রাজশাহীর ছয় গ্রামে ষষ্ঠীর আগেই বিসর্জনের বিরহ
Published: 29th, September 2025 GMT
মন্দিরে তেমন কেউ নেই। শুধু পুরোহিত আর নাপিত দুজন সহযোগী নিয়ে সপ্তমীর ঘট স্থাপন করছেন। ১৭ হাজার টাকা পারিশ্রমিকে ছয় দিনের জন্য নওগাঁর মান্দা থেকে এসেছেন ঢুলি শ্যামল চন্দ্র পাল ও দীপক চন্দ্র পাল। তাঁরা ঢাক নিয়ে বসে আছেন। ঢাকে কাঠি পড়ছে না।
রাজশাহীর গোদাগাড়ীর প্রেমতলী দুর্গামাতা ও কালীমাতা মন্দিরে আজ সোমবার সকালে এ দৃশ্য দেখা যায়। প্রেমতলীর মতো গোদাগাড়ীর ছয় গ্রামে মহাষষ্ঠীর আগেই বিসর্জনের বেদনায় বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন পূজারিরা। গত শনিবার বাধ্যর্কজনিত রোগে মারা যাওয়া একজনকে দাফন করতে গিয়ে নৌকাডুবিতে তিনজনের মৃত্যুতে ছয় গ্রামের শারদীয় উৎসব শুধু নিয়ম রক্ষার আয়োজনে পরিণত হয়েছে, যেন তাদের জীবনে উৎসব আসেনি।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে মরদেহ সৎকারে গিয়ে নৌকাডুবিতে একজনের মৃত্যু, নিখোঁজ ২২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী, খেতুর, ডুমুরিয়া, পালপাড়া, কাঁঠালবাড়িয়া ও ফরাদপুর গ্রামে এবার দুর্গাপূজার উৎসব আসেনি। এসব গ্রামের হিন্দু-মুসলমান সবাই শোকাহত। এবার মহাষষ্ঠীর দিনেই প্রেমতলী দুর্গামাতা ও কালীমাতা মন্দিরে দেবী দুর্গার আগমন ঘটেছে বটে, তবে উৎসবের সাড়া পড়েনি।
প্রেমতলী এলাকায় প্রতিবছর বেশ জাঁকজমকপূর্ণভাবেই শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্যাপিত হয়। প্রেমতলী খেতুরেই শ্রীশ্রী নরোত্তম দাস ঠাকুরের খেতুরীধাম। এলাকাটি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তীর্থভূমি। প্রতিবছর দুর্গাপূজার পরই খেতুরীধামে নরোত্তম দাসের তিরোভাব তিথি অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশ থেকে আসেন কয়েক লাখ মানুষ।
রাজশাহীর প্রেমতলী দুর্গামাতা ও কালিমাতা মন্দিরে যেন পূজার আমেজ নেই.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দরের লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে চলছে
বন্দরের ঐতিহ্যবাহী লৌহিয়া খালটি দখল উৎসবে মেতে উঠেছে চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। যে খাল দিয়ে এক সময় শীতলক্ষা-বহ্মপুত্র নদীতে সংযোগ ছিল।
সেই ঐতিহ্যবাহী খালটি অবৈধভাবে দখল করে পাঁকা স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেছে ওই সকল ভূমিদস্যুরা।
খালটি দখল হয়ে যাওয়ার কারনে পয়নিষ্কাশনসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত স্থানীয়রা। বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে উল্লেখিত খাল দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা ।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এম এ রশিদ ও সানাউল্লাহ সানু এবং বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিনের মদদপুষ্ট হয়ে আদর্শ বিদ্যানিকেতন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে খাল দখল করে রাস্তা বানিয়েছে।
তেমনি ভাবে গার্মেন্টস, ব্যাটারি ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া খালটি ভরাট করার কারনে বন্দর ইউনিয়নের ৯ নং ওর্য়াডের কদমতলীসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ড্রেজার দিয়ে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি ভরাট করতে গিয়ে সরকারি খাল দখল করে নিয়েছে। দেখার যেন কেউ নেই।
বন্দর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন সৈকত জানান, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েও কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
প্রভাবশালী মহল ও ভূমিদস্যুদের কর্তৃক দখলকৃত খালটি উদ্ধার করে পয়নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভূক্তভোগী এলাকাবাসী।