আওয়ামী লীগের টানা কয়েক মেয়াদে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার সময় দেশে শিকারি সাংবাদিকতা হয়েছে দাবি করে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন, “সামনের দিনে যাতে শিকারি সাংবাদিকতার ফাঁদে না জড়িয়ে যাই সেই চেষ্টা করতে হবে। এজন্য সাংবাদিক সংগঠনগুলো বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। নিজের ঘর নিজেকে পরিষ্কার করতে হবে। সাংবাদিকরা গণমাধ্যমকে যদি ফ্যাসিবাদের দোসরদের হাত থেকে বের করে না নিয়ে আসে তাহলে তো সরকার করতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “সরকার আইন করে, পুলিশ দিয়ে গণমাধ্যম থেকে সাংবাদিকদের তুলে নিয়ে যাবে সেটা তো হতে পারে না। কারো বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধ থাকলে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু কেউ রাজনৈতিকভাবে ফ্যাসিবাদের সমর্থক ছিল সেই কারণে কাউকে গ্রেপ্তার, চাকরিচ্যুতি চাই না।”

রবিবার (১১ মে) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের মধ্যে সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ভারতীয় নাগরিককে বাড়ি ফেরালেন বাংলাদেশের সাংবাদিক

অনেক মিডিয়া আওয়ামী লীগের টুলস হিসেবে কাজ করেছে: শফিকুল আলম

অনুষ্ঠানে ডিআরইউয়ের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথির হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।

ফারুক ওয়াসিফ বলেন, “গত ১৫ বছরে পিআইবির বাজেট বাড়েনি। সাড়ে ১০ কোটি টাকার বাজেট এতদিন ধরে চলে আসছে। এর মধ্যে বেতন ভাতা দেওয়ার পর আড়াই কোটি থাকে। যা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে বাকি কাজ করতে হয়। এবার আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। আশা করি বাজেট বাড়বে।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, “সাংবাদিকদের কাজ করার ক্ষেত্রে সবদিক, সব পরিস্থিতির বিষয় মাথায় রাখতে হবে।সেক্ষেত্রে নন-ভায়োলেন্স অ্যাপ্রোচ নিয়ে কর্মশালা হয়েছে এটা রিপোর্টারদের জন্য কাজ করতে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।”

সংবাদ সংস্থা প্রেসেঞ্জাকে এমন সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, “ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে ভবিষ্যতে আরো দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আমরা কাজ করব। যাতে সদস্যরা সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন বিষয়ে নিজেদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, “প্রেসেঞ্জা-ডিআরইউ আগামী দিনে আরো নতুন নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করবে। পাশাপাশি পিআইবির মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতাসহ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে কাজ করা হবে। যাতে সদস্যদের নিজ নিজ অঙ্গনে পেশাগত কাজ করা আরো  সহজ হয়।”

‘রিপোর্টিং অন নন ভায়োলেন্স অ্যাপ্রোচ' শীর্ষক কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে প্রেসেঞ্জা, ঢাকা ব্যুরোর প্যানেল এডিটর শামসুল হক বসুনিয়া বলেন, “প্রেসেঞ্জা ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যানিষ্ট মুভমেন্ট এর একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। এটি শান্তি ও অহিংসার খবরের স্বার্থে নিবেদিতপ্রাণ সংবাদ প্রতিষ্ঠান। যারা সারা বিশ্বের সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা ও উৎকর্ষতায় নন ভায়োলেন্স অ্যাপ্রোচকে অ্যাড্রেস করে থাকে।”

ঢাকা ব্যুরোর প্যানেল এডিটর শেখ আরীফ বলেন, “আন্তর্জাতিক প্রেস এজেন্সি-প্রেসেঞ্জা বর্তমানে ১২টা ভাষায় সংবাদ প্রকাশ করে। অচিরেই বাংলা ভাষাকে তাদের সংবাদ পরিবেশনায় যুক্ত করতে যাচ্ছে। এতে করে বাংলা ভাষাভাষী মানুষ সহজে বিশ্বের সব গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রেসেঞ্জার মাধ্যমে পড়ার সুযোগ পাবেন। শুধু তাই নয়, অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও প্রেসেঞ্জা তাদের কার্যালয় চালু করবে। এটা আমাদের অনেক বড় পাওয়া।”

ডিআরইউয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাই তুহিন, নারী বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা রোজী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিজান চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য আমিনুল হক ভুঁইয়া, সুমন চৌধুরী ও দৈনিক খবর সংযোগের রিপোটার আবু হেনা রাসেল প্রমুখ।

গত ১৮ এপ্রিল আন্তর্জাতিক প্রেস এজেন্সি-প্রেসেঞ্জা এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘রিপোর্টিং অন নন-ভায়োলেন্স অ্যাপ্রোচ’ শীর্ষক কর্মশালায় অংশ নেওয়া শতাধিক সাংবাদিকের মধ্যে অনুষ্ঠানে সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। কর্মশালাটি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আর্জেন্টিনা, চিলি এবং ইতালি থেকে একযোগে ওয়েবিনারে পরিচালিত হয়।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নন ভ য় ল ন স অ য প র চ র প র ট র স ইউন ট র স অন ষ ঠ ন ক জ কর গণম ধ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ট্রাম্পের হামলায় সমর্থন নেই বেশিরভাগ আমেরিকানদের: সিএনএন জরিপ

ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানে হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানোর ঘটনা সমর্থন করছেন না বেশির ভাগ মার্কিন নাগরিক। সিএনএন/এসএসআরএসের সাম্প্রতিক এক জরিপে এই তথ্য ওঠে এসেছে। কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের পাল্টা হামলার আগে জরিপটি করা হয়েছে।

জরিপ অনুযায়ী, ৫৬ শতাংশ আমেরিকান এই হামলার বিরোধিতা করেছেন। তবে তার হামলাকে সমর্থন করেছেন ৪৪ শতাংশ নাগরিক। ‘জোরালোভাবে বিরোধিতা’ করা মানুষের সংখ্যাও ‘জোরালোভাবে সমর্থনকারীদের’ তুলনায় বেশি। ৬০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী মনে করছেন, এই হামলা ইরানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হুমকি আরও বাড়িয়ে তুলবে।

জরিপে দেখা গেছে, দলীয় বিভাজন ব্যাপকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে এই জরিপে। ডেমোক্র্যাটদের ৮৮ শতাংশ এবং স্বতন্ত্র ভোটারের ৬০ শতাংশ হামলার বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। তবে রিপাবলিকানদের ৮২ শতাংশ এর পক্ষে ভোট দেন। যদিও রিপাবলিকানদের মধ্যেও বিভাজন রয়েছে। ৪৫ বছরের নিচের সমর্থকরা হামলার বিষয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি সন্দিহান।

হামলার বিরোধিতায় সবচেয়ে জোরালো অবস্থান নিচ্ছে তরুণ আমেরিকানরা। ৩৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই হামলার বিরোধিতা করছেন এবং ৪৫ শতাংশ একেবারেই ট্রাম্পের উপর আস্থা রাখছেন না বলে জানিয়েছেন।

জরিপ অনুযায়ী, আমেরিকানদের মাত্র ৩২ শতাংশ মনে করেন, ইরানে সামরিক হামলার আগে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা যথেষ্ট ছিল।

এছাড়া, ৫৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, ইরানে সামরিক শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ওপর তাদের সামান্য বা কোনো আস্থাই নেই। ৬৫ শতাংশ মনে করেন, ভবিষ্যতে ইরানে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ট্রাম্পের কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়া উচিত।

জরিপে অংশ নেওয়া রিপাবলিকানদের মধ্যে ৫১ শতাংশ ট্রাম্পের ওপর ‘মোটামুটি আস্থা’ রাখেন, তবে ৩৯ শতাংশ মনে করেন, ভবিষ্যতে সামরিক পদক্ষেপ নিতে কংগ্রেসের অনুমোদন নেওয়া দরকার। তবে ৩৮ শতাংশ মনে করেন, সেটি প্রয়োজন নেই।

এদিকে, ইরানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে স্থল সেনা পাঠানোর বিষয়ে মাত্র ৯ শতাংশ জনগণ পক্ষে অবস্থান করছেন। আর বিপক্ষে ৬৮ শতাংশ নাগরিক।

এই জরিপটি পরিচালনা করা হয় গত রোববার ও সোমবার। ইরানের পাল্টা হামলার আগে এবং ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার আগেই অধিকাংশ সাক্ষাৎকার সম্পন্ন হয়।

জরিপে অংশ নেওয়া ৮০ শতাংশই জানিয়েছেন, তারা ইরানে মার্কিন হামলার খবর ‘কমবেশি’ জেনেছেন, যদিও মাত্র এক-তৃতীয়াংশ খুব ঘনিষ্ঠভাবে বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

সিএনএনের এই ফলাফল বলে দিচ্ছে- ট্রাম্প প্রশাসনের সামরিক সিদ্ধান্ত নিয়ে মার্কিন জনগণের মধ্যে গভীর বিভাজন ও সন্দেহ বিরাজ করছে। বিশেষ করে তরুণ ও স্বতন্ত্র ভোটারদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদকবিরোধী কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে ভিডিপি: আনসার মহাপরিচালক
  • ইরানে ট্রাম্পের হামলায় সমর্থন নেই বেশিরভাগ আমেরিকানের: সিএনএন জরিপ
  • ইরানে ট্রাম্পের হামলায় সমর্থন নেই বেশিরভাগ আমেরিকানদের: সিএনএন জরিপ