জাতিসংঘে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের নৈশভোজে শ্রম আইন, শ্রমিকের অধিকার ও চলমান সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন কূটনীতিক, জাতিসংঘ কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা আলোচনায় অংশ নিয়ে শ্রম খাত সংস্কার অব্যাহত রাখার প্রতি ঐকমত্য প্রকাশ করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বৃহৎ পরিসরে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য শ্রম সংস্কার অপরিহার্য। তিনি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আইএলও মহাপরিচালক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তাঁরা শ্রম খাত সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির উন্নতির সম্ভাবনা তুলে ধরেন। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের আগে রাজনৈতিক নেতাদের সংক্ষিপ্ত মতামত দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পোশাকশিল্পকে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান স্তম্ভ উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যৎ সরকার যে–ই হোক, খাতটির প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতেই হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম সংস্কার প্রচেষ্টাকেও স্বীকার করেন।

জামায়াতে ইসলামী নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, তাঁদের দলের অনেক নেতার সরাসরি অভিজ্ঞতা রয়েছে পোশাকশিল্পে কাজ করার। এ অভিজ্ঞতা খাতটিকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় আরও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে মূল্যবান দৃষ্টিভঙ্গি দেয়। তিনি সরকারের সংস্কার পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে ভবিষ্যতে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবীর বলেন, বর্তমান সংস্কার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত করা প্রয়োজন।

তিন নেতার বক্তব্যেই অভিন্নভাবে উঠে আসে পোশাক রপ্তানিতে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি। তাঁদের অভিমত, সব সময় ক্রেতাদের শর্তে নয়, বরং ন্যায্যতার ভিত্তিতে দাম নির্ধারিত হওয়া উচিত। এ বিষয়ে সর্বদলীয় সমর্থন দেখা যায়।

জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা তাসনিম জারা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার সময় তিনি মেডিকেল শিক্ষার্থী হিসেবে আহত ব্যক্তিদের সেবা দেন। তিনি বলেন, ‘সেই ঘটনাই আমার রাজনৈতিক চিন্তা গড়ে দিয়েছে।’ তাসনিম জারা শ্রম নিরাপত্তার মানবিক দিক ও সংস্কারে জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস শ্রম খাত সংস্কারকে অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন ও শ্রমিকের কল্যাণে অপরিহার্য উল্লেখ করে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

রায়ের পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত: রিজওয়ানা হাসান

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় ঘিরে দেশে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। আজ সোমবার সকালে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ‘দ্য সোল অব জুট’ নামে এক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন উপদেষ্টা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ