থানায় প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা: রাজশাহীতে এইচএসসির একটি প্রশ্নপত্র বাতিল, দুই পুলিশকে প্রত্যাহার
Published: 21st, June 2025 GMT
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের অধীন আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র বাতিল করা হয়েছে। নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত প্রশ্নপত্রের ট্রাংক খোলা অবস্থায় পাওয়া যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম বলেন, থানার ভল্ট বা মালখানায় প্রশ্নপত্র সংরক্ষণের কথা। কিন্তু সেগুলো হাজতে রাখা এবং সেখানে আসামি থাকার বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
ঘটনার পরপরই থানা–হাজতের দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) ও এক কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাতে ধামইরহাট থানার হাজতে থাকা এক আসামি ট্রাংকের সিলগালা উঠিয়ে তালা খুলে ফেলেন। এরপর ট্রাংকের ভেতরে থাকা প্যাকেটবন্দী প্রশ্নপত্র বের করে সেগুলো ছড়িয়ে ফেলেন এবং কয়েকটি ছিঁড়ে ফেলেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার বলেন, প্রশ্নপত্রের ট্রাংক সিলগালা ও তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। আসামির এক হাতে হাতকড়া থাকলেও অন্য হাত খোলা ছিল। তিনি নখ দিয়ে সিলগালা খুলে ফেলেন এবং তালা খোলেন। এরপর প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে রাখেন এবং কিছু ছিঁড়ে ফেলেন। সিসিটিভি ফুটেজে এসব দেখা গেছে।
জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিন জানান, ওই প্যাকেটে ৫০টি প্রশ্নপত্র ছিল। সব কটিই উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েকটি ছেঁড়া থাকলেও কোনো প্রশ্নপত্র হারায়নি।
আরও পড়ুননওগাঁয় থানা হেফাজতে থাকা এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ‘ফাঁস’, তদন্ত কমিটি গঠন১৬ ঘণ্টা আগেঘটনার তদন্তে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের একটি দল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এই ঘটনায় সরকারি সম্পদ বিনষ্টের অভিযোগে ওই আসামির বিরুদ্ধে নতুন একটি মামলা হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রাজশাহী বোর্ড জানিয়েছে, আগামী ১৯ জুলাই অনুষ্ঠেয় ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষাটি বিভাগের আট জেলায় বিকল্প প্রশ্নপত্রে নেওয়া হবে। এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে ২৬ জুন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
রাতে এক ঘণ্টার ব্যবধানে সাভার-ধামরাইয়ে দুই বাসে আগুন
ঢাকার ধামরাই ও সাভার উপজেলায় রাতে প্রায় এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।
রোববার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে দুটি মোটরসাইকেলে তিনজন ব্যক্তি এসে ডি–লিংক পরিবহনের পার্ক করা একটি বাসের পেছনের জানালা ভেঙে ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন পানি ও বালু ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। আগুনে বাসের ভেতরের অধিকাংশ আসন পুড়ে গেছে।
নৈশপ্রহরী ফারুক বলেন, তিনজন এসে প্রথমে বাসে ইট মারে। পরে গানপাউডার দিয়ে আগুন লাগিয়ে দ্রুত চলে যায়। এরপর উপজেলা সড়কের দিকে পালিয়ে যায়।
ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন অফিসার মো. সোহেল রানা জানান, রাত ১০টা ১৫ মিনিটে সংবাদ পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বাসের ভেতরে পেছন দিক থেকে আগুন লাগানো হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এতে গানপাউডার ব্যবহার করা হয়েছে।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, পার্ক করা বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তে কাজ চলছে।
এর প্রায় আধা ঘণ্টা পর সাভারের বিরুলিয়া বেড়িবাঁধসংলগ্ন বটতলা এলাকায় অন্য একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সাভার মডেল থানার পুলিশ জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে আলিফ পরিবহনের বাসটি পার্ক করে বাড়িতে খাবার খেতে যান মালিক আমজাদ হোসেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে আগুন লাগার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আগুন নেভান।
আমজাদ হোসেন বলেন, পুরো বাসটাই পুড়ে গেছে। এতে অন্তত পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল ওয়াহাব বলেন, বাসের মালিক নিজেই চালক। ঋণ করে বাসটি কেনা হয়েছিল। রাতে বাসটি রেখে তিনি খাবার খেতে যান। পার্ক করা বাসে কে বা কারা আগুন দিয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।