অনেকেই খাওয়ার পর পর পানি খেতে চান না ওজন বাড়ার ভয়ে। যারা ওজন কমাতে চান তারা এই অভ্যাসটি উন্নত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। কিন্তু খাওয়ার পরপরই পানি পান করলে আসলেই কি স্থূলতা বৃদ্ধি পায় নাকি এটিও কেবল একটি মিথ? আয়ুর্বেদ এবং আধুনিক বিজ্ঞানে এ নিয়ে আছে আলাদা ব্যাখ্যা।
ভারতীয় গণমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইমসে’র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, খাওয়ার পরপরই পানি পান করলে ওজন বাড়ে না। বৈজ্ঞানিকভাবে দেখলে, পানির নিজস্ব কোনও ক্যালোরি থাকে না, যার ফলে এটি সরাসরি ওজন বৃদ্ধি করে না। তবে, খাওয়ার পরপরই যদি প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা হয় তাহলে এটি হজম রসকে পাতলা করে দেয়, যার কারণে খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। এর ফলে, কখনও কখনও পেটে ভারী ভাব এবং ফোলাভাব দেখা দেয়, যা ওজন বাড়ার সাথে যুক্ত। আয়ুর্বেদ চিকিৎসা অনুযায়ী,খাওয়ার পরপরই পানি পান করা এড়িয়ে চলা উচিত। এক বা দুই চুমুকের বেশি পানি পান করলে পেটের স্বাস্থ্য দুর্বল হয়ে যায়। এর ফলে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। পাশাপাশি শরীরে বিষাক্ত পদার্থও তৈরি হতে শুরু করে। এ কারণে আয়ুর্বেদে খাওয়ার পরপরই এক বা দুই চুমুকের বেশি পানি পান না করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বরং খাওয়ার পর পর হালকা গরম পানি বা জিরা পানি পান করা ভালো, কারণ এগুলো হজমে সাহায্য করে।
সব মিলিয়ে খাওয়ার পরপরই পানি পান করলে সরাসরি ওজন বাড়ে না বরং আরও অনেক সমস্যা হতে পারে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা খাওয়ার অন্তত আধা ঘন্টা পর সঠিক পরিমাণে পানি পান করার পরাশর্শ দেন। ওজন নিয়ন্ত্রণের কথা বলতে গেলে, বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে খাওয়ার প্রায় আধা ঘন্টা আগে এক গ্লাস পানি পান করা উচিত। এটি আপনাকে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত রাখে। সেই সঙ্গে আপনার হজমশক্তিও উন্নত করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র পরপরই প ন প ন করল প ন কর ওজন ব
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে চাইল্ড ল্যাবরেটরি স্কুলের বার্ষিক পুরস্কার ও সনদ বিতরণ
নারায়ণগঞ্জে চাইল্ড ল্যাবরেটরি স্কুলের বার্ষিক পুরস্কার ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠান উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি ছিল শিক্ষার্থীদের সাফল্য উদযাপন ও তাদের অনুপ্রেরণা জাগানোর এক উজ্জ্বল আয়োজন।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অর্জিত পুরস্কার ও সনদপত্র। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও কর্মচারীদের মাঝে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৩১৪ টি পুরস্কার দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানের সূচনাতেই শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি ও নাটিকা দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলে। ক্ষুদে শিল্পীদের প্রাণবন্ত পরিবেশনায় মিলনায়তনে তৈরি হয় এক মনোরম আবহ। কখনও দেশের গান, কখনও নৃত্য, আবার কখনও আবৃত্তি—প্রতিটি পর্বেই ছিল শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা। অভিভাবকরাও মুগ্ধ হয়ে হাততালি আর উৎসাহে ভরিয়ে দেন প্রিয় সন্তানদের।
পুরো অনুষ্ঠানজুড়ে ছিল অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। কেউ ছবি তুলেছেন, কেউ সন্তানকে সাজাতে সাহায্য করেছেন, কেউবা নীরবে গর্বভরে দেখেছেন মঞ্চে তাদের প্রিয় মুখ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ১২২ জন শিক্ষার্থী এবং বিদ্যালয়ের সেরা শিক্ষক পুরষ্কার পান ৬ জন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট বিল্লাল হোসেন রবিন।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করে তিনি বলেন, “শিশুদের এই আনন্দ, আত্মবিশ্বাস আর মঞ্চে নিজেকে প্রকাশের ক্ষমতাই প্রমাণ করে—তারা কতটা সম্ভাবনাময়। শিক্ষা শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ নয়; শিল্প-সংস্কৃতি শিশুর মানসিক বিকাশের অপরিহার্য অংশ।”
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাচ্চাকে অন্য কারো সঙ্গে তুলনা করবেন না। প্রত্যেক বাচ্চার নিজস্ব প্রতিভা ও দক্ষতা থাকে কেউ চমৎকার ছবি আঁকে, কেউ গান করে, কেউ নাচ বা কিছু তৈরি করতে পারে।
এজন্য প্রতিটি শিশুকে আলাদাভাবে বোঝা এবং উৎসাহ দেওয়াই গুরুত্বপূর্ণ। মা-বাবা বা শিক্ষকরা শুধুই গাইড বা পথপ্রদর্শক হিসেবে থাকবেন; চাপ বা শাস্তির মাধ্যমে নয়, ভালোবাসা ও সহানুভূতির মাধ্যমে শিশুদের এগোতে শেখাতে হবে।
প্রতিটি শিশুর আলাদা দক্ষতা আছে এবং তাদের সেই অনুযায়ী উৎসাহ ও নির্দেশনা দেওয়া উচিত, যাতে তারা স্বাভাবিকভাবে বড় হতে পারে এবং নিজের শক্তি ও সম্ভাবনা অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারে।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পর শুরু হয় প্রতীক্ষিত পুরস্কার বিতরণ পর্ব। একে একে মঞ্চে উঠে আসে মেধাবী শিক্ষার্থীরা। বছরের সেরা ফলাফল, সহশিক্ষা কার্যক্রমে কৃতিত্ব ও সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় সফল শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা। শিক্ষার্থীদের মুখে ঝলমল করছিল আনন্দের হাসি; অভিভাবকরা মোবাইল হাতে ধরে রাখছিলেন সন্তানের সাফল্যের মুহূর্তগুলো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চাইল্ড ল্যাবরেটরি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ সামসুজ্জামান। তিনি বলেন,“চাইল্ড ল্যাবরেটরি স্কুল শুধুমাত্র একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়, এটি আমাদের শিশুদের স্বপ্ন গড়ে তোলার এক কেন্দ্র। আমরা চাই প্রতিটি শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি সৎ, দেশপ্রেমিক ও সংস্কৃতিমনা মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠুক।”
বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা বিলকিস আক্তার বৈশাখী ও কাশফিয়া মেহজাবীন ইকরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদ (নারায়ণগঞ্জ জেলা) সভাপতি ও টাঙ্গাইল ক্যাডেট এন্ড একাডেমিক স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ সাখাওয়াত হোসেন খাঁন, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ কাউসার আহমেদ, রাজিয়া এ্যাপালেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলহাজ্ব মোঃ গোলাম মোস্তফা খান, ক্যালিক্স প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক মতিনুল ইসলাম মতিন, এবং শাহিনুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মোঃ আরিফ হোসেন ঢালী। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন বিদ্যালয়ের ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহান।