বাবার ঠোঁটে মেয়ের চুমু: বিতর্কিত সেই ছবি নিয়ে মুখ খুললেন মহেশ ভাট
Published: 26th, September 2025 GMT
বলিউড অভিনেত্রী-নির্মাতা পূজা ভাট। তার আরেক পরিচয় তিনি নির্মাতা মহেশ ভাটের কন্যা। নব্বই দশকে পূজার ক্যারিয়ার যখন মধ্যগগনে, তখন তুমুল বিতর্কে জড়িয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। ফিল্ম ফেয়ার ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে মহেশ ভাটের সঙ্গে পূজার চুমুর ছবি প্রকাশের পর এই বিতর্কের জন্ম হয়। বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন তারা।
সেই সময়ে সংবাদ সম্মেলন করে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন পূজা। বরং হিতে বিপরীত হয়। কারণ মহেশ ভাট বলে বসেছিলেন, “পূজা যদি আমার মেয়ে না হতো, তাহলে আমি ওকেই বিয়ে করতাম।”
আরো পড়ুন:
অভিনেতা হবে কুকুরের মতো, পূজা ভাটের নির্যাতন প্রসঙ্গে মুজাম্মেল
বাবার ঠোঁটে মেয়ের চুমু: সেই বিতর্কিত ছবি নিয়ে ফের মুখ খুললেন পূজা
পরিচালক মহেশ ভাটের এই মন্তব্য আগুণে ঘি ঢালার কাজ করেছিল। নিন্দার রোষানলে পড়েছিলেন পূজা মহেশ ভাট ও পূজা। পুরোনো সেই বিষয় নিয়ে ইন্ডিয়া টুডের সঙ্গে কথা বলেছেন মহেশ ভাট।
এ আলাপচারিতায় মহেশ ভাটের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই বিতর্ক তার মেয়ে পূজা ভাটের সঙ্গে তার সম্পর্ক দুর্বল করেছিল কি না, না কি আরো মজবুত করেছিল? এ প্রশ্নের জবাবে মহেশ ভাট খোলাখুলি উত্তর দেন। তবে এক ধরনের দার্শনিকতা ও খাঁটি সততার মিশেলে। মহেশ ভাট বলেন, “আপনি যদি রোদে দাঁড়ান, তবে রোদে পুড়বেনই। যুগে যুগে যারা আলোয় থেকেছেন, তাদেরকেই এই ধরনের কষ্টকর সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আর এ রকম দুঃসময়ই আপনার ভেতরের সোনাকে বাইরে এনে দেয়। আগুন আপনার উপকার করে। এটি একটি অরণ্যের দাবানলের মতো, যা চন্দনগাছ পুড়িয়ে দিলে গোটা জঙ্গলটাই সুবাসে ভরে যায়।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে মহেশ ভাট বলেন, “তাই আমি বলব, এটা সেই রকমই। জঙ্গলে যখন আগুন লাগে আর চন্দন গাছ জ্বলে ওঠে, তখন গোটা জঙ্গলটা তার গন্ধে ভরে যায়। তেমনি, আপনি যখন খুবই কষ্টের ভেতর দিয়ে যাবেন, তখন বুঝতে পারবেন আপনি আরো বিজয়ী হয়ে বেরিয়ে এসেছেন, আরো পরিস্কার, বিনয়ী ও মাটির কাছাকাছি।”
২০২৩ সালে একই বিষয় নিয়ে মুখ খুলেছিলেন পূজা ভাট। সিদ্ধার্থ কান্নানকে সাক্ষাৎকার দেন এই অভিনেত্রী। এ সময় পূজাকে প্রশ্ন করা হয়, সেই চুমুর ছবি নিয়ে অনুশোচনা হয় কি না? জবাবে পূজা বলেছিলেন—“না। কারণ আমি এটিকে খুব স্বাভাবিকভাবে দেখি। দুর্ভাগ্যবশত, এটি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রায়ই দেখবেন, আপনার সন্তান বলছে, মাম্মি-পাপা, আমাকে একটি চুমু দাও। এই বয়সেও আমি আমার বাবার কাছে ১০ পাউন্ডের একটি শিশু। আমার বাবা আমার কাছে এমনই থাকবেন।”
চুমুর ছবির ভিন্ন অর্থ দাঁড় করিয়েছিলেন মানুষ। তা উল্লেখ করে পূজা ভাট বলেছিলেন, “এটি এমন একটি মুহূর্ত ছিল, যা একেবারেই নিষ্পাপ। বিষয় যাই হোক না কেন, মানুষ সেটাকে নিজের মতো পড়বেন, নিজের মতো অর্থ দাঁড় করাবেন। এটা তো আমি বন্ধ করতে পারব না। আপনি যদি বাবা-মেয়ের সম্পর্ককে অন্য দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন তাহলে আপনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবেন। তারপরও আমরা পারিবারিক মূল্যবোধ নিয়ে কথা বলি।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র আল য় ভ ট ব তর ক ভ ট বল
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের সেরা কর্মস্থল হিলটন হোটেল, সেরা তালিকায় আছে মেটলাইফ
আধুনিক মানুষের দিনের বড় একটা সময় যায় কর্মস্থলে। ফলে সেই কর্মস্থলের পরিবেশ কেমন, কর্তৃপক্ষ কর্মীদের কথা কতটা ভাবছে—এ সবকিছু এখন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে।
সম্মান, নিরাপত্তা, উন্নতির সুযোগ ও কাজের অর্থবহতা আছে—মানুষ সাধারণত এমন কর্মস্থলই চায়। এসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে ফরচুন ম্যাগাজিন বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকা প্রকাশ করে থাকে। তারা মূলত বিশ্বের সেরা ২৫ কর্মস্থলের তালিকা করে। সেই তালিকায় সবার ওপরে আছে হিলটন হোটেল। মূলত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে নিয়ে এই জরিপ ও তালিকা করা হয়েছে।
এবারের তালিকায় ২৫টি কোম্পানির মধ্যে ১৬টি যুক্তরাষ্ট্রের। অন্যগুলো বিভিন্ন দেশের, মূলত ইউরোপের। কোম্পানিগুলোর মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রাধান্য দেখা যাচ্ছে—২৫টি কোম্পানির মধ্যে ৮টি এই খাতের। এ ছাড়া নির্মাণ, জৈব ওষুধ, উৎপাদন, কুরিয়ার, আর্থিক ও পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানিগুলোও তালিকায় আছে।
সেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি কোম্পানি হলো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জীবনবিমা কোম্পানি মেটলাইফ। ২০২৫ সালে দশম স্থান অর্জন করে টানা দ্বিতীয় বছরের মতো এই মর্যাদাপূর্ণ বৈশ্বিক স্বীকৃতি ধরে রাখল কোম্পানিটি। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টি দেশে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম রয়েছে।
৯০ লাখের বেশি উত্তরের ওপর ভিত্তি করে ফরচুনের সেরা ২৫টি কর্মক্ষেত্রের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী আড়াই কোটি কর্মীর কাজের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরা হয়েছে।
এ বিষয়ে মেটলাইফের প্রেসিডেন্ট ও সিইও মিশেল খালাফ বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় বছরের মতো বিশ্বের সেরা কর্মস্থলের তালিকায় স্থান পাওয়া কর্মীদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগের প্রমাণ।’
কারা আছে তালিকায়দেখে নেওয়া যাক এবারের তালিকায় কোন কোন দেশের কোম্পানি আছে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে কুরিয়ার ও যাতায়াত খাতের কোম্পানি ডিএইচএল। তৃতীয় স্থানে আছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সিসকো। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রে। চতুর্থ স্থানে আছে পেশাদার সেবা দেওয়া আইরিশ কোম্পানি অ্যাক্সেনচিউর, পঞ্চম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের আরেক বিশ্বখ্যাত হোটেল ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল। ষষ্ঠ স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি অ্যাব ভিয়ে, সপ্তম স্থানে আছে ফ্রান্সের পেশাদার সেবা দেওয়া কোম্পানি টিপি। অষ্টম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনভিত্তিক কোম্পানি স্ট্রাইকার, নবম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি সেলস ফোর্স।
দশম স্থানে আছে মার্কিন বিমা কোম্পানি মেটলাইফ, ১১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানি সার্ভিস নাউ। ১২তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের খুচরা বিক্রেতা কোম্পানি স্পেকসেভার্স। ১৩তম স্থানে আছে জার্মানির স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি সিমেন্স হেলদিনেস; ১৪তম স্থানে আছে আইরিশ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এক্সপেরিয়েন। ১৫তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি এনভিডিয়া, ১৬তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি কেডেন্স। ১৭তম স্থানে আছে জার্মানির বিমা ও আর্থিক কোম্পানি আলিয়াঞ্জ এবং ১৮তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের কোম্পানি ডাও।
১৯ থেকে ২১তম স্থানে আছে তিনটি মার্কিন কোম্পানি। ১৯তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের জৈব ওষুধ কোম্পানি ভিয়াট্রিস, ২০তম স্থানে তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাডোবি, ২১তম স্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ক্রাউডস্ট্রাইক।
২২ ও ২৩তম স্থানেও আছে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি কোম্পানি—উৎপাদন খাতের এসসি জনসন ও খুচরা বিক্রয় খাতের ট্রেক বাইসাইকেল। ২৪তম স্থানে আছে লিচেনস্টাইনের নির্মাণ কোম্পানি হিলতি ও ২৫তম স্থানে আছে যুক্তরাজ্যের বিমা ও আর্থিক খাতের কোম্পানি অ্যাডমিরাল গ্রুপ।
কীভাবে এই মূল্যায়ন৩০ বছর ধরে এই জরিপ পরিচালনা করছে ফরচুন ম্যাগাজিন। সারা বিশ্বের কর্মীদের কাছ থেকে তারা জানতে চায়, কর্মস্থলে তাঁদের অভিজ্ঞতা কেমন। এই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তারা কিছু মানদণ্ড তৈরি করে। সেই মানদণ্ডের ভিত্তিতে বোঝা যায়, কোনো কর্মস্থল প্রকৃত অর্থেই ‘দারুণ’ কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা সে প্রতিষ্ঠানে থাকতে চান কি না, প্রতিষ্ঠান কত দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে ও তার সামগ্রিক ব্যবসায়িক সাফল্য কতটা মিলবে—এসব বিষয়েও ধারণা পাওয়া যায় জরিপে।
ফরচুন ম্যাগাজিন নিজস্ব ট্রাস্ট ইনডেক্স বা আস্থাসূচক তৈরি করেছে। ব্যবস্থাপনার প্রতি কর্মীদের আস্থা কতটা, সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন ও কোম্পানির প্রতি কর্মীদের আনুগত্য কতটা—এসব আস্থাসূচকের মাধ্যমে এসব বিষয় পরিমাপ করা হয়।
এ জরিপে কর্মীরা গোপনীয়তার সঙ্গে তাঁদের মতামত জানাতে পারেন। ৬০টি বিষয়ের ওপর ৫ পয়েন্টের ভিত্তিতে উত্তর দিতে হয়, সঙ্গে থাকে ২টি উন্মুক্ত প্রশ্ন।
কর্মীদের কাছ থেকে যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়, সেগুলো হলো নেতৃত্বের কাছে কি সহজে যাওয়া যায়, নেতৃত্ব সততা ও স্বচ্চতার সঙ্গে কথা বলেন ও কাজ করেন কি না, নেতৃত্বের কথা ও কাজে মিল আছে কি না। সেই সঙ্গে কর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে সম্মানিত বোধ করেন কি না এবং তাঁদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কতটা। নেতৃত্ব কর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানান কি না এবং কর্মীদের সুস্থতা বজায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না। এ ছাড়া কর্মীদের অবদান রাখার সুযোগ আছে কি না, তা–ও জানতে চাওয়া হয়।
জরিপে কর্মীদের কাছে আরও যেসব বিষয় জানতে চাওয়া হয় সেগুলো হলো:বেতন, মুনাফা, পদোন্নতি, স্বীকৃতি ও সুযোগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কতটা ন্যায়সংগত;
কর্মীরা নিজেদের কাজ, কর্মদল ও প্রতিষ্ঠানের জন্য গর্ব বোধ করেন;
কাজ অর্থবহ এবং তা পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে;
সহকর্মীদের সঙ্গে কাজ করতে ভালো লাগে;
কর্মীরা নিজেদের মতো করে কাজ করতে পারেন।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভিজ্ঞতার ভিন্নতা কতটা, তা–ও জরিপে পরিমাপ করা হয়। কর্মীদের অভিজ্ঞতার ধারাবাহিকতা ও গুণগত মানও মূল্যায়ন করা হয়। এভাবে প্রতিটি ধাপে কঠোর মানদণ্ড মেনে এই তালিকা করা হয় বলে জানিয়েছে ফরচুন ম্যাগাজিন।