এবারই তাহলে শেষ নয়!
মহেন্দ্র সিং ধোনি আইপিএল থেকে এই মৌসুম শেষেই অবসরে যাচ্ছেন না। কাল কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে চেন্নাইয়ের জয়ের পর ৪৪ বছর বয়সী ধোনি নিজে এ কথা জানিয়েছেন।
চেন্নাইকে ৫টি শিরোপা জেতানো এই অধিনায়ক অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে আরও সময় নিতে চান। যদিও কয়েক দিন আগে টসের সময় ড্যানি মরিসনের আগামী মৌসুমে খেলবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ধোনি বলেছিলেন, ‘পরের ম্যাচে আসব কি না, আমি জানি না।’ তখন ধারণা করা হচ্ছিল ধোনি হয়তো এবার নিশ্চিতভাবেই অবসরে যাবেন। আপাতত আবার তা মনে হচ্ছে না!
২-৩ মৌসুম ধরেই পুরোপুরি ফিট না থেকেই আইপিএল খেলছেন ধোনি। তিনি খেলেন নিজেকে একটা ছকে বেঁধে। নিজেকে প্রস্তুত রাখেন কয়েকটি বলের জন্য। দলের প্রধান কোচ স্টিভেন ফ্লেমিংও জানিয়েছেন, ধোনির হাঁটু সমস্যা তাঁকে দীর্ঘ সময় ব্যাট করতে দিচ্ছে না। সে কারণেই আইপিএলে ৯ নম্বরেও ব্যাটিং করেছেন। ধোনির অনেক সমর্থকই ধোনির এত নিচে ব্যাটিং করা পছন্দ করছেন না।
আমি বছরে মাত্র দুই মাস খেলি। এবার আইপিএল শেষ হলে ছয় থেকে আট মাস কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বুঝতে হবে যে আমার শরীর এই ধরনের চাপ নিতে পারবে কি না।ধোনিঅনেকেই বলছেন, প্রয়োজনে ধোনি অবসর নিক! এই যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার শন পোলক। কয়েক দিন আগে ক্রিকবাজের আলোচনা অনুষ্ঠানে যেমন বলেছিলেন, ‘তার আর কিছুই অর্জনের বাকি নেই। ফ্র্যাঞ্চাইজিটিতে তার যে লিগ্যাসি ও প্রভাব, সেটার ওপর নির্ভর করে তাকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সেটা কি পাল্টাবে? মালিকপক্ষ কি তার সঙ্গে কথা বলবে? আমরা জানি না। আমরা অনেক দিন ধরেই এ বিষয়ে অনুমান করার চেষ্টা করছি। তবে আগামী বছর তাকে এখানে (আইপিএল) দেখলে খুব বিস্মিত হব।’
আরও পড়ুনআর্জেন্টিনাকে বিদায় বলা দি মারিয়া বেনফিকায় কত বেতন পান১ ঘণ্টা আগেকিন্তু ধোনি নিজে এই সিদ্ধান্ত এখনো নিতে পারেননি, ‘আমি বছরে মাত্র দুই মাস খেলি। এবার আইপিএল শেষ হলে ছয় থেকে আট মাস কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বুঝতে হবে যে আমার শরীর এই ধরনের চাপ নিতে পারবে কি না। এখনই আমার পক্ষে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। তবে আমি যেখানেই যাই, মানুষের ভালোবাসা ও স্নেহ অনুভব করি।’
রান নেই ধোনির ব্যাটে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নীরবতা ভেঙে হঠাৎ রাজনীতিকে ‘না’ বলে দিলেন শমসের মুবিন চৌধুরী
বছর দুয়েক আগেও দেশে ব্যাপক আলোচিত-সমালোচিত ও ‘দলছুট’ হিসেবে পরিচিত সাবেক কূটনীতিক শমসের মুবিন চৌধুরীর রাজনৈতিক অবসরের হঠাৎ ঘোষণা ছড়িয়ে পড়েছে রবিবার রাতে।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশ যখন টালমাটাল তার কয়েক মাস আগে নামকাওয়াস্তে দল ‘তৃণমূল বিএনপি’র নেতৃত্বে আসেন শমসের মুবিন, যার পদ ছিল চেয়ারপার্সন।
আরো পড়ুন:
‘আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে’
একটি দল বেহেস্তের টিকিট দেখিয়ে ভোট চাচ্ছে: আমান উল্লাহ
এই দলের মহাসচিবের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপির নারায়ণগঞ্জের আরেকজন আলোচিত নেতা তৈমূর আলম খন্দকার। রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে তৈমূর আলমের কাছে চিঠি দিয়ে রাজনীতিকে বিদায় বলে দিয়েছেন শমসের মুবিন।
শমসের মুবিন ও তৈমূর খন্দকারের নেতৃত্বাধীন ‘তৃণমূল বিএনপি’ ডামি দল হিসেবে আখ্যা পায়। তখন অনেকে বলেছিলেন, বিএনপি ভাঙার অপচেষ্টা হিসেবে দলের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাম ও পদ ব্যবহার করে তৃণমূল বিএনপি তৈরি করা হয়েছে। একে অনেকে ‘কিংস পার্টি’ নামে অভিহিত করেছিলেন। বিএনপি-জামায়াতসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জনে ঘোষণার পরও তখন বেশ কয়েকটি দল রাতারাতি গজিয়ে ওঠে, যার একটি এই তৃণমূল বিএনপি। এসব দল অভিনব কায়দায় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আসার চেষ্টা করেছিল।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে, বদলে গেছে রাজনীতির হাওয়া; নিষিদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম। এখন আর তৃণমূল বিএনপি বলে কোনো দলের কার্যক্রম মাঠে দেখা যায় না; শোনা যায় না তাদের দলের নেতাদের নাম। গণমাধ্যমেও তাদের কোনো উপস্থিতি নেই।
এখন নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে বিএনপি। অথচ কোথাও শমসের মুবিন চৌধুরীর নাম উচ্চারিত হয় না। রাজনীতির আড়ালেই পড়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎ সরব হলেন; তবে রাজনৈতিক বিদায়ের ঘণ্টা ধ্বনি শোনাতেই যেন অচমকা গভীর রাতে গণমাধ্যমে হাজির হলেন তিনি।
তৈমূর খন্দকার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শমসের মুবিন চৌধুরী অনেক দিন ধরেই দলে নিষ্ক্রিয়। তাদের দলও অনেক দিন ধরে নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। তিনি (শমসের মুবিন) ফোন করে অবসরের কথা জানিয়েছেন এবং তার কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন।
তৈমূর খন্দকার বরাবর চিঠিতে শমসের মুবিন লিখেছেন, “এই মর্মে আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে সকলকে অবগত করছি যে, শারীরিক কারণে আমি শমসের এম চৌধুরী রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই সঙ্গে তৃণমূল বিএনপির সকল পদ থেকে আমি পদত্যাগ করিলাম। আমার এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ইং থেকে কার্যকর হইল।”
“আমার উপরে উল্লেখিত সিদ্ধান্ত দলের সংশ্লিষ্ট এবং গণমাধ্যমে অবগত করার জন্য আপনাকে সবিনয় অনুরোধ করিলাম”, লেখেন তিনি।
সাবেক কূটনীতিক শমসের মুবিন চৌধুরী একসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। পরে তিনি বিএনপি ছেড়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ নামে দলেও যোগ দিয়েছিলেন।
বিকল্পধারা ছেড়ে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল বিএনপি নামে দলটির চেয়ারপারসন হন শমসের মুবিন।
ঢাকা/রায়হান/রাসেল