বান্দরবানে রিসোর্টের ব্যবস্থাপককে অপহরণের অভিযোগে আটক ৩
Published: 26th, June 2025 GMT
বান্দরবানের লামা উপজেলায় রিসোর্টের ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে তিনজনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুর ৩টার দিকে লামা উপজেলার বাগান পাড়া থেকে তাদেরকে আটক করেন এলাকাবাসী।
আটক তিনজন হলেন—রুমা উপজেলার বগা লেক পুকুর পাড়ার নুথিয় ত্রিপুরার ছেলে রহিম ত্রিপুরা (৩৮), লামার বাগান পাড়ার মনিন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে তানিয়াল ত্রিপুরা (৩৬) এবং থানচি বড় মদক এলাকার মেথিয় ত্রিপুরার ছেলে হালি রাম ত্রিপুরা (৩১)।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বুধবার (২৫ জুন) রাতে লামার মিরিঞ্জা এলাকায় প্যারাডাইস রিসোর্ট থেকে ব্যবস্থাপক আবদুল খালেককে (২০) অপহরণ করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। অপহরণকারীরা ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তবে, আবদুল খালেক কৌশলে পালিয়ে এসে স্থানীয়দের বিষয়টি জানান। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এলাকাবাসী বাগান পাড়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিন অপহরণকারীকে আটক করেন। স্থানীয়রা ওই তিনজনকে ইয়াংছা সেনা ক্যাম্পে সোপর্দ করেন। সেনাবাহিনী অপহরণকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশে হস্তান্তর করে।
লামা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এনামুল হক বলেন, রিসোর্টের ম্যানেজারকে অপহরণের বিষয়টি আগে কেউ জানায়নি। দুপুর ৩টার দিকে তিনজনকে আটক করার পর বিষয়টি জানতে পারি। তাদের কাছ থেকে প্যারাডাইস রিসোর্ট থেকে ছিনতাই করা দুটি মোবাইল ফোন এবং একটি কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে। অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/চাইমং/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণক র ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
গোয়ালন্দে বেড়াতে আসা তরুণী ও কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ৩
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বেড়াতে এসে এক তরুণী (২০) ও এক কিশোরী (১৫) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা। আজ শুক্রবার গোয়ালন্দ থানায় হওয়া মামলায় সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।
দুজনকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা হলেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার বিল মামুদপুর গ্রামের ফয়সাল শেখ (২২), গোয়ালন্দ উপজেলার পূর্ব উজানচর দরাপের ডাঙ্গী গ্রামের রাকিব মোল্লা (২১) ও উজানচর গণি শেখের পাড়ার সজীব মোল্লা (২৪)। আজ বিকেলে তিন আসামিকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী তরুণী ফরিদপুরের একটি সরকারি কলেজ থেকে চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। আগামী রোববার তাঁর পরীক্ষা রয়েছে। আর কিশোরী শহরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তাঁরা সম্পর্কে খালা ও ভাগ্নি।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তরুণী কলেজে যাতায়াতকালে ফয়সাল তাঁকে উত্ত্যক্ত করতেন। কয়েক মাস আগে তরুণীর বাবা ফয়সালের বাবার কাছে বিচার দেন। এতে ফয়সাল আরও বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরবর্তী সময় ফয়সাল অন্যত্র বিয়ে করেন। বিয়ের পরও মাঝেমধ্যে তরুণীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। ফয়সাল গোয়ালন্দের গোধূলি পার্কসংলগ্ন একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করেন।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে ফয়সাল ওই তরুণীকে ফোন করে গোধূলি পার্কে বেড়াতে আসার প্রস্তাব দেন। ওই তরুণী তাঁর প্রতিবেশী ভাগ্নি ও এক বন্ধুকে নিয়ে বিকেলে গোধূলি পার্কে আসেন। সন্ধ্যার দিকে অজ্ঞাতনামা চার থেকে পাঁচজন তরুণ এসে এই তিনজনকে পার্কের ভেতর স্থানীয় এক বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের দুটি মুঠোফোন এবং পাঁচ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। সন্ধ্যার পর ফয়সাল তাঁদের এগিয়ে দেওয়ার কথা বলে কৌশলে দেরি করাতে থাকেন। পরে রাত ৯টার দিকে উজানচর রিয়াজ উদ্দিনপাড়ার একটি কাঁচা রাস্তায় নিয়ে যান। সেখানে ফয়সালের সহযোগিতায় অজ্ঞাত পাঁচ থেকে ছয়জন মিলে ওই তরুণী ও কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এ কথা কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। পরে তরুণীরা দৌড়ে স্থানীয় এক বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
আজ দুপুরে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা রায়হান মোল্লার সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কান্না করতে করতে দুটি মেয়ে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় দৌড়ে তাঁর বাড়িতে এসে আশ্রয় নেন। তাঁদের কাছ থেকে ঘটনা জানার পর ওই তরুণীর বাবাকে জানানো হয়। তিনি দিবাগত রাত ১২টার দিকে এসে তাঁদের নিয়ে যান।
এদিকে ঘটনার দুই দিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে উজানচর আবুলের দোকান নামক এলাকায় ফয়সালের সহযোগিতায় স্থানীয় লোকজন ধর্ষণে অভিযুক্ত রাকিব ও সবুজকে ধরে মারপিট করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রাকিব ও সবুজ এবং পাশে পালিয়ে থাকা ফয়সালকেও গ্রেপ্তার করে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, তরুণীর বাবা বাদী হয়ে আজ গ্রেপ্তার তিনজনসহ সাতজনকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। তিন আসামিকে বেলা তিনটার দিকে রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে জবানবন্দি প্রদানের জন্য ভুক্তভোগী ব্যক্তিদেরও আদালতে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল শনিবার তাঁদের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে।