আজ মহাষ্টমী। প্রাণের পূজায়, উৎসবের আনন্দে সাতসকালে স্নান করে খালি পেটে পুষ্পাঞ্জলি দিতে কলকাতায় মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় জমিয়েছেন পূণ্যার্থীরা। সকাল থেকেই ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়েছে কলকাতাসহ রাজ্যের একাধিক অংশে। তার মধ্যেই চলছে অঞ্জলী। বারোয়ারি থেকে বনেদি বাড়ির পূজা, সব জায়গাতেই চলছে অষ্টমীর পূজার আয়োজন।

বেলুড় মঠ, তারাপীঠ, দক্ষিণেশ্বর, বিভিন্ন রামকৃষ্ণ মঠ ও বনেদি বাড়িতে চলছে কুমারী পূজা। বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে বিশেষ ভোগের ব্যবস্থা। এই সবের পরই আবার সন্ধিপূজার প্রস্তুতি। বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৩ আশ্বিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫টা ৪৩ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৭ মিনিট পর্যন্ত চলবে সন্ধি পূজা। ৬টা ৩১ মিনিটে সন্ধি পূজার বলিদান ও সন্ধি পূজা সমাপন। আবার গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে, ৩০ সেপ্টেম্বর, ১৩ আশ্বিন দুপুর ১টা ৪৪ মিনিটে সন্ধি পূজার বলিদান ও দুপুর ২টা ৮ মিনিটের মধ্যে সন্ধি পূজার সমাপন।

আরো পড়ুন:

আজ মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা 

শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর দুর্গাপূজা উদযাপনে পুলিশের একগুচ্ছ পরামর্শ

অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট এবং নবমী তিথির প্রথম ২৪ মিনিট অর্থাৎ মোট ৪৮ মিনিট ধরে চলে পূজা। সন্ধিপূজায় দেবী দুর্গাকে চামুণ্ডা রূপে পূজা করা হয়। এ সময়ে তিনি সর্বসংহারিণী। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, এই মহাসন্ধিক্ষণে চামুণ্ডা রূপে চণ্ড ও মুণ্ডের নিধন করেন দেবী। সে কারণেই সন্ধিপূজার আয়োজন। ১০৮ প্রদীপ, ১০৮ পদ্ম নিবেদন করে ৪৮ মিনিটের এই বিশেষ পূজার মাধ্যমে মহাষ্টমী পেরিয়ে এসে পড়ে মহাপূজার শেষ তিথি, নবমী।

পুরাণ অনুযায়ী, মহাষ্টমীতেই দেবী দুর্গাকে নানা ধরনের অস্ত্র, পদ্মের মালা, রত্নহার দিয়ে সাজিয়ে তুলেছিলেন দেবতারা। কারণ, পুরাণের মতে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণানবমী তিথিতে দেবতাদের তেজ পুঞ্জীভূত হতে শুরু করে। আর, সেই পুঞ্জীভূত তেজ আশ্বিনের সপ্তমী তিথিতে বিশেষ রূপ ধারণ করে। সেই তেজের সাহায্যেই অষ্টমী তিথিতে দেবী মহিষাসুরমর্দিনীকে সাজিয়ে তুলেছিলেন দেবতারা। তাই অষ্টমী পূজায় অঞ্জলি দেওয়ার জন্যই ভক্তদের থাকে বাড়তি উৎসাহ। বলা হয়ে থাকে, মহাষ্টমীতে দেবীর পূজা করার সময় সঠিক নিয়ম মেনে চললে কর্মক্ষেত্রে বাধা দূর হয়। জীবনে কখনও আর্থিক দিক থেকে অবনতি ঘটে না। সবসময় সাফল্য আসে। 

অষ্টমী পূজার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ কুমারী পূজা। তারাপীঠে মন্দিরের সেবাইত গোলক মহারাজের উদ্যোগে করা হয় কুমারী পূজা। করা হয় যজ্ঞের আয়োজন। তারাপীঠের মা তারা কেই আজ দুর্গা রূপে পূজা করা হয়। তারাপীঠের সেবাইতরা মনে করেন, সব দেবীর উর্দ্ধে মা তারা। তাই তারাপীঠ মন্দিরে কোন দেবী মূর্তি পূজার চল নেই। মা তারাকেই সমস্ত দেবী রূপে পূজা করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে হয়ে আসা এই রীতির কোনো ব্যতিক্রম হয়নি। 

তবে অষ্টমীতে বেলুড় মঠের কুমারী পূজা কলকাতার অন্যতম ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং মাহাত্ম্য। শ্রী শ্রী শ্রীরামকৃষ্ণের ভাবনা থেকেই বেলুড়ে কুমারী পূজার শুরু। ১৯০১ সালে বেলুড় মঠে কুমারী পূজার সূচনা করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। মা সারদার উপস্থিতিতে শঙ্খ, বাদ্য, অর্ঘ, বলয় ও বস্ত্রাদি সহযোগে ৯ জন কুমারীকে পূজা করেছিলেন তিনি৷ চিরাচরিত সেই রীতি অনুযায়ী মৃন্ময়ী উমার পাশাপাশি পূজিত হন কুমারী দেবীও। গায়ে লাল বেনারসি শাড়ি, কপালে চন্দন, হাতে পদ্ম ফুল, আর ছোট্ট মুখে পরিতৃপ্তি হাসি। এই ভাবেই দেবী রূপে সেজে ওঠেন কুমারী। এবার বেলুড় মঠে কুমারী হিসাবে পূজিত হয়েছেন কোন্নগরের বাসিন্দা এবারের কুমারী শ্রীনিকা মুখোপাধ্যায়, বয়স ৫ বছর ২ মাস।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা

কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’

সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।

সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ