টানা ১৫ ঘণ্টা সংবাদ সম্মেলন করে রেকর্ড গড়লেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট
Published: 4th, May 2025 GMT
দুই-এক ঘণ্টা নয়, টানা ১৫ ঘণ্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। এই সংবাদ সম্মেলন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পূর্ববর্তী রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন তিনি। যদিও দীর্ঘ এই সংবাদ সম্মেলনে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নামাজের জন্য সংক্ষিপ্ত বিরতি নেন।
রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে মুইজ্জু সেই সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন এবং মাঝখানে প্রার্থনার জন্য সংক্ষিপ্ত বিরতি দেওয়া ছাড়া যেটি ১৪ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট ধরে অব্যাহত ছিল।
এতে আরও বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনটি মধ্যরাত পর্যন্ত গড়িয়েছে, একজন প্রেসিডেন্টের এটি নতুন বিশ্ব রেকর্ড, প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ধারাবাহিকভাবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।
এএফপি বলছে, এই দীর্ঘ কনফারেন্সটি বিশ্ব সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয়। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু সংবাদমাধ্যমের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, তিনি সমাজে সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার স্বীকৃতি দেন এবং তথ্যভিত্তিক, সুষম ও নিরপেক্ষ প্রতিবেদনের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
এই কনফারেন্সে তিনি সাংবাদিকদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে পাঠানো প্রশ্নেরও উত্তর দেন। প্রায় দুই ডজন সাংবাদিক এই কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
মোহাম্মদ মুইজ্জু ২০২৩ সালে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার প্রশাসন মালদ্বীপের গণমাধ্যম স্বাধীনতা সূচকে উন্নতি সাধন করেছে; ২০২৫ সালের রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি ১৮০টি দেশের মধ্যে ১০৪তম স্থানে উঠে এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় দুই ধাপ উন্নতি।
এর আগে, ২০১৯ সালের অক্টোবরে ইউক্রেনের ন্যাশনাল রেকর্ডস এজেন্সি দাবি করেছিল যে, জেলেনস্কি ১৪ ঘণ্টার সংবাদ সম্মেলন করে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাত ঘণ্টারও বেশি সময়ের সংবাদ সম্মেলনের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মুইজ্জু সাংবাদিকদের মাধ্যমে জনসাধারণের জমা দেওয়া প্রশ্নেরও জবাব দেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রায় দুই ডজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন এবং তাদের খাবার পরিবেশন করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র কর ড র কর ড ম ইজ জ
এছাড়াও পড়ুন:
রয়েল টিউলিপে এনসিপি নেতাদের অবস্থান, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির
কক্সবাজারে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টে (পুরোনো নাম রয়েল টিউলিপ) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিবাদে সভা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, রয়েল টিউলিপে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে রয়েল টিউলিপের সামনে প্রতিবাদ সভা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান এনসিপির পাঁচ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, সার্জিস আলম, ডা. তাসমিন জারা, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও খালেদ সাইফুল্লাহ।
প্রতিবাদ সভার নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক সেলিম সিরাজী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। যারা ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তারা এখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। সেই আনন্দের মুহূর্তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের এখানে প্রতিবাদে আসতে হয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এনসিপির নেতারা মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার আসেন। পরে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টের (রয়েল টিউলিপ) ৫০০১, ৫০০২ ও ৫০০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই রিসোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের স্ত্রীসহ তারা ঘুরতে এসেছেন।’’
ওই রিসোর্টের কক্ষ আগে থেকে বুকিং করা ছিল না বলেও জানান তিনি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনসিপির পাঁচ নেতার হঠাৎ কক্সবাজার আগমনের বিষয়টি প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করা হয়নি।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাংলাদেশস্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতে কক্সবাজারে গিয়েছেন এই পাঁচ নেতা।
এনসিপি নেতাদের বহন করে বিমানবন্দর থেকে রয়েল টিউলিপে নিয়ে যাওয়া গাড়ির চালক নুরুল আমিন জানান, তার গাড়িতে করে হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ দুইজন নারী- একজন সারজিস আলমের স্ত্রী এবং অপরজন সমন্বয়ক (তাসনিম জারা) রয়েল টিউলিপে যান।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফ উদ্দিন শাহীন বলেন, “এনসিপির পাঁচ নেতা রয়েল টিউলিপে অবস্থান করছেন। তবে, এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। পুরো হোটেলে মাত্র তিনজন বিদেশি আছেন, তারা সবাই চীনের নাগরিক।”এদিকে এনসিপি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ একটি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “আমরা এখানে পিটার হাস কিংবা অন্য কারো সাথে কোন মিটিং করিনি। এমনকি পিটার হাসের সঙ্গে আমাদের দেখাও হয়নি। আমরা কয়েকজন এখানে ঘুরতে এসেছি।”
তারেকুর//