বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে নিখোঁজ, ৪০ ঘণ্টা পর মেঘনায় ভেসে উঠল কিশোরের লাশ
Published: 27th, June 2025 GMT
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মেঘনা নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসলে নেমে নিখোঁজের ৪০ ঘণ্টা পর সিয়াম মিয়া (১৬) নামের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ফকিরেরচর এলাকায় নদী পাড়ে তার লাশটি ভেসে ওঠে। পরে সকাল ৮টার দিকে স্থানীয় লোকজন লাশটিকে তীরে তুলে আনেন।
এর আগে গত বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার পান্থশালা ফেরিঘাট এলাকার মেঘনা নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ হয় সিয়াম। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ও রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর এলাকার জুনায়েদ মিয়ার একমাত্র ছেলে।
সিয়ামের কয়েকজন বন্ধু জানায়, বুধবার দুপুরে তারা ১১ বন্ধু মিলে পান্থশালা ফেরিঘাটে গোসল করতে নামে। একপর্যায়ে তাদের কয়েকজন ফেরিঘাটের জেটির ওপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দেয়। সিয়াম সাঁতার জানত না। তবু বন্ধুদের দেখাদেখি সে ঝাঁপ দেয় এবং তীব্র স্রোতের তোড়ে পানিতে ভেসে যায়। একপর্যায়ে নদীতে তলিয়ে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সিয়ামের নিখোঁজের খবরে ওই দিন বিকেল ৪টা থেকে রায়পুরা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। গতকাল দিনভর অভিযানে যুক্ত হয় টঙ্গী থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে অভিযানটি সমাপ্ত ঘোষণা হয়। আজ সকালে লাশটি ভেসে উঠলে সিয়ামের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ জানান, পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিয়ামের লাশটি ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
২৬ টুকরো লাশ উদ্ধার: প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ২
ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছ থেকে দুটো ড্রামের ভেতর থেকে ব্যবসায়ী আশরাফুলের মরদেহের ২৬ টুকরো উদ্ধারের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন, আশরাফুলের বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার।
কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে জরেজুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার ডিবি পুলিশ। আর শামীমাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে ডিএমপি গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মিন্টু রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন ডিবি প্রধান।
অন্যদিকে, খুদে বার্তায় শুক্রবার রাতে র্যাব সদরদপ্তর থেকে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পরকীয়ার কারণে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
শুক্রবার নিহত আশরাফুল হকের বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় জরেজুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত আশরাফুল হক (৪৩) দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল ও মালায়েশিয়াপ্রবাসী জরেজুল বাল্যবন্ধু। তাদের বাড়ি রংপুরের একই গ্রামে। তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘বিগো লাইভে’ কুমিল্লার এক প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা আক্তারের সঙ্গে জরেজুলের পরিচয় হয়। শামীমা দুই সন্তান নিয়ে কুমিল্লায় বসবাস করেন। একপর্যায়ে জরেজুল ও শামীমা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। জরেজুল মাঝেমধ্যেই মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসতেন এবং শামীমার সঙ্গে সময় কাটাতেন। এই সম্পর্কের কথা জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে জানিয়েছিলেন। একসময় জরেজুলের কাছ থেকে আশরাফুল শামীমার ফোন নম্বর নেন। তিনিও শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের মধ্যে দুজনের মধ্যেও সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর জরেজুল মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ দনিয়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। ওই বাসায় তিনি শামীমাকে নিয়ে ওঠেন। শামীমা তার দুই সন্তানকে কুমিল্লায় রেখে আসেন। গত মঙ্গলবার জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় আসেন। একপর্যায়ে জরেজুল বুঝতে পারেন, শামীমার সঙ্গে আশরাফুল সম্পর্কে জড়িয়েছেন।
এ ঘটনার জেরে আশরাফুলকে হত্যা করা হয় এবং লাশ গুমের জন্য ২৬ টুকরো করে দুটি নীল রঙের ড্রামের ভেতর ভরে হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে ফেলে দেওয়া হয় বলে ডিবি পুলিশ জানায়। নিহতের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
ঢাকা/এমআর/ইভা