সোনালু-জারুলে সড়কে রঙের মেলা, যেখানে ‘দূর হয় ক্লান্তি, মন হয় ভালো’
Published: 12th, May 2025 GMT
দূর থেকে তাকালেই মনে হয়—পথজুড়ে ছড়িয়ে আছে রঙিন ফুলের ঢেউ। কোথাও সোনালি ঝলক, কোথাও আবার বেগুনির কোমল ছায়া। বাতাস এলেই দুলছে, ঝরছে। গ্রীষ্মের খরতাপেও এখানে হেঁটে গেলে গরমটা যেন আর গায়ে লাগে না।
রাজশাহী নগরের আলিফ-লাম-মীম ভাটা থেকে শুরু হয়ে চৌদ্দপাই বিহাস পর্যন্ত সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়ক এখন ফুলের ‘অরণ্য’। সোনালু, জারুল, কৃষ্ণচূড়া, পলাশ, কাঞ্চন আর আইল্যান্ডজুড়ে পাম, রঙ্গন, কাঠগোলাপের মিলনমেলা এখানে প্রতিদিন পথিকের মন ভরিয়ে দিচ্ছে।
সম্প্রতি ওই সড়কে গিয়ে দেখা যায়, দুই পাশে ফুটে আছে সোনালু ও জারুল। অপেক্ষাকৃত কম ফুটেছে কৃষ্ণচূড়া। সবুজ পাতার আড়ালে শোভা পাচ্ছে সোনালু। আর সবুজ পাতা মাড়িয়ে আকাশের দিকে মুখ তুলে হেলে আছে জারুল। রাস্তার দুই পাশে ফুটপাতে লাগানো গাছে ফুলের এমন ‘অরণ্য’ যে কাউকে আকৃষ্ট করে। ফুটপাতে ছড়িয়ে আছে সোনালু ফুল। সেটা মাড়িয়েই অনেকে হেঁটে চলেছেন গন্তব্যে।
এক তরুণ বলেন, এমন ফুল দেখে থেমে গিয়ে ক্যামেরাবন্দী করতে হলো। এ তো ফুলের অরণ্য। এমন সোনালু ফুল প্রথম চোখে পড়ল। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রত্না আক্তার প্রথমবার এসেছেন এই সড়কে। তিনি বলেন, ‘দূর থেকে দেখে থেমে গেলাম। ছবি না তুলে পারলাম না। ফুলগুলো যেন ডেকে নিচ্ছে।’
বিকেলে দেখা গেল, কিছু পথচারী গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউবা বসে আছেন চুপচাপ। রোদ-ঝলমলে দুপুরেও কেউ কেউ গাড়ি থামিয়ে নিচ্ছেন কেবল এই ফুল দেখার জন্য। একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মী বিলাল মিয়া বলেন, ‘এ রাস্তা আমার গন্তব্য নয়, তবু সুযোগ পেলেই এই পথ দিয়ে যাই। ফুলগুলো ডাকে, মন ভালো হয়ে যায়। রাস্তা দিয়ে গেলেই সকল ক্লান্তি যেন কীভাবে দূর হয়ে যায়।’
এই ফুলেল পরিবেশ শুধু পথিক বা দর্শনার্থীকেই নয়, মুগ্ধ করছে স্থানীয়দেরও। স্থানীয় আকবর হোসেন নামের এক ব্যক্তি বললেন, গাছগুলোর বয়স তিন-চার বছর। ফুলের কারণে রাস্তার চিত্রই পাল্টে গেছে।
রাজশাহীতে সড়কের ফুটপাতে লাগানো গাছে জারুল ফুল ফুটেছে। আজ সোমবার তোলা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘রূপসা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের যাত্রীকে মারধর, থানায় অভিযোগ
যাত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে খুলনাগামী আন্তঃনগর ‘রূপসা এক্সপ্রেস’ ট্রেনে দায়িত্বরত ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষকের (ট্রাভেলস টিকিট এক্সামিনার—টিটিই) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ওই যাত্রী সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় টিটিই রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ওই যাত্রীর নাম মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী। তিনি আরআরপি অ্যাগ্রো ফার্মের নীলফামারীর সৈয়দপুর অফিসের প্রোডাকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন। দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা তিনি।
ভুক্তভোগী রাব্বীর অভিযোগ, অফিসের কাজে বুধবার সকাল ১০টার দিকে পার্বতীপুর স্টেশন থেকে তিনি ফুলবাড়ী যাচ্ছিলেন। স্টেশনে পৌঁছামাত্রই ট্রেন এসে পড়ায় ভেতরে দ্রুত উঠে পড়েন। ভেতরে টিকিট কেটে নেওয়ার সময় টিটিই রায়হান কবির তার কাছে অতিরিক্ত ভাড়া চান। টিটিই পার্বতীপুর থেকে ফুলবাড়ী স্টেশনের ভাড়া হিসেবে ২০০ টাকা দাবি করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রাব্বীকে টিটিই রায়হান টেনেহিঁচড়ে এসি বগির ফাঁকা কেবিনে নিয়ে চড়-থাপ্পড় ও লাথি মারেন। পুলিশের ভয়ভীতি দেখিয়ে তিনি পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী পর্যন্ত ১০০ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করেন।
এ সময় রাব্বী রেলওয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন। তারা রেলওয়ে থানায় আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে টিটিই রায়হান কবির বলেন, বুধবার রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনে কোনো যাত্রীর সঙ্গে এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে দাবি করেন।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ-উন নবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রূপসা ট্রেনে নির্যাতনের শিকার ওই যাত্রী দুপুরের পর থানায় এসে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে ঘটনাটি পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার আওতায় হওয়ায় তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে বলা হয়েছে।