এলাকায় কেউ নেই, তিন বছর ধরে বন্ধ দুই সরকারি বিদ্যালয়
Published: 27th, September 2025 GMT
বিদ্যালয়টির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। এর পর থেকে খুঁড়িয়ে চলেছে এর কার্যক্রম। তবে হঠাৎ শিক্ষার্থীশূন্য হওয়ায় ২০২২ সালে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর চালু হয়নি। তিন বছর ধরে বন্ধ থাকা এই বিদ্যালয়ের নাম পাকনিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি অবস্থিত বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলায়।
২০২২ বছরের মাঝামাঝিতে এলাকাটিতে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) তৎপরতার মুখে স্কুলটি বন্ধ হয়ে পড়ে। পরের বছর জানুয়ারিতে একই উপজেলার চৈক্ষ্যংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিও একই ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। যদিও এর অনেক আগেই বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শূন্যে নেমে এসেছিল। দুটি স্কুলেই কেএনএফ সদস্যরা প্রশিক্ষণ নিতেন বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এই দুই বিদ্যালয় যে এলাকায় অবস্থিত, সেটি বম জাতিগোষ্ঠী–অধ্যুষিত। তিন বছর আগে সীমান্তবর্তী এ এলাকায় কেএনএফের তৎপরতা বাড়ায় স্থানীয় লোকজন আতঙ্কে এলাকা ছাড়েন। এরপর এ দুই বিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বন্ধ হওয়ার আগে পাকনিয়াপাড়া বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী ছিল ৩২ জন। আর শিক্ষক ছিলেন পাঁচজন। অন্যদিকে চৈক্ষ্যংপাড়ার বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থী ছিল ৫৬ জন ও শিক্ষক ছিলেন ৪ জন। দুটি পাড়ায় সব মিলিয়ে ৯৬টি পরিবারের ৪৫০ জন সদস্য বাস করতেন।
বন্ধ হওয়ার আগে পাকনিয়াপাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছিল ৩২ জন। আর শিক্ষক ছিলেন ৫ জন। অন্যদিকে চৈক্ষ্যংপাড়ার বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ছিল ৫৬ জন ও শিক্ষক ছিলেন ৪ জন। দুটি পাড়ায় সব মিলিয়ে ৯৬টি পরিবারের ৪৫০ জন সদস্য বাস করতেন।উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেএনএফের তৎপরতার কারণে রুমার বম–অধ্যুষিত এলাকায় আরও ১১টি বিদ্যালয় নিরাপত্তার কারণে বন্ধ হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর এসব বিদ্যালয় আবার চালু করা হয়। তবে ওই ৯টি বিদ্যালয়েও শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক কমেছে। বম জাতিগোষ্ঠীর অনেক পরিবার এলাকায় ফিরে না আসায় শিক্ষার্থী কমেছে বলে জানান শিক্ষা কর্মকর্তারা।
একসময় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মুখর ছিল চৈক্ষ্যংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ য লয়ট ক এনএফ এল ক য় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ ওভারের রোমাঞ্চে ৩ রানের জয় খুলনার
‘এমন ফিফটি লইয়া আমরা কি করিব’—তানভীর হায়দারের ৪৭ বলে ৬০ রানের ইনিংস নিয়ে এমন কথা বলতেই পারেন রংপুর সমর্থকেরা।
জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টিতে আজ খুলনার বিপক্ষে রংপুরের এই অলরাউন্ডার ব্যাট করতে নেমেছিলেন ওপেনিংয়ে, টিকে থাকলেন পুরো ২০ ওভার। কিন্তু দলকে জেতাতে পারলেন না। শেষ ওভারের রোমাঞ্চকর সমাপ্তিতে তানভীরের রংপুর বিভাগকে ৩ রানে হারিয়েছে খুলনা বিভাগ।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ১৩ রান। ওপেনার তানভীরের সঙ্গে ক্রিজে ছিলেন অভিজ্ঞ নাঈম ইসলাম। বোলিংয়ে মিডিয়াম পেস বোলিং অলরাউন্ডার জিয়াউর রহমান। প্রথম ডেলিভারিতেই তিনি দিয়েছেন ওয়াইড। এরপরও তানভীর ও নাঈম মিলে মোট ৯ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি।
উইকেটে থিতু তানভীর শেষ ওভারে ৪ বল খেলে নিতে পেরেছেন ৬ রান; কোনো বাউন্ডারি নেই। রংপুর ইনিংসের শেষ ১৫ বলেও কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ দলের হয়ে দুটি ওয়ানডে খেলা এই লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার।
রান তাড়ায় রংপুরের লক্ষ্য যে খুব বেশি ছিল, তা নয়। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ টসে হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪ উইকেটে ১৪৯ রান করেছিল খুলনা। রংপুর করতে পেরেছে ৬ উইকেটে ১৪৬।
অথচ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ১৫ ওভারে ২ উইকেটে ১০৩ রান তুলে ফেলেছিল রংপুর। উত্তরবঙ্গের দলটির রান তোলার গতি বেশি না হলেও হাতে ৮ উইকেট ও পরে নাঈম ইসলাম-নাসির হোসেনের মতো অভিজ্ঞরা থাকায় শেষ ৩০ বলে ৪৭ রানের সমীকরণ মেলানো খুব কঠিন মনে হচ্ছিল না।
কিন্তু অধিনায়ক আকবর আলীর আউটে তাঁর সঙ্গে তানভীরের ৪২ রানের জুটি ভাঙার পর আর বড় জুটি হয়নি। নাসির হোসেনকে ব্যাটিংয়েই নামায়নি রংপুর। এমনকি নাঈমকেও নামানো হয়েছে আবদুল গাফফার, আলাউদ্দিন বাবু, আবদুল্লাহ আল মামুনের পরে। তাঁরা তিনজনই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
খুলনার পেসার রবিউল হক ৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। তবে অলরাউন্ড নৈপুণ্যে জাতীয় দলের সাবেক অলরাউন্ডার জিয়াউর ম্যাচসেরা হয়েছেন।
বোলিংয়ে ৩ ওভারে ১৯ রানে ১ উইকেট নেওয়ার আগে ব্যাট হাতে ৪ ছক্কায় ১৬ বলে ৩৬ বলে অপরাজিত থাকেন জিয়াউর। তাঁর ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের রংপুরকে ১৫০ রানের লক্ষ্য দিতে পারে খুলনা।
এই ম্যাচ দিয়ে এনসিএল টি-টোয়েন্টির চার রাউন্ড শেষ হলো। টানা দ্বিতীয় জয়ে খুলনা উঠে এসেছে পয়েন্ট তালিকার তিনে। ঢাকা বিভাগ শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরখুলনা বিভাগ: ২০ ওভারে ১৪৯/৪ (জিয়াউর ৩৬*, এনামুল ৩৫, মিঠুন ২৫, নাহিদুল ২০*; হাশিম ২/২০, নাসির ১/৭, জাহিদ ১/১৮)।
রংপুর বিভাগ: ২০ ওভারে ১৪৬/৬ (তানভীর ৬০*, অনিক ২৮, আকবর ১৯; রবিউল ৩/৩২, নাহিদুল ১/১৭, জিয়াউর ১/১৯, মৃত্যুঞ্জয় ১/২৭)।
ফল: খুলনা বিভাগ ৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জিয়াউর রহমান।
একই মাঠে দিনের প্রথম ম্যাচে মাহমুদুল হাসানের অপরাজিত ৭৮ রানের সুবাদে বরিশাল বিভাগকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ।
আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ উইকেটে ১২৮ রান করেছিল বরিশাল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন ওপেনার ইফতেখার হোসেন ইফতি। তিনে নামা ফজলে মাহমুদ করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬।
বরিশালের শুরুটা অবশ্য দারুণ হয়েছিল। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪০ রান। এরপর ইফতি ও ফজলে মিলে যোগ করেন ৩০ রান। তবে দশম ওভারে এই জুটি ভাঙার পর অধিনায়ক সোহাগ গাজী ছাড়া (১৪ বলে অপরাজিত ১৮) আর কেউ বলার মতো কিছু করতে পারেননি।
চট্টগ্রামের ফাস্ট বোলার মেহেদী হাসান রানা ২২ রানে ৩ উইকেট নেন। বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ ছিলেন বেশ ‘কিপটে’। ৩ ওভারে ১০ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে চট্টগ্রামকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন মুমিনুল হক ও মাহমুদুল হাসান। তাঁদের উদ্বোধনী জুটি থেকে ৩.৩ ওভারেই আসে ৪৩ রান। মুমিনুল আউট হওয়ার পর শাহাদাত হোসেন বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
তবে এরপর সৈকত আলীর সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৬৭ রানের জুটি গড়ে বাকি কাজ অনায়াসে সারেন মাহমুদুল। ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তাঁরই হাতে।
টুর্নামেন্টে এখন মাহমুদুলই সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। ৩ ম্যাচে তিনি করেছেন ১৫৫ রান। আজ ৭৮ রানের ইনিংস খেলার পথে ছাড়িয়ে গেছেন রাজশাহী বিভাগের হাবিবুর রহমানকে (৩ ম্যাচে ১২৫ রান)।
টানা তিন জয়ে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে এসেছে চট্টগ্রাম। ঢাকার মতোই তাদের পয়েন্ট সমান ৭। তবে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় ঢাকা শীর্ষে আছে। পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা বরিশাল এখনো কোনো জয় পায়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোরবরিশাল বিভাগ: ২০ ওভারে ১২৮/৭ (ইফতি ৩৩, ফজলে ২৬, সোহাগ ১৮*; রানা ৩/২২, মুরাদ ২/১০, রুবেল ১/১৮, হাসান ১/২৯)।
চট্টগ্রাম বিভাগ: ১৬.৩ ওভারে ১৩৩/২ (মাহমুদুল ৭৮*, সৈকত ২৩*, মুমিনুল ২২; সোহাগ ১/৩০, তানভীর ১/৩১)।
ফল: চট্টগ্রাম বিভাগ ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাহমুদুল হাসান।