নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার করতে হবে: হেফাজত
Published: 25th, June 2025 GMT
নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যাসহ প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষী, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনা সংরক্ষণ, রাষ্ট্র-সংস্কারের গণ-আকাঙ্ক্ষা সুসংহতকরণ এবং জাতীয় ঐকমত্য গঠনকল্পে অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। সেইসাথে নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বরে আলেম ওলামা হত্যাকাণ্ড ও জুলাই গণহত্যাসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। এর অন্যথা হলে ড.
আজিজুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বুঝতে হবে, এখনো বিছানায় কাতরাচ্ছে পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করা হাজার হাজার আহত শাপলা ও জুলাই-যোদ্ধা। অগণিত শহীদের রক্তের ফসল জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে জবাব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শাপলা চত্বরের রক্তাক্ত ইতিহাসের পথ বেয়ে জুলাই বিপ্লব আমাদের জাতীয় জীবনে হাজির হয়েছে। জুলাই বিপ্লব চলমান প্রক্রিয়া। জুলাইকে বিস্মৃত হতে দেওয়া যাবে না। জুলাই বিপ্লবের সাথে গাদ্দারি করে জনসমর্থন ধরে রাখা যাবে না। এদেশে যারাই ভারতীয় আধিপত্যবাদের গোলামি করবে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিবে, মাফিয়াতন্ত্র জারি রাখবে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে জুলাইর গণপ্রতিরোধের চেতনা বারবার ফিরে আসবে। দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে ছাত্র-জনতা আবারও রাজপথে নামতে বিলম্ব করবে না। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ফেরাউন পারেনি; হাসিনাও পারেনি। ভবিষ্যত ক্ষমতাসীনদের এই ঐতিহাসিক শিক্ষা ধারণ করতে হবে।
মাওলানা ইসলামাবাদী বলেন, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি কাঠামোগত সংস্কার। ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার জন্ম দেওয়া বিদ্যমান রাষ্ট্র-কাঠামোর বিলোপ ও পুনর্নির্মাণের মধ্যেই বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যত পরিদৃষ্ট। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এনে দিয়েছে। গণহত্যার বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন. প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র-সংস্কারের মৌলিক কাজগুলো আরও বেগবান করতে হবে। ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থের চেয়ে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায় আত্মনিবেদিত হওয়ার মধ্যেই মাহাত্ম্য নিহিত। আর সংস্কারকাজে অবশ্যই ইসলামবিরোধী অপশক্তির ফাঁদ ও কু-মন্ত্রণা এড়িয়ে যেতে হবে। সংবিধানের মূলনীতি থেকে বহুত্ববাদ বাদ দিতে হবে। কুরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন বাতিল করতে হবে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠির ধর্ম, সভ্যতা সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের আলোকে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য জ ল ই অভ য ত থ ন শ পল গণহত য ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জ
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুসহ ৩৭ ইসরায়েলি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘গাজায় গণহত্যার’ অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক।
শনিবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
আরো পড়ুন:
আরো ৩ ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও গাজায় হামলা, ৭৫ শতাংশ ত্রাণ প্রবেশে বাধা
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (৭ নভেম্বর) ইস্তাম্বুলের প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই খবর জানানো হয়।
এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির তালিকায় মোট ৩৭ জন সন্দেহভাজন রয়েছেন। যদিও ইস্তাম্বুলের প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের বিবৃতিতে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হয়নি, তবে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ, জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির এবং সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির।
তুরস্ক ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীসহ ৩৭ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ’ করার অভিযোগ এনেছে, যা ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ‘পরিকল্পিতভাবে’ চালিয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েল তুরস্কের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের ‘রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ বা পিআর কৌশল’।
তিনি বলেন, “ইসরায়েল অত্যাচারী এরদোগানের সর্বশেষ জনসংযোগ স্টান্টকে ঘৃণার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছে।”
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস তুরস্কের পদক্ষেপকে ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। হামাস এক বিবৃতিতে “এটিকে তুর্কি জনগণ এবং তাদের নেতাদের আন্তরিক অবস্থানের (প্রশংসনীয়) পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে, যারা ন্যায়বিচার, মানবতা এবং ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা তাদেরকে আমাদের নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে আবদ্ধ করে।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় ‘যুদ্ধাপরাধ’-এর অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার প্রায় এক বছর পর তুরস্কের এই ঘোষণা এসেছে।
গত বছর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে দক্ষিণ আফ্রিকার মামলায় তুরস্কও যোগ দিয়েছে।
গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধে কমপক্ষে ৬৮ হাজার ৮৭৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৭৯ জন আহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ