স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নবম গ্রেডে উন্নীত করাসহ ১৫ দফা প্রস্তাব ছাত্র ফেডারেশনের
Published: 15th, May 2025 GMT
স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বেতন স্কেল নবম গ্রেডে উন্নীত, বিসিএস ট্রেনিং বিশ্ববিদ্যালয় চালুসহ ১৫ দফা প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি ও কার্যকর সংস্কারের’ দাবিতে শিক্ষা সংলাপে এসব প্রস্তাব উঠে আসে।
শিক্ষা সংলাপের শুরুতেই জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। শিক্ষা সংলাপে ছাত্র ফেডারেশনের প্রস্তাব পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক ফাতেমা রহমান।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, অভ্যুত্থানের পর সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছিল শিক্ষা খাতের সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া। একটা গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা দরকার, এ জন্য সংস্কার প্রয়োজন। সব শিশু যাতে ছাত্র হয়ে ওঠে, সে জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হলে বাজেট বরাদ্দ দরকার। ঠিক তেমনি সবাই মিলে গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থার আদল তৈরি করা দরকার। ক্ষমতার কুক্ষিগতকরণ রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও তার বাইরে নয়। অনতিবিলম্বে শিক্ষকদের জন্যে স্বতন্ত্র বেতন স্কেল গঠনের দাবি জানান তিনি।
সংলাপে লেখক ও শিক্ষক সফিক ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার, কিন্তু তা কোন কোন খাতে খরচ হচ্ছে, তার দিকেও আমাদের নজর রাখা দরকার। ছাত্র ফেডারেশন স্বল্প মেয়াদে ৪ শতাংশ ও দীর্ঘ মেয়াদে ৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার আবেদন করেছে। কিন্তু এ বরাদ্দগুলো কোন খাতে খরচ হবে, তা নিয়েও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, ‘শিক্ষা একটা রাজনৈতিক প্রকল্প, তাই আমাদের শিক্ষানীতির পলিটিক্যাল এজেন্ডা নির্ধারণ করতে হবে। আমরা স্বাধীনতার ৫৪ বছরে একটা অভিন্ন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে পারি নাই। শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করা হয়েছে। যার যেমন আয়-ব্যয়, সে সে রকম শিক্ষা পাচ্ছে। আমাদের এই পদ্ধতি বদলাতে হবে।’
সংলাপে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। ঢাকা, ১৫ মে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ত ব ব যবস থ বর দ দ আম দ র দরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।
বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।