অভিবাসীদের জন্য কঠোর যুক্তরাজ্য
Published: 30th, September 2025 GMT
যুক্তরাজ্যে বসবাসে কঠোর নিয়মের মুখোমুখি হতে হবে। দেশটিতে স্থায়ীভাবে বাস করতে চাওয়া অভিবাসীদের জন্য এমন বিধানের প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। তাঁর দল লেবার পার্টির প্রতিপক্ষ কট্টর ডানপন্থী রিফর্ম ইউকের উত্থান ঠেকাতে নতুন প্রস্তাব আনা হচ্ছে।
গত রোববার থেকে যুক্তরাজ্যের লিভারপুল শহরে শুরু হয়েছে লেবার পার্টির চার দিনের বার্ষিক সম্মেলন। সেখানেই শাবানার নতুন প্রস্তাব তুলে ধরার কথা। তবে শাবানা এমন এক সময়ে তাঁর নতুন প্রস্তাব আনছেন, যখন জনপ্রিয়তায় লেবার পার্টি পিছিয়ে পড়ছে। লেবার পার্টির বার্ষিক সম্মেলনে তাই মূলত কট্টর ডানপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদারের বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নতুন পরিকল্পনার অধীনে দেশটিতে স্থায়ীভাবে থাকার জন্য অভিবাসীদের চাকরি করতে হবে। তাঁরা কোনো সরকারি ভাতা দাবি করতে পারবেন না। এ ছাড়া তাঁদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে অংশ নিতে হবে। লেবার পার্টির এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো দেশটির ডানপন্থী রিফর্ম ইউকে পার্টির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে অভিবাসন নীতির পক্ষে ভোটারদের সমর্থন বাড়ানো। দেশটিতে অভিবাসন নীতি নিয়ে কট্টর অবস্থানের কারণে রিফর্ম ইউকের জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
সম্মেলনে অভিবাসীদের জন্য কঠোর বিধিনিষেধের প্রস্তাব আনছেন যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ।এবারের সম্মেলনে লেবার পার্টির প্রধান আলোচ্য বিষয় চরম ডানপন্থী নাইজেল ফারাজ নেতৃত্বাধীন রিফর্ম ইউকে দলটিকে মোকাবিলার কৌশল বের করা।
বর্তমানে যেসব অভিবাসীর পরিবার যুক্তরাজ্যে পাঁচ বছর বসবাস করছে, তারা স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার যোগ্য। একইভাবে যাঁরা যেকোনো ধরনের ভিসায় ১০ বছর বৈধভাবে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন, তাঁরাও এই অধিকার পান। এই যোগ্য আবেদনকারীরা যুক্তরাজ্যে বসবাস, কাজ ও পড়াশোনা করার অধিকার পাচ্ছেন। এ ছাড়া ভাতা নেওয়া এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার সুযোগও মিলছে।
অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন চায় লেবার সরকার
লেবার সরকার অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন করতে চায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদের প্রস্তাব অনুযায়ী, অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যে থাকার জন্য সামাজিক নিরাপত্তায় অবদান রাখতে হবে। তাঁরা কোনো ভাতা দাবি করতে পারবেন না এবং অপরাধে জড়ানোর কোনো রেকর্ড থাকা যাবে না। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সামাজিক কাজেও অংশ নিতে হবে।
লেবার পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এ বছরের শেষ দিকে নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে সরকার পরামর্শ করবে।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যের জাতীয় জরিপে এগিয়ে রয়েছে রিফর্ম ইউকে পার্টি। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাসের অনুমতির ব্যবস্থা বন্ধ করে দেবে। অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যে থাকতে হলে প্রতি পাঁচ বছর পরপর ভিসার জন্য আবেদন করা লাগবে। রিফর্ম ইউকের এই ঘোষণার পর লেবার পার্টির পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তনের প্রস্তাব সামনে আনা হচ্ছে।
লেবার পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়, রিফর্ম ইউকের প্রস্তাবিত ঘোষণাগুলোর সঙ্গে লেবার সরকারের পার্থক্য দেখা যায়। রিফর্ম ইউকের সাম্প্রতিক ঘোষণা অনুযায়ী দেশে দীর্ঘ সময় অবদান রাখা কর্মীদের ঘরবাড়ি ও পরিবার ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করা হবে।
এদিকে জনপ্রিয়তার চাপে থাকা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউকে রিফর্ম পার্টির পরিকল্পনাকে ‘বর্ণবৈষম্যমূলক’ এবং ‘অনৈতিক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
চাপে স্টারমার
রিফর্ম ইউকে দলটিকে মোকাবিলা করার জন্য স্টারমার সঠিক নেতা, এ বিষয়টি লেবার পার্টির বামপন্থী ও মধ্যপন্থীদের বোঝানোর চাপে রয়েছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের কঠিন অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটের মধ্যে অভিবাসনকে কেন্দ্র করে লড়াই জোরদার হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে লেবার সম্মেলনে তাঁর প্রথম ভাষণে শাবানা মাহমুদ অভিবাসীদের জন্য কঠোর নিয়মকানুনের বিষয়গুলো সামনে আনতে যাচ্ছেন। তিনি চান অভিবাসীরা যেন উচ্চমানের ইংরেজি শেখেন। নিজেকে কঠোর মন্ত্রী হিসেবেও তুলে ধরতে চান তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র য ক তর জ য য ক তর জ য র র প রস ত ব ড নপন থ নত ন প সরক র বসব স
এছাড়াও পড়ুন:
‘এটা তো চাপের খেলা’—বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে ভারত কোচ
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ ঘিরে উত্তাপ, উত্তেজনা নতুন নয়। তবে এবারের লড়াইটা ভারতের জন্য বাড়তি চাপেরও। প্রতিপক্ষের মাঠ, গ্যালারিভর্তি দর্শক আর হামজা-শমিতে উজ্জীবিত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে হয়তো কঠিন পরীক্ষাতেই পড়তে হবে সফরকারীদের। আজ ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ভারতের কোচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তেমনটাই।
আগামীকাল জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ভারত। তার আগে আজ একটি হোটেলে ভারতীয় দলের কোচ খালিদ জামিল বলেন, ‘এটা তো চাপের খেলা’।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব থেকে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দলেরই বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়েছে। তবু বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে ভারত ম্যাচ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ। যার বড় প্রমাণ অনলাইনে টিকিট ছাড়ার ৬ মিনিটের মধ্যে সব বিক্রি হয়ে যাওয়া।
এর পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মাঠে খেলাটা যে সব সময়ই কঠিন, সেই বাস্তবতা জানেন জামিলও। তাঁর দলের ওপর চাপ আছে কি না প্রশ্নে ভারত কোচ বলেন, ‘হ্যাঁ, চাপ আছে। আমাদের তা মানতে হবে। সবাই জানে এটি একটি চাপের ম্যাচ। তবে সে জন্য আমাদের একটি ইতিবাচক ফলের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে দুই দলের প্রথম লেগ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। সেই ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয়েছিল হামজা চৌধুরীর। ইংলিশ ক্লাব লেস্টার সিটিতে খেলা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল, যার মধ্যে দুটি করেছেন বৃহস্পতিবার নেপালের বিপক্ষে।
ভারত কোচ অবশ্য একক কোনো খেলোয়াড়কে নিয়ে ভাবতে নারাজ, ‘আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কে বিবেচনায় নিচ্ছি না। বাংলাদেশ দলে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। এটা খুব সিরিয়াস গেম।’
১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩২ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ১৬টিতে, বাংলাদেশ ২টিতে। ড্র বাকি ১৪টি (২০০৩ সাফে বাংলাদেশের গোল্ডেন গোলে জয়ের ম্যাচসহ)।