১৫ বছর অশান্তি ছিল, আর অশান্তি চাই না: আমীর খসরু
Published: 11th, May 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘মহামতি গৌতম বুদ্ধের মৈত্রীময় শান্তির বাণী এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। এ দেশের মানুষ বিগত ১৫ বছর অশান্তির মধ্যে ছিল। সমাজ ভেঙে গেছে। আর অশান্তি চাই না বাংলাদেশে। এবার একটি সুন্দর সমাজ, সুন্দর রাষ্ট্র উপহার দিতে চাই।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আজ রোববার সকালে নগরের ডিসি হিল চত্বরে সম্মিলিত বুদ্ধপূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদ আয়োজিত বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে শান্তি শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘এ দেশে কোনো সংখ্যাগরিষ্ঠের রাজত্ব চলবে না। বাংলাদেশ পরিচালিত হবে প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহণের মাধ্যমে। ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। সুতরাং এই রাষ্ট্রে, এই সমাজে বিভক্তির আর কোনো রকম সুযোগ থাকবে না। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সমাজ গড়ব, রাষ্ট্র গড়ব। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশকে গড়তে হবে।’
শান্তি শোভাযাত্রার উদ্বোধনের সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম সব ধর্মের মানুষের মিলনস্থল। এই চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রিন ও হেলদি সিটির পাশাপাশি একটি নিরাপদ বাসযোগ্য শহর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’
বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বের করা হয় শোভাযাত্রা। আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ভবিষৎ এখনো অনিশ্চয়তা, শঙ্কায় ভরা: সন্তু লারমা
আজকের এ বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ভবিষৎ এখনো অনিশ্চয়তা ও শঙ্কায় ভরা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা।
সন্তু লারমা বলেছেন, ‘দেশের পাহাড় ও সমতলের অধিকাংশ জনগণ এখনো অস্তিত্ব হুমকির মধ্যে দিন যাপন করছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর চলমান সংস্কার কার্যক্রমে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর কার্যকর কোনো সংগঠন বা নেতৃত্বের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি অন্তর্বর্তী সরকার।’
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় লিখিত বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। আজ শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।
অসুস্থতার কারণে সন্তু লারমা সভায় উপস্থিত থাকতে পারেননি। তাঁর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আদিবাসী ফোরামের নির্বাহী সদস্য পল্লব চাকমা।
লিখিত বক্তব্যে সন্তু লারমা বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়া দেশে তাঁরা ক্রমশ ভূমিহীন ও দেশান্তরি হচ্ছেন। পাহাড়ের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর সমস্যা সমাধানে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ২৮ বছরেও কার্যকর করছে না এ রাষ্ট্র। ফলে পাহাড়ে বিদ্যমান সমস্যার নানা রূপ প্রতিফলিত হচ্ছে।
সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের পরিস্থিতি আরও বেশি নাজুক উল্লেখ করে সন্তু লারমা বলেন, ‘ভূমি থেকে উচ্ছেদ, নারী নিপীড়ন, বৈষম্য, বিচারহীনতা—এসবের মাধ্যমে প্রান্তিক থেকে আরও প্রান্তিক হচ্ছেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা।’
এমন বাস্তবতায় প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তাধারার বাংলাদেশের আপামর নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী, রাজনৈতিক নেতাসহ সবাইকে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম জোরদারে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান সন্তু লারমা।
দেশে বসবাসকারী ৪০ লাখের বেশি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের টিকে থাকার লড়াইকে শাণিত এবং তাঁদের ঐক্য ও সংহতি সুদৃঢ় করতে তরুণদের অধিকতর ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান সন্তু লারমা।
সন্তু লারমা বলেন, আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের লড়াই ও সংগ্রাম বেগবান করা এবং গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রগতিশীল আদর্শের কোনো বিকল্প নেই।
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে সন্তু লারমা বলেন, এ দিবস প্রতিবছরের মতো তাঁদের তরুণ সমাজ ও জনগণকে নবতর সংগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য অনুপ্রেরণা জোগাবে।
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আজ শনিবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল বের করেন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর লোকজন