বাংলা ও বাঙালি আন্দোলনপ্রিয় জাতি। আন্দোলনের ঠেলায় ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল নয়াদিল্লি, যা সুলতানি ও মোগল আমলের রাজধানীর লাগোয়া। তখন থেকেই বাংলার পতনের শুরু। তখনই একদার সবচেয়ে সমৃদ্ধ অর্থনীতির অঞ্চল হয়ে পড়ে ঘাটতির এলাকা।

১৯৪৭ সালে বাংলা ভাগ হলেও আন্দোলনের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। আমরা পূর্ববঙ্গ ও পূর্ব পাকিস্তান পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছি। তবে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির আসর থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি। আমরা জানি, সেখানে দল ভাঙলে এখানেও ভাঙে। পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে অনেক তত্ত্ব পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে আসত। অনেক সময় ওদের লিফলেটগুলো গুটি কয়েক শব্দ অদলবদল করে আমরা হুবহু ছাপিয়ে দিতাম। সত্তরের দশকের পরে তাতে ভাটা পড়েছে।

আরও পড়ুনপুলিশ সংস্কার কি আদৌ হবে, কতটুকু হবে২৯ মার্চ ২০২৫

আন্দোলন মানেই রাস্তা আটকে মিছিল, ভাঙচুর, মারামারি। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার দায় পুলিশের। তো পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের হাতাহাতি-মারামারি হয়। ছোড়া হয় ইটপাটকেল। পুলিশ তো পিটুনিতে প্রশিক্ষণ পাওয়া বাহিনী। তারা চড়াও হয়। আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এটা নৈমিত্তিক দৃশ্য।

পুলিশকে লক্ষ করে কলকাতার আন্দোলনকারীরা একটা স্লোগান তৈরি করে। সেটি বেশ জনপ্রিয় হয়। সবার মুখে মুখে স্লোগান ছিল, ‘পুলিশ তুমি যতই মারো, মাইনে তোমার এক শ বারো’।

সেই স্লোগান কলকাতা থেকে সীমানা পেরিয়ে চলে এসেছে ঢাকায়। কয়েক বছর আগে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মুখে এ স্লোগান শোনা গেছে। সেই সঙ্গে ছিল পুলিশকে নিয়ে খিস্তি। স্লোগানেরও ‘শানে নজুল’ থাকে। এই স্লোগানের অর্থ হলো আমাদের যতই পেটাও, তোমাদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না। তোমার বেতন তো বাড়বে না। তোমার লাঠি-বন্দুকের ওপর ভর করে রাজনীতির সিন্ডিকেটগুলো একের পর এক দেশের দখল নেবে। তুমি যা আছ, তা-ই থাকবে। এর পেছনে একটা বার্তা হলো ‘পুলিশ, তুমি সরকারের লাঠিয়াল হয়ো না।’

চব্বিশের জুলাইয়ে লাঠিয়াল পুলিশ আসমান ফুঁড়ে আসেনি। পাঁচ দশক ধরেই দেখা গেছে এ দৃশ্য। যে পুলিশ সাদেক হোসেন খোকাকে রক্তাক্ত করেছে, সেই একই পুলিশ মতিয়া চৌধুরীকে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছে। যখন যে ক্ষমতায়, পুলিশকে তারা লাঠিয়ালের মতো ব্যবহার করেছে। এ অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি পাব কীভাবে?

দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মূল বাহন কিংবা যন্ত্র হচ্ছে পুলিশ। জন্মাবধি আমরা দেখে এসেছি, পুলিশ মানুষকে পেটায়। একটি প্রবাদবাক্য আছে—বাঘে ছুঁলে আঠারো ঘা। যার অর্থ হলো কোনো দুষ্ট বা বিপজ্জনক ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বা তার দ্বারা সামান্য ক্ষতি হলেও আখেরে অনেক বেশি ক্ষতি বা ঝামেলা হয়। বাঘের আঘাতে যেমন একটি ক্ষত থেকে আঠারোটি ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে, তেমনি একজন খারাপ লোকের সামান্য আচরণেও অনেক বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

এর সঙ্গে আরেকটি বচন জুড়ে দেওয়া হয়েছে—পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ ঘা। তার মানে একবার পুলিশের খপ্পরে পড়লে আজীবন ভুগতে হয়। কোনো দুষ্ট লোকের দ্বারা আক্রান্ত হলেও ভুক্তভোগী মামলা করেন না। মামলা করলে তো ফরিয়াদির ভোগান্তি বেশি। তাঁকে বারবার আদালতে হাজিরা দিতে হয়। মামলা আর শেষ হয় না। উকিলের খরচ জোগাতে জোগাতে শেষে জমিজমা, ঘটিবাটি বেচে একসময় সর্বস্বান্ত হতে হয়।

একটা কথা চালু আছে। এ রকম গোটা দশেক মামলা নেড়েচেড়েই উকিলেরা জীবন পার করে দেন। সে জন্য মানুষ পারতপক্ষে থানা-পুলিশের কাছে যায় না। মানুষের মধ্যে একটা পারসেপশন আছে, পুলিশ, উকিল আর আদালত মিলেঝুলে এমন একটা ব্যবস্থা কায়েম করেছে যে ন্যায়বিচার গেছে পুরোপুরি নির্বাসনে। মানুষ এমন কৌতুকও করে—মারামারিতে দশজন মানুষ ও দুজন পুলিশ আহত হয়েছে। পুলিশ কি মানুষ না? তাহলে কেন এমন ধারণা তৈরি হলো? এটি তো এক দিনে হয়নি।

চব্বিশের জুলাইয়ে লাঠিয়াল পুলিশ আসমান ফুঁড়ে আসেনি। পাঁচ দশক ধরেই দেখা গেছে এ দৃশ্য।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এভাবে লুচি বানালে ফুলবেই ফুলবে, জেনে নিন রেসিপি

উপকরণ

ময়দা: ২ চামচ

আটা: দেড় চামচ

চিনি: ১ চা-চামচ

ঘি: ১ চা-চামচ

তেল: ১ চা-চামচ।

প্রণালি

সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। একটু গরম পানি দিয়ে ময়ান বানাতে হবে। ময়ান পাঁচ মিনিটের মতো মেখে রাখুন। তারপর লুচি বেলে ডুবোতেলে ভেজে নিতে হবে।

আরও পড়ুনপূজায় অপু বিশ্বাসের প্রিয় খাবার মহাষ্টমীর ভোগের থালা, দেখুন তাঁর দেওয়া রেসিপি৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ