সংসদের আগে স্থানীয় নির্বাচনের সুযোগ নেই: আব্দুস সালাম
Published: 20th, June 2025 GMT
‘ইশরাক হোসেন না থামলে সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হবে’ বিএনপিকে সরকারের দেওয়া এই বার্তার বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই স্থানীয় নির্বাচনের সুযোগ নেই।’
শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ীর প্রেমতলি গৌরাঙ্গবাড়ি পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড.
তিনি আরও বলেন, ইসরাক ইস্যুতে সরকারের বার্তা নিয়ে বিএনপি অবশ্যই তার বক্তব্য স্পষ্ট করবে।
নির্বাচনী প্রচারণায় পোস্টার ছাড়া বিলবোর্ড ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার যাতে না হয় সেদিকটা যেমন দেখতে হবে, তেমনি প্রচারণা যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।’
এর আগে গৌরাঙ্গবাড়িতে অনুষ্ঠিত সভায় আব্দুস সালাম বলেন, ‘ভারত কেন পুশইন করবে সেটা আমাদের প্রশ্ন। যদি কাউকে ফেরত পাঠাতেই হয় তাহলে তারা সরকারকে বলবে, তা না করে পুশইন করা ঠিক নয়।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বেশি হিন্দুদের জমি দখল করেছে। কোনো বিএনপি নেতা তাদের জমি দখল করেননি। কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে খ্রিস্টান, কে বৌদ্ধ এসব রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির বিবেচ্য না। বিএনপি সকল ধর্মের ও মতাদর্শের দল।’
এর আগে বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে ইশরাক ইস্যু বিএনপিকে একটি বার্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। মেয়র পদে শপথ পড়ানোর দাবিতে নগর ভবন অবরুদ্ধ করে রাখা ইশরাক হোসেন স্বেচ্ছায় সরে না গেলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের দিকে এগোবে সরকার- সভায় বিএনপিকে এই বার্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক উপদেষ্টা সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠকে ৯ জন উপদেষ্টা অংশ নিয়েছেন। সভায় নগর ভবন অচল করায় উপদেষ্টারা ইশরাকের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ ও বিরক্তি প্রকাশ করেন। একাধিক উপদেষ্টা সরকারপ্রধানকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দেন। বৈঠকে অর্থ, পরিকল্পনা, আইন, শিল্প, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, স্থানীয় সরকার, সংস্কৃতি উপদেষ্টাসহ ৯ জন অংশ নেন। একাধিক উপদেষ্টা সমকালকে বলেন, শপথ না নিয়েই মেয়রের ‘দায়িত্ব’ পালন করায় ইশরাকের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে আরও আলোচনা হতে পারে। কারণ, নাগরিকদের ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি দ্রুত সমাধান করতে বলেছেন। বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টাসহ সবাই বিরক্তি প্রকাশ করেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস জয়ী হন। তখন কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল বাতিলের দাবি জানিয়ে মামলা করেন বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন। গত ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ইশরাক হোসেনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে।
গত ২২ এপ্রিল আইন মন্ত্রণালয়ে পরামর্শ চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরামর্শ পাওয়ার আগেই ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে ইসি। আইন অনুযায়ী গেজেটের ৩০ দিনের মধ্যে শপথ পাঠ করানোর দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের।
মন্ত্রণালয় তখন জানায়, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী, মামলা দায়েরের পর আর্জি সংশোধনের সুযোগ নেই। কিন্তু ইশরাক গত বছরের সেপ্টেম্বরে তা করেছেন এবং ফল বাতিল নয়, তাঁকে জয়ী ঘোষণা করার আবেদন করেছেন।
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের সমালোচনা করে এনসিপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল দাবি করে, শেখ হাসিনার শাসনামলের অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে এর মাধ্যমে।
শপথ নিতে না পেরে ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা ‘ঢাকাবাসী’র ব্যানারে গত ১৪ মে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নেন এবং বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। তখন থেকেই সব নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। উপদেষ্টা, কর্মকর্তারাও নগর ভবনে প্রবেশ করতে পারছেন না। এরপর ইশরাক সমর্থকরা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ঘেরাও করে রাখেন তিন দিন। ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে জারি করা গেজেট বাতিল চেয়ে রিট হয়। হাইকোর্টের পর আপিল বিভাগও তা খারিজ করে দেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইশর ক হ স ন ব এনপ ইশর ক হ স ন নগর ভবন সরক র ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সরাসরি: ইরানের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশে ইরাকে হাজার হাজার মানুষের জমায়েত
ইরাকের রাজধানী বাগদাদের সাদর সিটিকে শুক্রবার (১৭ জুন) জুমার নামাজের পর হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে। ইরানের ওপর চলমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে তারা। অনলাইনে পোস্ট করা ফুটেজে এমনটাই দেখা গেছে।
সাদর সিটিকে ‘বিপ্লবের নগরী’ নামেও ডাকা হয। এটি মূলত বাগদাদের একটি উপশহর। এই এলাকার জনসংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি, যার বেশিরভাগই শিয়া মুসলিম।
এলাকাটি শিয়া জনপ্রিয় ধর্মীয় ও মিলিশিয়া নেতা মোকতাদা আল-সাদরের নামেই পরিচিত, যিনি ইরানের শাসক ধর্মীয় নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত।
আরো পড়ুন:
যত দ্রুত সম্ভব ট্রাম্পকে যুদ্ধে নামাতে চান নেতানিয়াহু: লেভি
যুক্তরাষ্ট্র-জার্মানি ১৪ বিমান ভরে সামরিক সরঞ্জাম দিয়েছে ইসরায়েলকে
এই জমায়েত ইঙ্গিত দেয় যে, ইরানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক হামলাগুলোর প্রতিবাদ শুধু ইরানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা আঞ্চলিক মাত্রা লাভ করেছে, বিশেষ করে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোতে।
১৩ জুন ভোরে ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর পাল্টা হামলায় নামে ইরান। উভয় দেশ হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির খুব কাছে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ তুলে দেশটিতে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইসরায়েল। অথচ আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কাছাকাছি পৌঁছানোর কোনো প্রমাণ তাদের কাছে নেই। অথচ এই অভিযোগে ইরানের ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার আছে বলে অভিযোগে ২০০৩ সালে হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। অথচ তেমন কোনো অস্ত্রই ছিল ইরাকে। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল ইরাক মডেলে ইরানে হামলা চালাচ্ছে, যার কোনো ভিত্তিই নেই।
ইরানি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ লিখেছে, জায়নবাদী শাসন ১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে একটি উস্কানিমূলক আগ্রাসী যুদ্ধ শুরু করে। তারা ইরানের পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যার ফলে বহু শীর্ষ সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক শহীদ হন।
ইরানি সামরিক বাহিনী তাত্ক্ষণিকভাবে পাল্টা হামলা শুরু করে। ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর মহাকাশ বিভাগ ২০ জুন পর্যন্ত “ট্রু প্রমিজ থ্রি” (সত্য প্রতিশ্রুতি-৩) অভিযানের অংশ হিসেবে ইহুদিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ১৬ দফায় পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
ঢাকা/রাসেল