শাহজাদপুরে নির্মাণের এক মাসের মাথায় সড়কে ধস
Published: 30th, September 2025 GMT
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নির্মাণের এক মাসের মাথায় একটি সড়ক ধসে পড়েছে। ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সড়কের দুরবস্থার কারণে বিপাকে পড়েছেন চার ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের মানুষ। তাদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ করার ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন তারা।
শাহজাদপুর উপজেলার পাঁচিল-কৈজুরি আঞ্চলিক সড়কের জয়পুর ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন খালের ওপর নবনির্মিত সেতুর দুই পাশে এ সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল।
আরো পড়ুন:
বেইলি ব্রিজের পাটাতন খুলে নদীতে, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ
দূরপাল্লার বাস বন্ধে ভোগান্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের যাত্রীরা
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৮ মাস আগে ১ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ব্যয়ে মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডাস নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করে। এরপর ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা ও কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় ৬ লাখ ৩০ হাজার ৯১৬ টাকা ব্যয়ে সেতুর সংযোগ (সিসিকরণ) সড়ক নির্মাণ করা হয়। গত সপ্তাহে পাঁচিল-কৈজুরি আঞ্চলিক সংযোগ সড়কটি ধসে পড়ে।
সড়কে চলাচলকারীদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ এবং নিয়ম অনুযায়ী রড ছাড়াই নিম্নমানের পুরনো ইট ও লোকাল বালু ব্যবহার করে নামমাত্র গাইড ওয়াল দিয়ে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে নির্মাণের এক মাস না যেতেই বৃষ্টিতে সড়কটি ভেঙে মানুষ ও যানবাহনের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবিতে গত শুক্রবার মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ উপস্থিত ছিলেন।
জয়পুরা গ্রামের নাসির উদ্দিন, কল্পনা বেগম ও আবু তাহের জানান, শিডিউল অনুযায়ী সংযোগ সড়কের পাইলিং ঠিকভাবে করা হয়নি। পুকুরে পানি থাকা সত্ত্বেও দায়সারাভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মাত্র এক মাস আগে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করায় কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তা ভেঙে পড়েছে। এই সড়ক দিয়ে এখন যানবাহন তো দূরের কথা, পথচারীরাও চলাচল করতে পারছেন না।
স্থানীয় শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদ, নীরব হোসেন ও আখিঁ খাতুন বলেন, অনেক কষ্ট করে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয় তাদের। রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় সবাই খুশি হয়েছিল। সংযোগ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় স্কুল-কলেজে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিন শেখ ও আব্দুল আলিম জানান, সেতুটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারকে শিডিউল অনুযায়ী কাজ করতে বলা হয়েছি। ঠিকাদার সঠিক নিয়মে কাজ করেনি। পানির মধ্যে ৫০ ফুট পাইলিং না করে ২০ ফুটের কম পাইলিং করে সেতু নির্মাণ করেন তিনি। নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সংযোগ সড়ক তৈরি করায় তা এক মাসের মাথায় ধসে পড়েছে। সঠিক তদারকি না থাকায় (পিআইও) অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে এসব অনিয়ম হয়েছে।
এক মাসের মাথায় সড়কটি ধসে পড়ার কারণ জানতে চাইলে প্রকল্পের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহজাহান আলী বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। বিলও উত্তোলন হয়েছে। বৃষ্টির কারণে সংযোগ সড়কটি ভেঙে গেছে। এতে আমার কিছু করার নেই।”
শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল কালাম আজাদ বলেন, “আগের পিআইওর সময় সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। এ সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার সময়ে নির্মাণ করা সংযোগ সড়কটি বৃষ্টির কারণে ভেঙে গেছে। নতুন বরাদ্দ পেলে সংস্কার করা হবে।”
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ এক ম স র ম থ য় স য গ সড়কট ন র ম ণ কর স য গ সড়ক র এক ম স প রকল প ক জ কর অন য য় উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন
১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নবম পে-স্কেল নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বানে রবিবার (১৬ নভেম্বর) পৃথকভাবে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেন তারা।
আরো পড়ুন:
বেরোবিতে যৌন হয়রানিকারীদের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি
সাংবাদিক শামছুলের বিরুদ্ধে করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জিডি প্রত্যাহার দাবি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)
দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে কুবির ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীরা মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে গণিত বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর এ কে এম কামরুল হাসান বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অপানি বৈষম্যবিহীন এবং দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের পেটে যদি ভাত না থাকলে দুর্নীতি না, এর চেয়ে ভয়ংকর কিছু করতে বাধ্য হব। আমাদের যদি দুর্নীতিমুক্ত রাখতে চান তাহলে নবম পে-স্কেল দ্রুত বাস্তবায়ন করেন।”
তিনি আরো বলেন, “আপনারা যদি কর্মচারীদের এভাবে দাবিয়ে রাখেন তাহলে দেশ অচল হয়ে যাবে। সবসময় দেশ দুর্নীতিতে প্রথম হবে। দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্য দেশের কর্মচারীদের একটি মানসম্মত পে-স্কেল দিতে হবে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে।”
বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের সহ-সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. মাসুদ আলম বলেন, “কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা পে কমিশন গঠন করেন এবং বাংলাদেশের পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছিলেন। তখন থেকেই আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী ফেডারেশনের দাবি জানিয়েছেন, ১৫ ডিসেম্বর এর মধ্যেই আমরা একটি প্রজ্ঞাপন চাই। কিন্তু এই সরকার আমাদের সঙ্গে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন নানা রকম অজুহাতে।”
নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নে প্রহসন চলছে অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, “নবম পে-স্কেল আমাদের প্রাণের দাবি। কমিশন গঠন করেছেন আপনারা, নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছেন আপনারা। নতুন পে-স্কেল আপনারাই বাস্তবায়ন করবেন।”
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির উদ্যোগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে আগামী ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ সালে ঘোষিত অষ্টম পে–স্কেলে ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীরা চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। ২০ থেকে ১৯ গ্রেডে বেতন বেড়েছে মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। অথচ ১১ থেকে ১০ গ্রেডে এই পার্থক্য ছিল ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত।
এমনকি ওপরের দিকের কিছু গ্রেডে ১০ হাজার টাকারও বেশি ব্যবধান তৈরি করা হয়েছে দাবি করে কর্মচারী নেতারা বলেন, সাধারণত প্রতি ৫ বছর অন্তর নতুন পে–স্কেল দেওয়া হলেও ২০১৫ সালের পর দীর্ঘ ১০ বছরেও নতুন স্কেল বাস্তবায়ন করা হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কর্মচারীরা বিশেষ আশাবাদী ছিলেন। সরকার বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করলেও বর্তমানে বলা হচ্ছে—এই সরকারের সময় পে–স্কেল বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বক্তারা সরকারের এমন অবস্থানের তীব্র নিন্দা জানান।
কর্মচারী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম কাজলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।
গত জুলাই মাসে নতুন পে কমিশন গঠন করা হয় এবং এই কমিশনকে ৬ মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। তবে অর্থ উপদেষ্টা জানান, এখন হচ্ছে না নতুন পে স্কেল। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে আগামী নির্বাচিত সরকার।
ঢাকা/এমদাদুল/মুজিবুর/মেহেদী