চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের এক যুবদল নেতার বিরুদ্ধে বসতঘরে ঢুকে এক ত্রিপুরা কিশোরীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই যুবদল নেতার নাম মো. আবুল কাশেম (৩৭)। গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ওই কিশোরীর পরিবারকে থানায় যেতে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

আবুল কাশেম মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা মধ্যম টিলা এলাকার মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে। তিনি করেরহাট ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁর পদবির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা ও স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল বিকেলে আবুল কাশেম বাড়ির উঠোনে এসে ওই কিশোরীর কাছে পানি খেতে চান। পানি খাওয়ার পর আবুল কাশেম অতর্কিতে কিশোরীর বসতঘরে ঢুকে পড়েন। এরপর ওই কিশোরীকে শ্লীলতাহানি করেন। একপর্যায়ে কিশোরী আবুল কাশেমের হাত থেকে ছুটে ঘরের বাইরে দৌড় দেয়। তার চিৎকারে আশপাশের বাসিন্দারা জড়ো হলে আবুল কাশেম মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। সন্ধ্যায় কিশোরীর মা–বাবা ও স্থানীয় লোকজন জোরারগঞ্জ থানায় অভিযোগ দিতে যাওয়ার পথে কয়লা বাজার এলাকায় স্থানীয় একদল লোক তাঁদের থানায় যেতে নিষেধ করেন। আগামী বৃহস্পতিবার তারা এ ঘটনার বিচার করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন।

ভুক্তভোগী কিশোরীর মা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বসতঘরে ঢুকে আবুল কাশেম আমার মেয়ের শ্লীলতাহানি করেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করতে বের হলে সন্ধ্যায় কয়লা বাজারে কিছু লোক স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে দেবে বলে থানায় যেতে দেয়নি। আমি এ ঘটনায় নারী নির্যাতনের মামলা করতে চাই।’

অভিযুক্ত আবুল কাশেম করেরহাট ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বলে নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক জামশেদ আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল কাশেম স্থানীয় এক ত্রিপুরা কিশোরীকে শ্লীলতাহানি করেছেন মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে আমরা কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। কে বা কারা ওই কিশোরীর পরিবারকে থানায় যেতে বাধা দিয়েছে, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।’

অভিযুক্ত আবুল কাশেম বলেন, ‘আমি ওই কিশোরীর বাবার কাছে টাকা পাই। সেই টাকা উদ্ধার করতে তার বাড়িতে গেলে মেয়েটির বাবার সঙ্গে আমার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমি তাদের বাড়ি থেকে চলে আসি। শ্লীলতাহানির অভিযোগ সত্য নয়। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা আমার পেছনে লেগেছে। তার ইন্ধনে এই ঘটনা সাজানো হয়েছে।’

জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, খবর পেয়ে গতকাল রাতেই পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে ওই কিশোরীকে শ্লীলতাহানির সত্যতা পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওই ক শ র র এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

মিরসরাইয়ে বসতঘর থেকে বৃদ্ধের হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বসতঘর থেকে মোহাম্মদ ফয়েজ আহমেদ (৮৫) নামের এক বৃদ্ধের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ফয়েজ আহমেদ উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বদ্ধভবানী এলাকার বাসিন্দা। খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেন জোরারগঞ্জ থানা-পুলিশের সদস্যরা। পুলিশের ধারণা, গতকাল বুধবার রাতে নিজ ঘরে হাত-পা বেঁধে তাঁকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, নিহত ফয়েজ আহমেদ পাঁচ বিয়ে করেছেন। ঘটনার দিন রাতে তিনি সবার ছোট স্ত্রী ফিরোজা আক্তারের বাড়িতে ছিলেন। ফিরোজা আক্তার এলাকায় ধাত্রীর কাজ করেন। বুধবার রাতেও তিনি ঘরে স্বামীকে একা রেখে বাচ্চা প্রসব করানোর কাজে গিয়েছিলেন। কাজ শেষে ঘরে এসে তিনি স্বামীর হাত–পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। পরে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জোরারগঞ্জ থানা-পুলিশকে জানালে সকালে গিয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে।

এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকালে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের বদ্ধভবানী এলাকায় নিজের ঘরে এক বৃদ্ধের হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ পড়ে আছে, এমন খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় এনেছি। তার শরীরে ছুরির আঘাতের চিহ্ন ছিল। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হত্যা রহস্য উদ্‌ঘাটনের চেষ্টা করছি আমরা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিরসরাইয়ে বসতঘর থেকে বৃদ্ধের হাত-পা বাঁধা রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার