কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ভেতরে দারোগার কক্ষে সাংবাদিকের ওপর হামলা
Published: 27th, September 2025 GMT
বন্দরে মাদ্রাসা ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় এক শিক্ষককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। এ ঘটনাকে পুঁজি করে প্রিন্সিপালকে ফাঁড়িতে ডেকে এনে আটক রাখার বিষয়ে জানাতে চাওয়ায় দারোগার সামনে সাংবাদিকের ওপর হামলা চালায় সোর্স আক্তার।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ভেতরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত নূরুজ্জামান মোল্লা দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার বন্দর প্রতিনিধি।
সাংবাদিক নূরুজ্জামান মোল্লা জানান, উপজেলার ধামগড় ইউপির কামতাল ডাক সমাজ কবরস্থান হাফেজিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষক হাফেজ ফুসাইন আহাম্মেদ মাহফুজ (২৪)কে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে উত্তেজিত এলাকাবাসী।
পরবর্তীতে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের এসআই জহিরুল ইসলাম ওই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুস ছাত্তারকে ডেকে নিয়ে একটি কক্ষে আটক করে রাখে।
প্রিন্সিপাল মামলার আসামি না হওয়া তাকে আটক করে রাখার বিষয়টি ভিকটিম ছাত্রীর দাদা নূরুল হক সাংবাদিকদের ফোন করে জানালে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের গিয়ে প্রিন্সিপাল আটকের বিষয়ে এসআই জহিরুল ইসলামের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়। এসময় পুলিশের সোর্স আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বলে ছাত্তার মাওলানা বিষয়টি শেষ করে দেওয়া হয়েছে।
এক পর্যায়ে এসআই জহিরুলের কক্ষে এবং তার সামনে এলোপাতাড়ি কিলঘুষিতে মূখে রক্তাক্ত জখম হয়। এখবর পেয়ে স্বজনরা আমাকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুস ছাত্তার জানান, মঙ্গলবার সহকারি শিক্ষক হাফেজ ফুসাইন আহাম্মেদ মাহফুজকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনাটি মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষকে অবগত না করে মাদ্রাসা থেকে ধরে নিয়ে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
পরে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর এএসপি সার্কেল তাকে থানা নিয়ে যায়। পরে আমাকে দারোগা জহিরুল ইসলাম একটি কক্ষে আটক করে রাখে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকায় আমি অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলে স্বজনরা এসে আমাকে নিয়ে ডাক্তার কাছে নিয়ে যায়।
তদন্ত কেন্দ্রের ভেতরে সাংবাদিক নূরুজ্জামান মোল্লার ওপর হামলার ঘটনা স্বীকার করে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর সাহাদাত হোসেন বলেন, আমি ছুটিতে ছিলাম। উর্ধ্বতন স্যারদের অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি লিয়াকত আলী বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মো. আবদুল্লাহ (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিনকে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়ি ও গুইমারার পরিস্থিতি থমথমে, নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর
ঠাকুরগাঁওয়ে মা-মেয়ের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান আব্দুল্লাহ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করা হয় আবদুল্লাহকে।
মারা যাওয়া আবদুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে।
সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল গ্রামে একটি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয়রা আব্দুল্লাহকে আটক করে মারধর করে। পরে তাকে আহত অবস্থায় সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফাঁড়িতে সোপর্দ করার পর পুলিশ তার ওপর আরো নির্যাতন চালায়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সলিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে আবদুল্লাকে চারদিন আটকে রাখা হয়। ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মহিম উদ্দিন এ ঘটনা নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কিংবা থানার ওসিকে অবগত করেনি।
আব্দুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট ভাই সাকিল মিয়া বাদী হয়ে সোমবার নবীনগর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মহিম উদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা তবি মিয়া, আলামিন, আয়নাল হককে আসামি করা হয়। ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘মামলা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত এসআই মহিম উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ