স্বচ্চতার সঙ্গে কথা বলেন ও কাজ করেন কি না, নেতৃত্বের কথা ও কাজে মিল আছে কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে সম্মানিত বোধ করেন কি না এবং তাঁদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কতটা। নেতৃত্ব কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানান কি না এবং কর্মীদের সুস্থতা বজায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না। এ ছাড়া কর্মীদের অবদান রাখার সুযোগ আছে কি না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়।

জরিপে কর্মীদের কাছে আরও যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয় সেগুলো হলো:

বেতন, মুনাফা, পদোন্নতি, স্বীকৃতি ও সুযোগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কতটা ন্যায়সংগত;

কর্মীরা নিজেদের কাজ, কর্মদল ও প্রতিষ্ঠানের জন্য গর্ব বোধ করেন;

কাজ অর্থবহ এবং তা পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে;

সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে;

কর্মীরা নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারেন।

প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভিজ্ঞতার ভিন্নতা কতটা, তা–ও জরিপে পরিমাপ করা হয়। কর্মীদের অভিজ্ঞতার ধারাবাহিকতা ও গুণগত মানও মূল্যায়ন করা হয়। এভাবে প্রতিটি ধাপে কঠোর মানদণ্ড মেনে এই তালিকা করা হয় বলে জানিয়েছে ফরচুন ম্যাগাজিন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ