ফ্যাসিবাদের দোসরদের তালিকা দেয়ালে দেয়ালে টাঙানো হবে: আলাল
Published: 20th, June 2025 GMT
ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে, যাদের তালিকা করে সারা দেশের দেয়ালে দেয়ালে টাঙিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
শুক্রবার (২০ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অপরাজেয় বাংলাদেশ আয়োজিত এক যুব সমাবেশে তিনি এ কথা জানান।
প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার দাবিতে এ সমাবেশ হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি নেতা আলাল বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে ফ্যাসিবাদের দোসর-জঞ্জালদের পরিষ্কার করতে হবে। তা না হলে বঙ্গভবন-ইউনিয়ন পরিষদ, গণভবন-সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড পর্যন্ত সব জায়গায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের তালিকা প্রকাশ করে দেওয়া হবে। সেই তালিকা জনসম্মুখে সাংবাদিকদের দেওয়া হবে। দেয়ালে দেয়ালে টাঙিয়ে দেওয়া হবে সারা বাংলাদেশে।”
তিনি বলেন, “কারা ফ্যাসিবাদের দোসর, কারা এখনো ঘাপটি মেরে দুর্নীতি করছেন, মানুষের অধিকার বঞ্চিত করছেন এবং যেখানে খুশি সেখানে ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন, তা আমরা জানি। সুতরাং সাবধান হয়ে যান। আমাদের যেন সেই শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে না হয়, সেই তালিকা দিতে না হয়। জুলাই-আগস্ট বিপ্লব পালনের সঙ্গে সঙ্গে যদি এই দাবি (ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা) পূরণ না হয়, তাহলে আমরা সত্যিকার অর্থে সেই তালিকা প্রকাশ করে দেব-ফ্যাসিবাদের দোসররা কোথায় এবং কোন পর্যায়ে রয়েছেন।”
আলাল বলেন, “এই সরকারের প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা দাপটের সঙ্গে রয়ে গেছে, তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়ে গেছে। মা-বোন, সন্তান হারিয়ে যাওয়া পরিবারগুলোকে তারা এখনো হুমকি দিচ্ছেন। গুম-খুন হওয়া পরিবারগুলোকে আইনের দ্বারস্থ হতে বাধা দিচ্ছেন।”
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “১০ মাস প্রায় শেষ হওয়ার পথে। আপনারা এখন পর্যন্ত তেমন কিছু জনগণকে দেখাতে পারেননি। পদে পদে মানুষকে হতাশ করেছেন। জিনিসপত্রের দাম কমেনি, গ্যাসের সংকট অনেক বেশি হয়েছে, লোডশেডিং বেড়েছে, পানি সরবরাহ আগের মতো সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন নেই, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আপনারা ত্রুটি করেছেন। ডেঙ্গু, করোনা, চিকুনগুনিয়া ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। কোথায় আপনাদের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা? কোথায় তার কর্মতৎপরতা? বাজারে গেলে মানুষ তার পকেটে হাত দিতে পারে না। মনে হয় পকেট ছিদ্র হয়ে সবকিছু পড়ে গেছে।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা বারবার করে বলেছি, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের বলেছেন-জনগণের সঙ্গে থাকুন এবং জনগণকে সঙ্গে রাখুন। আমরা জনগণের পাশে আছি বলেই নির্বাচনের কথা বলি। নির্বাচনের কথা বললেই আপনারা (উপদেষ্টা পরিষদ) গোসসা করেন। গোসসা করাটা তো ঠিক নয়। একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে মানুষ যখন-তখন যেতে পারে। যখন-তখন কৈফিয়ত চাইতে পারে। কিন্তু আপনাদের (উপদেষ্টা পরিষদ) কাছে যাওয়ার সেই সুযোগটা নেই। যেটুকু আছে, সেখানেও দেয়াল তৈরি করে রেখেছে স্বৈরাচারের দোসররা।”
নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া উল্লেখ করে আলাল বলেন, “একটা নতুন প্রজন্ম ২০১৪, ১৮ এবং ২৪ সালে নিজেদের অধিকার প্রদর্শন করতে পারেনি। তারা মুখিয়ে আছে একটি অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য। তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য মূলত আমরা নির্বাচনের কথা বলি।”
সংগঠনের সহ-সভাপতি এমএ আজাদ চয়নের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
ঢাকা/এম/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ য স ব দ র দ সরদ র র দ সরর উপদ ষ ট ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, শুক্রবারের হামলায় আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত
ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। স্থানীয় সময় শুক্রবার উপত্যকাটিতে আরও ৮২ জন নিহত হয়েছেন।
এরমধ্যে মধ্য গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ জন। তাদের ২৩ জন ত্রাণ আনতে গিয়ে দখলদারদের হাতে নিহত হয়েছেন। গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন আরও ২৩ জন। আর দক্ষিণ গাজায় প্রাণ গেছে ২২ জনের। এদের মধ্যে ১১ জন ত্রাণ আনতে গিয়েছিলেন।
এদিকে গাজা যুদ্ধ চলমান থাকায় টানা দ্বিতীয় বছরের মতো শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার কারণে ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করেছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলে শিশুদের ওপর সহিংসতা ‘চরম মাত্রায়’ পৌঁছেছে। এর মধ্যে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
‘সশস্ত্র সংঘাতে শিশু’বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিশ্বব্যাপী শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৪ সালে মোট ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতা যাচাই করে দেখা গেছে, এর মধ্যে শিশুদের হত্যা, শারীরিকভাবে আহত করা, যৌন সহিংসতা এবং স্কুল-হাসপাতালে হামলার মতো ঘটনা রয়েছে।
এর মধ্যে শুধু ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। এই সংখ্যা অনুযায়ী, গাজায় গত এক বছরে ১ হাজার ২৫৯ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে এবং ৯৪১ জন আহত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিহত শিশুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে গাজায় আরও ৪ হাজার ৪৭০ শিশু নিহতের তথ্য যাচাই চলছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৯৭ ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যুর তথ্যও নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। সেখানে ৩ হাজার ৬৮৮টি শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা