বিয়ের আগেই দুই সন্তানের মা, আলোচিত এই দক্ষিণি অভিনেত্রীকে কতটা চেনেন
Published: 1st, October 2025 GMT
বলিউডের যেসব অভিনেত্রী দক্ষিণি সিনেমার মাধ্যমে অভিষেক করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে হেমা মালিনী, রেখা, বিজয়ান্ধিমালা, জয়া প্রাদা ও শ্রীদেবী অন্যতম। কিন্তু এমন একজন অভিনেত্রী আছেন, যিনি শুধু সিনেমার জন্য নয়, ব্যক্তিগত জীবনের কারণেও সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। তিনি হলেন রেখার মা, পুষ্পাবল্লি।
পুষ্পাবল্লির অভিনয়যাত্রা
পুষ্পাবল্লি প্রথম জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন ১৯৩৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সম্পূর্ণ রামায়ণ’-এ সীতার চরিত্রে অভিনয় করে। এটির জন্য তিনি মাত্র ৩০০ রুপি পারিশ্রমিক পান। তাঁর বড় হিট ছিল তেলেগু চলচ্চিত্র ‘বালা নাগাম্মা’ (১৯৪২), যেখানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মিস মালিনি’-এ তিনি মূল চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করলেও বক্স অফিসে সাফল্য পায়নি।
প্রেম, সম্পর্ক ও ব্যক্তিগত জীবন
পুষ্পাবল্লির জীবন সব সময় সংবাদ শিরোনামে ছিল। সেটা তাঁর সিনেমার ক্যারিয়ারের চেয়ে ব্যক্তিগত জীবনের কারণে। ১৯৪০ সালে তিনি বিয়ে করেন কিন্তু ছয় বছরের মাথায় দাম্পত্য জীবন কঠিন হয়ে ওঠে। স্বামীকে ছেড়ে আলাদা জীবনযাপন শুরু করেন। এরপর তাঁর জীবন ঘুরে দাঁড়ায় ‘মিস মালিনি’ ছবিতে নবাগত অভিনেতা জেমিনি গণেশনের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে। পুষ্পাবল্লি ও গণেশন একে অপরের প্রেমে পড়েন, যদিও উভয়েই তখন অন্য কারও সঙ্গে বিবাহিত ছিলেন।
জেমিনি গণেশন কখনো পুষ্পাবল্লিকে বৈধ স্ত্রীর মর্যাদা দেননি। তবু পুষ্পাবল্লি তাঁর পুরো জীবন কাটান গণেশনের সঙ্গী হিসেবে। তাঁদের দুই কন্যা—বড় কন্যা হলেন বলিউড অভিনেত্রী রেখা এবং ছোট কন্যা রাধা, যিনি পরবর্তী সময় যুক্তরাষ্ট্রে বসতি গড়েছেন।
আরও পড়ুনসম্মতি ছাড়াই পাঁচ মিনিট ধরে চুম্বন, কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন রেখা১২ আগস্ট ২০২৫রেখার পথ সুগম করা
পুষ্পাবল্লি ১৯৯১ সালে মারা যান। বেশির ভাগ চলচ্চিত্রে তিনি সহায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, কিছু নির্বাচিত ছবিতে প্রধান চরিত্রে। কিন্তু তাঁর কন্যা রেখা, যিনি পুষ্পাবল্লির ইচ্ছামতোই চলচ্চিত্রে নাম লেখান, পরবর্তী সময় বলিউডের এক বড় নাম হয়ে ওঠেন। রেখা মাত্র ১২ বছর বয়সে তেলেগু চলচ্চিত্র ‘রঙুলা রত্নম’-এ অভিষেক করেন।
১৫ বছর বয়সে রেখা কাজ করেন তাঁর প্রথম বলিউড চলচ্চিত্র ‘অঞ্জনা সফর’, যা পরে ‘দো শিকারি’ নামে পরিচিতি পায়। পুষ্পাবল্লির মতো রেখার জীবনও ছিল ঘটনাবহুল—তাঁর স্বামী দিল্লির ব্যবসায়ী মুকেশ আগারওয়াল, বিয়ের এক বছরের কম সময়ের মধ্যে মারা যান।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়াডটকম
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ষ প বল ল র চলচ চ ত র কর ছ ল ন চর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
তদন্ত ছাড়াই সাংবাদিককে মামলায় জড়ালো পুলিশ
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল এলাকায় জমি বিরোধের জেরে দুইপক্ষের দ্বন্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চাঁদাবাজি মামলার আসামি হয়েছেন মোল্লা ফারুক হাসান নামে এক সাংবাদিক।
তবে থানা পুলিশ অভিযোগের তদন্ত না করেই মামলাটি এজাহারভূক্ত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ
‘সিভিক ডিফেন্ডারস অব বাংলাদেশ’ ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধন
ভুক্তভোগী মোল্লা ফারুক হাসান গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকা এবং সময়ের কন্ঠস্বর অনলাইন নিউজ পোর্টালের স্থানীয় প্রতিনিধি।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী মোল্লা ফারুক হাসান অভিযোগ করে বলেন, “গত কয়েকদিন আগে কটকস্থল বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন আরিফ ফিলিং স্টেশনের সামনে স্থানীয় হারুন-অর রশিদ বেপারী ও মো. হিরা মাঝি গংদের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন থানা পুলিশ। এরপর সেখানে আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাই। পরবর্তীতে পুরো ঘটনা নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।”
তিনি বলেন, “ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হারুন-অর রশিদ বেপারী তার প্রতিপক্ষ মো. হিরা মাঝিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সংবাদ প্রকাশের জেরে ওই অভিযোগের মধ্যে আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারনে থানা পুলিশ ওই অভিযোগের কোনো তদন্ত না করেই আমাকে আসামি করে ফিলিং স্টেশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে এজাহারভূক্ত করেন।”
তিনি আরো বলেন, “যেখানে সাধারণত হুমকি-ধামকির বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে আগে তদন্ত প্রসঙ্গটি উত্থাপণ করে থানা পুলিশ। সেখানে ঘটনার সময় থানা পুলিশ ওই ফিলিং স্টেশনে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মনগড়াভাবে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তদন্ত ছাড়া তড়িঘড়ি করে আমাকে জড়িয়ে মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ রহস্যজনক।” মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে তিনি (সাংবাদিক) সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি হারুন-অর রশিদ বেপারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সাংবাদিককে আসামি করার বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, “একটা মামলা হয়েছে। এখন তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরনদী সার্কেল) শারমিন সুলতানা রাখি বলেন, “পেট্রোল পাম্প নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষ সংবাদকর্মীদের দিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে এবং গৌরনদী থানার ওসির বিরুদ্ধে মিথ্যা মনগড়া সংবাদ প্রকাশিত করিয়েছে। একটি পক্ষ ওই ঘটনা নিয়ে প্রথমে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটির এজাহার দায়ের করা হয়।”
তিনি বলেন, “তদন্ত করার আগেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসার কারণে মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে এক সাংবাদিক রয়েছে বলে জানা গেছে। সাংবাদিক মোল্লা ফারুক যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকে, তাহলে তার কিছুই হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “ওই সাংবাদিক (মোল্লা ফারুক) আমার কাছে এসেছিল। তাকে আমি বলেছি, আপনি যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকেন, তাহলে আপনাকে পুলিশ খোঁজবেও না, আপনি নিশ্চিত থাকেন।”
অপরদিকে, তদন্ত ছাড়া গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক মোল্লা ফারুক হাসানকে মামলায় আসামি করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর ও বরিশাল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নিকুঞ্জ বালা পলাশ, সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। তারা অনতিবিলম্বে ওই সাংবাদিককে মামলা থেকে অব্যাহতি ও দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি করেছেন।
এছাড়াও পৃথক বিবৃতিতে একই দাবি করেছেন বাংলাদেশ গ্রামীণ সাংবাদিক সংগঠন, গৌরনদী প্রেসক্লাব, কালকিনি সাংবাদিক ফোরাম, আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দরা।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী