নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনসংক্রান্ত মালামাল ক্রয় সম্পন্ন করবে ইসি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনসামগ্রী ক্রয় করার ব্যাপারে আমরা টেন্ডার আহ্বান করেছি। একটি টেন্ডার রি-টেন্ডার হবে। আমরা চেষ্টা করছি সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনসংক্রান্ত মালামাল ক্রয় সম্পন্ন করতে।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচন ভবনে ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সমস্ত দাপ্তরিক আলোচনাই এখন নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পর্কিত। প্রস্তুতি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটাকে কোনো একটি টাইমলাইনে ফিট করলে ভুল হবে।’

ইসি সচিব জানান, ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তাতে নির্বাচনের আগে কোন সময় পর্যন্ত ভোটার তালিকায় ভোটারের নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে, তা ‘যৌক্তিক বিবেচনায়’ নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে, এমন বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি বলেন, যৌক্তিক বিবেচনাটা কিসের ভিত্তিতে হবে, এটা কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। তবে স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন কবে হবে, এর আগে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা—এ বিষয়গুলো বিবেচনা করে কাট অফ পয়েন্ট (নির্বাচনের আগে ভোটার হওয়ার শেষ সময়) ঠিক করা হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম চলছে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, হালনাগাদের তথ্য নিয়ে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হবে আগামী ২ জানুয়ারি। আর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করতে হবে ২ মার্চ। এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হলে চলমান হালনাগাদে তালিকাভুক্তরা ভোট দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে জটিলতা আছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, আইনে সংশোধনী আনা হলে এ–সংক্রান্ত জটিলতা থাকবে না। নির্বাচনের তফসিলের আগে একটি নির্দিষ্ট সময় ইসি নির্ধারণ করে দেবে। ওই সময়ের মধ্যে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী যাঁরা ভোটার তালিকাভুক্ত হবেন, তাঁরা ভোট দিতে পারবেন।

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়েও কাজ এগিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে ইসি সচিব সাংবাদিকদের জানান, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে কাজ চলছে। এখন পর্যন্ত ৭৬টি আসনের বিষয়ে ইসি আবেদন পেয়েছে। এখানে একই আসনে বর্তমান সীমানা রাখার পক্ষে–বিপক্ষে একাধিক আবেদনও আছে। এগুলো পর্যালোচনা করে জনসংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান, প্রশাসনিক সীমানা এগুলো বিবেচনায় নিয়ে যেগুলো যৌক্তিক মনে হবে, ইসি সেটাই করবে। এটি পর্যালোচনা পর্যায়ে আছে। তবে এ কাজ তাঁরা তাড়াতাড়ি শেষ করতে চান। ৩০০ আসনের সীমানাই পুনর্বিবেচনা করা হবে কি না, তা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের জন্য ১৪৭টি আবেদন পাওয়া গেছে। এর মধ্যে তিনটি দল দুবার আবেদন করেছে। আবেদনগুলো প্রাথমিক বাছাইয়ের কাজ চলছে বলে জানান ইসি সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, ইসি রাজনৈতিক দলের জন্য প্রতীকের সংখ্যা বাড়াবে। মোট কতটি প্রতীক থাকবে এবং সেগুলো কী কী হবে, সে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন। কোন প্রতীক থাকবে, তা এখন তাঁর পক্ষে বলা সম্ভব নয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত আসন র

এছাড়াও পড়ুন:

দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার

দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।

পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ