ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল (রহ.) অত্যাচারিত হয়ে একবার বলেছিলেন, ‘আমাদের এবং তাদের মধ্যে পার্থক্য প্রকাশ পাবে আমাদের জানাজায়।’ এখানে ‘তারা’ ছিলেন তার অত্যাচারীরা। তারা তার ওপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল। ইমাম আহমাদ কথাটি বলেছিলেন এই ভেবে যে, অন্ধকার কারাগারেই তার মৃত্যু হবে এবং তারপর সত্য প্রকাশিত হলে বিপুল মানুষ তার জানাজায় আসবে, ফলে অত্যাচারী বিচারক আহমাদ ইবন আবি দুআদও শ্রদ্ধা নিবেদন করতে বাধ্য হবেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ইমাম আহমাদ সেই যাত্রায় টিকে যান এবং অপরাধীর অপবাদ থেকে মুক্ত হন। জনগণের কাছে তিনি পুনরায় ব্যাপক সমাদর লাভ করেন। এবং সত্যি সত্যি তার যখন মৃত্যু হয়, আল্লাহ তাকে এমন সম্মানিত জানাজা দান করেন, যা আরব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম ও বৃহৎ জানাজা হিসেবে পরিচিত। বিপরীতে, সেই বিচারক আহমাদ ইবন আবি দুআদ এতটা ঘৃণার পাত্র হন যে, তার জানাজায় কেউ আসে নি।
হ্যাঁ, কখনো কখনো সত্যিকারের ধার্মিকদেরও নিঃসঙ্গ মৃত্যু হয় এবং মন্দ লোকেরা পায় রাজকীয় বিদায়। যেমন তৃতীয় খলিফা উসমান ইবন আফফান (রা.
জনৈক জ্ঞানী ব্যক্তি একবার আমাকে বলেছিলেন, ‘তোমার জানাজা সামনে রেখে জীবন গঠন করো এবং সেভাবেই পথ চলার সিদ্ধান্ত নাও।’
যখন জীবনের যেই মুহূর্ত অতিবাহিত করি, মনে রাখতে হবে, শেষ দিনটি কেমন হবে, তা যেন আমাদের ভাবনা থেকে ছুটে না যায়। আমাদের যাবতীয় কাজ, আচরণ, সিদ্ধান্ত একটু একটু করে সেই জানাজার দিকে পরিচালিত করছে-যে জানাজা হবে হয় চিরস্থায়ী মুছিবতের নয় সুখের প্রতীক। মৃত্যু অবধি এক মহা সফরে চলেছি আমরা; যে-জীবন বয়ে যাব, শেষ ক্ষণটির সজ্জা হবে সেভাবেই। তারপর, মৃত্যুর পর অপেক্ষা করছে আরেক জীবন।
অনেক ধর্মপ্রাণ আছেন, মৃত্যুর আগে তার সামাজিক অবদানের কথা লোকজন জানতে পারে না, অনুভবও করতে পারে না যে, তিনি কতটা মহৎ ছিলেন। যেমন, ইমাম জাইনুল আবিদিন আলী ইবনে হোসেইন (রহ.)-এর কথা বলা যায়। তিনি ছিলেন মহানবীর (সা.) নাতি হোসাইন (রা.)-এর ছেলে। তার মৃত্যু হলে দেখা যায় কাঁধে একটা প্রচণ্ড চাপের দাগ। উদ্ঘাটিত হয় যে, এটা ব্যাগের চিহ্ন, যা তিনি রাতে অভাবীদের দরজায় রেখে আসতেন। কেউ তার এ-অবদানের কথা জানত না। পরে জানা যায়, মদিনার বহু লোকের জীবিকা নির্বাহ হতো তার দানের অর্থ দিয়ে; যদিও তারা জানত না, সেই দানের উৎস কোথায়।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.) এবং এক ইহুদি ছেলের গল্প০৫ মার্চ ২০২৫ভাবুন তো, আপনার মৃত্যুর পর কতজন আপনাকে মিস করবে, কতজনের জীবন আপনি আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছিলেন? সেই মানুষ কতজন, যারা পরিত্যক্ত অবস্থায় আপনার বরাভয় পেয়েছিল? কতজন বঞ্চিত আপনার সাহায্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল? কতজন অত্যাচরিতের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন আপনি? পরিবারের সদস্যরা কি আপনার না-থাকা টের পাবে শুধু খালি বিছানা দেখে, নাকি তাদের হৃদয়ে গভীর শূন্যতাও অনুভব করবে তারা? তারা কি শুধু আপনার খরচের অভাব অনুভব করবে, নাকি আপনার হাসিও মিস করবে? তারা আপনার সেবা ও ত্যাগের অভাব বোধ করবে?
ইমাম জাইনুল আবিদিন (র.) চাইতেন না যে, প্রাপকেরা তার কথা জানুক। কারণ তিনি জানতেন, দানের প্রকৃত উৎস আল্লাহ। তিনি পার্থিব কৃতজ্ঞতা চাননি, চেয়েছেন শুধু পরকালে। তিনি এ-জগতের ক্ষণকালীন প্রশংসা নয়, পর জগতের চিরন্তন পুরস্কার চেয়েছিলেন। বুঝতে পেরেছিলেন, যদি পৃথিবীর মোহে বিভ্রান্ত হন, তাহলে অস্থায়ী পৃথিবীর একটি অংশ হবেন মাত্র। তার চেয়ে চিরায়ত ভবিষ্যতের দিকে মনোযোগ দেওয়া ভালো। অস্থায়ী পৃথিবীর একটি অংশ হবেন মাত্র। তার চেয়ে চিরায়ত ভবিষ্যতের দিকে মনোযোগ দেওয়া ভালো। দোয়া করুন, ‘আল্লাহ, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় যেন শেষ সময় হয়, আমার সবচেয়ে ভালো কাজ যেন শেষ জীবনের কাজ, এবং সেরা দিন যেন হয় তোমার সঙ্গে সাক্ষাতের দিন (আল্লাহুম্মাজ‘আল খইরা যামানি আখিরহু, ওয়া খইরা আমালি খওয়াতিমাহু, ওয়া খাইরা আইয়্যামি ইয়াওমা আলক-কা)।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)-কে ভালোবাসার ৭টি নিদর্শন০৬ মার্চ ২০২৫অনেক মানুষের মৃত্যুর পরে আমরা অযথা প্রশংসাবাক্যও শুনতে পাই। তিরমিজির এক বর্ণনায় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘কেউ মারা গেলে যদি লোকজন তার সম্পর্কে প্রশংসার বৃষ্টি ঝরায় এবং বলে, ‘কী মহান ব্যক্তি ছিল, কী সম্মানিত ছিলেন তিনি’ তাহলে তার জন্য দুজন ফেরেশতা নিয়োজিত হন, যারা তাকে তীব্র আঘাত করতে করতে বলেন, এটা কি সত্যিই তুমি?’
মানুষের প্রশংসার অপেক্ষা করবেন না। বরং যদি আপনি জীবনভর আল্লাহর প্রশংসা খোঁজেন, তাহলে প্রতিশ্রুত আমলগুলো কবরে আকাশের জ্বলজ্বলে তারার মতো আপনার অপেক্ষা করবে। হতে পারে সেই আমলগুলোর কথা কেউ জানে না, অথবা কয়েক জন মাত্র জানে, শুধু আল্লাহ আর আপনিই জানেন সবটা।
আল্লাহ আমাদের সকলের জীবনের সুন্দর সমাপ্তি এবং সর্বোত্তম পরিণতি দান করুন।
সূত্র: মুসলিম ম্যাটার্স
অনুবাদ: মনযূরুল হক
আরও পড়ুনযেভাবে ইস্তিগফার করা যায়০৬ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ জ বন র আম দ র আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিএনপির নির্বাচনী যাত্রা শুরু
সব জল্পনার অবসান হলো—বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করছেন। তিনি ফেনী-১, বগুড়া-৭ ও দিনাজপুর-৩ আসনে প্রার্থী হবেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচন করবেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সোমবার বিএনপি ২৩৭ আসনে মনোনীত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। তাতে দলের দুই শীর্ষ নেতার নির্বাচন করা এবং তাঁদের নির্বাচনী আসনগুলো নিশ্চিত করা হয়। এ ছাড়া দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঠাকুরগাঁও-১ আসনে নির্বাচন করবেন।
তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে নির্বাচন করবেন, অনেক আগে থেকেই এমন আলোচনা আছে। তবে অসুস্থতার কারণে এবার খালেদা জিয়ার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংশয় ছিল। আবার তাঁর নিজেরও নির্বাচন করার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ ছিল না।
দলীয় সূত্র বলছে, নির্বাচন ঘিরে নানামুখী শঙ্কা, বিশেষ করে ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে নেতৃত্ব দিতে রাজি করানো হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রার্থী হওয়ার ঘোষণায় নেতা-কর্মীরা আনন্দিত।
স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, সেলিমা রহমান ও নজরুল ইসলাম খান এবার নির্বাচন করছেন না। তবে বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা জমির উদ্দিন সরকারের পঞ্চগড়-১ আসনে তাঁর ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমিরকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা মনে করছেন, নানা কারণে আসন্ন নির্বাচন বিএনপির জন্য খুব স্বস্তিদায়ক না-ও হতে পারে। খালেদা জিয়াকে নির্বাচন করতে রাজি করানোর মধ্য দিয়ে সার্বিকভাবে নির্বাচনের গুরুত্বটা আরও বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি নির্বাচন নিয়ে নতুন কোনো জটিলতার উদ্ভব হলে, সেটা মোকাবিলায়ও তাঁর ভোটে অংশগ্রহণ পরিস্থিতির ওপর একটা প্রভাব ফেলবে।
জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে সোমবার ২৩৭ আসনে মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। বাকি ৬৩টি আসনে প্রার্থিতা পরে ঘোষণা করা হবে।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, স্থগিত রাখা কিছু আসনে প্রার্থিতা নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমস্যা আছে। আর কিছু আসন জোট ও সমমনা দলগুলোর প্রার্থীদের জন্য রাখা হয়েছে, যাদের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হতে পারে।
ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, বিএনপির চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির ১২ জন সদস্য নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। অন্যরা হলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন (কুমিল্লা-১), মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ (ঢাকা-৮), গয়েশ্বর চন্দ্র রায় (ঢাকা-৩), আবদুল মঈন খান (নরসিংদী-২), আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১০), ইকবাল হাসান মাহমুদ (সিরাজগঞ্জ-২), সালাহউদ্দিন আহমদ (কক্সবাজার-১), হাফিজ উদ্দিন আহমদ (ভোলা-৩) এবং এ জেড এম জাহিদ হোসেন (দিনাজপুর-১)।
স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, সেলিমা রহমান ও নজরুল ইসলাম খান এবার নির্বাচন করছেন না। তবে বয়োজ্যেষ্ঠ নেতা জমির উদ্দিন সরকারের পঞ্চগড়-১ আসনে তাঁর ছেলে মোহাম্মদ নওশাদ জমিরকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। তবে তিনি বলেছেন, এটি প্রাথমিক তালিকা। প্রয়োজন বোধ করলে স্থায়ী কমিটি প্রার্থিতা পরিবর্তন করতে পারবে।
সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে প্রার্থী ঘোষণার আগে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির জরুরি সভা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী সভা হয়। সেখানে জুলাই সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়েও আলোচনা হয়। পরে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এ সময় বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকেরাও উপস্থিত ছিলেন।
এবারের প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। তাঁকে ফেনী-৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রথম আলোকে বলেন, ‘জীবনে প্রথম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছি। দল আমার ওপর আস্থা রেখেছে, সে আস্থা রাখার জন্য ধন্যবাদ। আমি আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সঙ্গে দেখা করব, সালাম জানাব।’
যে কারণে ঢাকার সাতটি আসন ফাঁকাঢাকার ২০টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি সাতটি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে। নেতা-কর্মীরা বলছেন, ঢাকায় প্রার্থিতা নিয়ে মারাত্মক পর্যায়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল নেই। তাঁদের ধারণা, নির্বাচনী সমঝোতার জন্য আসনগুলোতে প্রার্থিতা স্থগিত রাখা হয়েছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সাতটি আসনের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পাটির (এনসিপি) সঙ্গে সমঝোতা হলে তাদের জন্য অন্তত তিনটি আসন ছাড় দেওয়া হতে পারে। এ তালিকায় গণতন্ত্র মঞ্চ, বিজেপি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নামও আছে।
তবে এনসিপির নেতারা যেসব আসনে নির্বাচন করতে চান বলে আলোচনা আছে, সে আসনগুলোর একটি (ঢাকা-৯) ছাড়া বাকিগুলোতে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম (ঢাকা-১১), সদস্যসচিব আখতার হোসেন (রংপুর-৪), জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা (ঢাকা-৯), দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (কুমিল্লা-৪), উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (পঞ্চগড়-১) ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের (নোয়াখালী-৬) স্ব স্ব আসনে তাঁদের কমবেশি তৎপরতা আছে।
ঢাকা-৯ আসন স্থগিত রাখা হলেও সেটা কার জন্য, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সেখানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খানকে (সোহেল) প্রার্থী করা হতে পারে বলে দলে আলোচনা আছে।
ঢাকা-১৪: মায়ের ডাক-এর সানজিদাঢাকা-১৪ আসনে এবার প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়লেন এস এ খালেকের ছেলে এস এ সিদ্দিক (সাজু)। সেখানে গুম হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের ব্যক্তিদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’-এর সংগঠক সানজিদা ইসলামকে (তুলি) প্রার্থী মনোনীত করেছে বিএনপি। এই আসনে ইতিমধ্যে জামায়াত প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুমের শিকার মীর আহমদ বিন কাসেমকে (আরমান)। তিনি আট বছর গুম ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর গোপন বন্দিশালা ‘আয়নাঘর’ থেকে মুক্তি পান।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে। এ লক্ষ্যে দলটি অভ্যন্তরীণ জরিপসহ সাংগঠনিক উপায়ে প্রার্থী বাছাই সম্পন্ন করেছে। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের নাম প্রকাশ করে নির্বাচনের পথে যাত্রা শুরু করল বিএনপি।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিগত ১৫-২০ বছর ভোট দিতে পারেনি। এখন জাতি উৎসাহিত হচ্ছে ভোটের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। তিনি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, সেটি পূরণ করার লক্ষ্যে বিএনপি প্রার্থী মনোনয়ন ঘোষণা করে একটা বড় পদক্ষেপ নিল। ইতিমধ্যে অনেকে মাঠে চলে গেছেন, এ ঘোষণার পর বাকিরাও মাঠে যাবেন। এর মাধ্যমে ভোটের একটা উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হবে।
১০ নারী প্রার্থীঘোষিত ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকায় নারী রয়েছেন দশজন। এর মধ্যে অন্যতম বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বাকিরা হলেন সিলেট-২ আসনে তাহসিনা রুশদীর, ফরিদপুর-২ আসনে শামা ওবায়েদ ইসলাম, ফরিদপুর-৩ আসনে নায়াব ইউসুফ আহমেদ, মানিকগঞ্জ-৩ আসনে আফরোজা খান রিতা, শেরপুর-১ আসনে সানসিলা জেবরিন, ঝালকাঠি-২ আসনে ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো, যশোর–২ আসনে সাবিরা সুলতানা, ঢাকা-১৪ আসনে সানজিদা ইসলাম ও নাটোর-১ আসনে ফারজানা শারমিন।
মনোনয়ন না পেয়ে দুই মহাসড়ক অবরোধমাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করে কামাল জামান মোল্লাকে। এর প্রতিবাদে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সাজ্জাদ হোসেন লাভলু সিদ্দিকীর অনুসারীরা রাত আটটার দিকে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে মনোনয়ন না দেওয়ায় তাঁর অনুসারীরা সন্ধ্যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।