দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টি আবাসিক হল ও একটি একাডেমিক ভবনের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এম জাহাঙ্গীর কবির স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি জানানো হয়।

অফিস আদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নামকরণ করা হয়েছে বিজয় ২৪ হল, তাজউদ্দীন আহমদ হলের নামকরণ হয়েছে শহীদ আবরার ফাহাদ হল, শেখ রাসেল হলের নামকরণ হয়েছে শহীদ নূর হোসেন হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নামকরণ হয়েছে বেগম রোকেয়া হল, আইভি রহমান হলের নামকরণ হয়েছে নবাব ফয়জুন্নেছা হল এবং ড.

এম ওয়াজেদ মিয়া ভবনের নামকরণ হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভবন।

এ ছাড়া শেখ সায়েরা খাতুন হলের নামকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার নামে। তবে নামকরণের প্রস্তাবটি খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের সম্মতি সাপেক্ষে চূড়ান্ত করা হবে বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৯তম রিজেন্ট বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। অফিস আদেশে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সম্পৃক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন হল ও ভবনের নাম পরিবর্তনের দাবি তোলেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করে। সেই কমিটি গুগল ফরম তৈরি করে সবার মধ্যে তা প্রচারসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করে। সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে এসব হল ও ভবনের নাম পরিবর্তন করে অনুমোদন দিয়ে সুপারিশের জন্য রিজেন্ট বোর্ডে উপস্থাপন করা হলে রিজেন্ট বোর্ড তা অনুমোদন করে।

বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার প্রফেসর এম জাহাঙ্গীর কবির বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসব হল ও ভবনের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে দাবি জানিয়ে আসছিলেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ড তা অনুমোদন করে। শেখ সায়েরা খাতুন হলের নাম খালেদা জিয়া রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁর পরিবারের সঙ্গে আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কোনো আপত্তি না থাকলে ওই হলের নাম খালেদা জিয়ার নামেই নামকরণ করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হল র ন ম

এছাড়াও পড়ুন:

উদ্বোধন হয়নি তিস্তা সেতু, অপেক্ষা আরো ২৩ দিন

পূর্ব নির্ধারিত সময়ের অন্তিম মুহূর্তে তিস্তা সেতুর  উদ্বোধন পেছানো হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বহুল প্রতিক্ষার এই সেতুটি শনিবার ২ আগস্ট উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিলেন গাইবান্ধা ও কুরিগ্রামের (হরিপুর-চিলমারী) লাখো মানুষ। নতুন সময় অনুযায়ী আগামী ২৫ আগস্ট এই সেতু উদ্বোধন করা হবে।

গত ৪ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী সেতুটি যান। তিনি সেতুটি জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে জুলাই মাসেই উদ্বোধন করার কথা বলেছিলেন। এরপর গত ১৩ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ শামীম বেপারী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ২ আগস্ট সেতুটি উদ্বোধনের বিষয়টি জানানো হয়।

আরো পড়ুন: চলতি মাসেই খুলতে পারে চিলমারী-হরিপুর ব্রিজ

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জের ঘটনায় সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করবে: সেতু উপদেষ্টা

চলতি মাসেই খুলতে পারে চিলমারী-হরিপুর ব্রিজ

সেতু উদ্বোধনের তারিখ পেছানো সম্পর্কে জানতে চাইলে রবিবার (৩ আগস্ট) এলজিইডির গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “আমাদের কাছে হঠাৎ নির্দেশনা এসেছে। আগস্ট মাস ঘিরে ওপর মহলে হয়তো ব্যস্ততা রয়েছে। সে কারণেও তারিখ পেছানো হতে পারে। ২৫ আগস্ট নতুন তারিখ নির্ধারন করা হয়েছে। এর বেশি আমার জানা নেই।”

সেতুটি চালু হলে শুধু দুই উপজেলার মানুষ নয়, গাইবান্ধা এবং কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা ও অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সেতুটি বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসা সংশ্লিষ্টরা।

তিস্তা সেতু বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলন করা শরিতুল্ল্যাহ মাস্টার বলেন, ‍“স্বপ্নের তিস্তা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় ছিলাম। তিস্তা সেতু (হরিপুর-চিলমারী) এবারো উদ্বোধন হলো না। ২ আগস্ট থেকে পিছিয়ে আগামী ২৫ আগস্ট সেতু উদ্বোধনের নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো উদ্বোধনের তারিখ পেছানো হলো।” 

তিনি আরো বলেন, “এই তিস্তা সেতু বাস্তবায়নের দাবিতে ১৯৯৫ সালে আমি একাই আন্দোলন শুরু করি। তখন মানুষ আমাকে অবজ্ঞা করত। তিস্তা সেতুর কথা কল্পনাও করতে পারেননি তারা। আমি উত্তরবঙ্গের মানুষের ভাগ্য বদলাতে এই আন্দোলন করেছি। নিজের স্বার্থের জন্য কিছু করিনি।” 

বারবার উদ্বোধনের তারিখ পেছানোয় আশাহত এবং ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাদের দাবি, এবার ২৫ আগস্ট তারিখটি যেন কোনোভাবেই পেছানো না হয়।

তিস্তা সেতুটি শরিতুল্ল্যাহ মাস্টারের নামে নামকরণের আন্দোলনের আহ্ববায়ক শামিম মন্ডল বলেন, “আমরা জানতাম ২ আগস্ট তিস্তা সেতু উদ্বোধন হবে এবং সেটি শরিতুল্ল্যাহ মাস্টারের নামে নামকরণ করা হবে। উদ্বোধনের আগে এবারো তারিখ পেছানো হলো।” 

তিনি আরো বলেন, “যে মানুষটি ৩০ বছর ধরে মানুষের বঞ্চনা সহ্য করে তিস্তা সেতুকে বাস্তবে রূপ দিলেন, আমরা এলাকাবাসী তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তার কারণেই উত্তরবঙ্গের অর্থনীতির চিত্র পাল্টে যাবে। আগামী ২৫ আগস্ট তিস্তা সেতুর উদ্বোধনের আগেই সেতুটির নাম পরিবর্তন করে শরিতুল্ল্যাহ মাস্টারের নামে নামকরণ করার জোর দাবি জানাই।”

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি নির্মিত হয়েছে সৌদি সরকারের অর্থায়নে, চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে। ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১,৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৯.৬ মিটার প্রস্থের পিসি গার্ডার সেতুটি বাস্তবায়নে সরাসরি তদারক করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। দেশের ইতিহাসে এটিই এলজিইডির সর্ববৃহৎ প্রকল্প।

সেতুটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে প্রায় ৮০ কিলোমিটার এক্সেস সড়ক। যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে ৫৮টি বক্স কালভার্ট ও ৯টি আরসিসি সেতু। বেলকা বাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, হাট লক্ষ্মীপুর, সাদুল্যাপুর ও ধাপেরহাটসহ অন্তত ১০টি বাজার ও মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে পুরো সুন্দরগঞ্জ ও চিলমারী অঞ্চল।

২০১৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। এরপর ২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর সেতুটি পরিদর্শনে আসেন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ। সে সময়ে তিনি চলতি বছরের মার্চে সেতুটি উদ্ধোধন হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২ আগস্ট উদ্বোধনের তারিখ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সেটি পিছিয়ে এখন আগামী ২৫ আগস্ট নির্ধারন করা হয়।

ঢাকা/মাসুম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উদ্বোধন হয়নি তিস্তা সেতু, অপেক্ষা আরো ২৩ দিন