উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এবার একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা, একাংশের শিক্ষকদের সংহতি
Published: 8th, May 2025 GMT
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় আগামী সোমবার থেকে সেমিস্টার পরীক্ষা ছাড়া অন্যান্য পরীক্ষা ও পাঠদান কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেন তাঁরা। এতে সংহতি প্রকাশ করেছে শিক্ষকদের একটি অংশ।
এর আগে গত মঙ্গলবার প্রশাসনিক ভবনের সব বিভাগের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বুধবার উপাচার্যের বাসভবনের কর্মচারী ও নিরাপত্তারক্ষীদের বের করে দিয়ে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
আজ সাড়ে বেলা ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে ছাত্র-শিক্ষক সংহতি সমাবেশের ব্যানারে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক ও ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশ নেয় সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদ থেকে সম্প্রতি বাদ দেওয়া ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীন, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহসিনা হুসাইন, সমাজকর্ম বিভাগের মোস্তাকিম মিয়াসহ কয়েকজন শিক্ষক।
এ সময় উপাচার্য শুচিতা শরমিনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘স্বৈরাচার উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। আমাদের আগামী কর্মসূচি থাকবে উপাচার্যকে বাদ দিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করা এবং শনিবার সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করা।’ তিনি বলেন, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আগামী সোমবার শুধু পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যতীত পাঠদান, মিডটার্ম পরীক্ষা ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে দমানোর জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা স্বৈরাচারের শামিল। এ ছাড়া উপাচার্য অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি ঝুলিয়ে রেখেছেন। এতে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তিনি বলেন, উপাচার্যের স্বৈরাচারী, অপেশাদার আচরণ ও অদক্ষতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দিন দিন চরম অধঃপতনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক দাবির সঙ্গে তাঁরা একাত্মতা পোষণ করছেন।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী এস এম ওয়াহিদুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীর সম্মতিতে আমরা প্রশাসনিক শাটডাউন করেছি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন বিভাগ ও শিক্ষকেরা উপাচার্যের পদত্যাগ ও যৌক্তিক দাবির পক্ষে সংহতি প্রকাশ করেছেন।’
গত ২৭ এপ্রিল অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীনকে পুনর্বহাল, রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণসহ চার দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা রেজিস্ট্রারকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ দাবি করে কুশপুত্তলিকা দাহ করেন এবং রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে তালা দেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্ট্রার (নিরাপত্তা) কে এম সানোয়ার পারভেজ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার ঢাকায় সিন্ডিকেট সভায় মনিরুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়। রোববার উপাচার্য শুচিতা শরমিন সংবাদ সম্মেলন করে ওই সিদ্ধান্তের কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা মুচলেকা দিলে তাঁদের বিরুদ্ধে করা মামলা ও জিডি প্রত্যাহার করা হবে বলে জানান। একই সঙ্গে সিন্ডিকেট সভায় ফ্যাসিবাদী সরকারের সমর্থক শিক্ষক-কর্মকর্তাদের চিহ্নিত ও ব্যবস্থা নিতে একজন সিন্ডিকেট সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান উপাচার্য।
উপাচার্যের সংবাদ সম্মেলনের পর দুপুরে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে এক দফার আন্দোলনের কর্মসূচি দেন। পঞ্চম দিনের মতো আজ সেই দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য শুচিতা শরমিন সোমবার থেকে ঢাকায় অবস্থান করছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপ চ র য র পদত য গ উপ চ র য শ চ ত র উপ চ র য পর ক ষ শরম ন
এছাড়াও পড়ুন:
এক লাখ শিক্ষক নিয়োগে আবেদন শুরু, ফি ১০০০ টাকা
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীন এমপিওভুক্ত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১ লাখ ৮২২ জন শিক্ষক নিয়োগে আবেদন শুরু হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় আবেদন শুরু হয়। আবেদনের শেষ সময় আগামী ১৩ জুলাই। আবেদনকারীর বয়স ৪ জুন তারিখে সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।
আবেদন ফি এক হাজার টাকা। একজন প্রার্থী শূন্যপদের তালিকা থেকে সর্বোচ্চ ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পছন্দ দিতে পারবেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে কোনো নারী কোটা থাকবে না।
১ লাখ ৮২২ জনের মধ্যে স্কুল ও কলেজে নেওয়া হবে ৪৬ হাজার ২১১ জন, মাদ্রাসায় ৫৩ হাজার ৫০১ জন এবং কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানে নেওয়া হবে ১ হাজার ১১০ জন।
যেভাবে আবেদনঅনলাইনে আবেদন ফি দেওয়া–সংক্রান্ত নিয়ম টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েবসাইট এবং এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। আবেদন এবং ফি দেওয়ার নিয়মের বিষয়ে ভিডিও টিউটোরিয়াল নমুনা (ডেমো) টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
প্রত্যেক আবেদনকারী ভিন্ন ভিন্ন নিবন্ধন পরীক্ষায় অর্জিত একাধিক নিবন্ধন সনদপ্রাপ্ত হলেও একই পর্যায় একটিমাত্র সনদ দিয়ে আবেদন করতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট বিষয়, পদ ও প্রতিষ্ঠানের ধরন অনুযায়ী নিবন্ধন সনদধারী হতে হবে। এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রকাশিত সম্মিলিত মেধাতালিকার অন্তর্ভুক্ত এবং বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৫)–এর বিধি ১০ (১) মোতাবেক বৈধ নিবন্ধন সনদধারী হতে হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে জারিকৃত সর্বশেষ জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন হতে হবে। কাম্য শিক্ষা যোগ্যতার বিবরণ এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটের ‘৬ষ্ঠ নিয়োগ সুপারিশ বিজ্ঞপ্তি’ নামের সেবা বক্সে পাওয়া যাবে।