বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) তাপসী রাবেয়া হলে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে র‍্যাগিংয়ের দায়ে তিন নারী শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে হল থেকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও দুজন ছাত্রীকে আর্থিক জরিমানাসহ সতর্ক করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স ফর স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিনের ৭ নং ধারা অনুযায়ী এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেছেন হলটির প্রোভোস্ট ড.

ইসরাত জাহান শেলী।

বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হেলাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

কৃষি অনুষদের মারিয়া সুলতানা মীমকে এক বছরের জন্য হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও একই অনুষদের শিক্ষার্থী জোবায়দা জান্নাত সোহা ও আশিকা রুশদাকে ৬ মাসের জন্য হল থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর্থিক জরিমানায় দণ্ডিত দুই শিক্ষার্থী হলেন তাজরিয়ান হাসান তূর্ণা ও শাহারা শারমিন লিজা। 

প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইসরাত জাহান শেলী সমকালকে জানান, গত ৩১ মে দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে কৃষি অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাসনোভা হককে র‍্যাগিংয়ের উদ্দেশে ওই তিন শিক্ষার্থী হলের ছাদে ডেকেছিলেন। তাসনোভা ছাদে যেতে রাজি না হলে তাকে বারান্দায় ডেকে নিয়ে রাত সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দীর্ঘক্ষণ ধরে মানসিক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরেরদিন সকালে তাসনোভা হক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।

হল প্রশাসন জানিয়েছে, শাস্তি শেষ হওয়ার পর বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলের ফাঁকা আসনের বিপরীতে আবেদন করে পুনরায় হলে ওঠার সুযোগ পাবেন। তবে হল প্রশাসন তাদের জন্য আসনের ব্যবস্থা করে দিতে বাধ্য থাকবে না। 

প্রোভোস্ট আরও জানিয়েছেন, আজ সকালে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের হাতে চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আগামীকালের মধ্যে তারা হল ত্যাগ করবেন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

টাকা ও ক্ষমতা ব্যবহার করে দল গড়া মানুষ দেখতে চায় না: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছে, ‘গণ–অভ্যুত্থানের পর মানুষ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সত্যিকার নেতৃত্ব দেখতে চায়। টাকা ও ক্ষমতা ব্যবহার করে দল গড়া মানুষ দেখতে চায় না। এমনকি যাঁরা আজকের তুর্কি–তরুণ, তাঁরাও অনেকে এই গড্ডালিকায় গা ভাসাবেন, এমনটা আশা করেনি কেউ। মানুষ ভরসা রাখতে চায়।’

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জুলাই স্মৃতি হলে শ্রমিকনেতা ‘প্রয়াত মির্জা আবুল বশর স্মরণসভায়’ প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন।

সভায় তিনি সংবিধানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কার বিষয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নিয়ে সবাই এখনো ঐকমত্য হতে না পারলেও অগ্রগতির জায়গা রয়েছে। আবার কিছু মতপার্থক্যও আছে। অগ্রগতির দিকটা ছোট করার কিছু নেই। আবার যেসব বিষয়ে পার্থক্য আছে, যেসব বিষয়কে এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জরুরি এবং অপরিহার্য মনে করি, সেসব বিষয় বাস্তবায়নের জন্য লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে। মানুষ সে লড়াই চায়। মানুষ চায়, তাদের রক্তের বিনিময়ে এ দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক।’

গণ–অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, গণ-অভ্যুত্থান শেষ হয়ে যায়নি। এ দেশে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংস্কার হবে, এমনটা কেউ ভাবেনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একজীবনে ১০ বছরের বেশি কেউ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, সংসদের উচ্চকক্ষের গঠনপ্রকৃতি কী হবে, বিচার বিভাগ স্বাধীন কীভাবে হবে, এমন নানা বিষয়ে ঐকমত্য হচ্ছে।

মির্জা আবুল বশর স্মৃতি পরিষদ এ স্মরণসভার আয়োজন করে। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ৬৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন চট্টগ্রাম জেলা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রাম জেলার যুগ্ম নির্বাহী সমন্বয়কারী মির্জা আবুল বশর। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতেই এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে মির্জা আবুল বশরের রাজনৈতিক দর্শন ও কর্মপ্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, মির্জা আবুল বশর অত্যন্ত সৎ ও প্রজ্ঞাবান নেতা ছিলেন। মেহনতি মানুষের জন্য আমৃত্যু লড়াই করেছেন তিনি। অনেকে অনেক পেশা নেন, জীবনের ব্রত নেন, কর্তব্য ঠিক করেন। পরিবর্তনের জন্য কাজ করেন। এই কর্তব্য পালনের ডাকে আজকের তরুণেরা সাড়া দেবেন। তাঁরা টাকা কিংবা ক্ষমতার দাপটের কাছে পরাজিত হবেন না, বরং সেটাকে মোকাবিলা করে টিকে থাকবেন।

স্মরণসভায় ছাত্র, পেশাজীবী, শ্রমিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন মির্জা আবুল বশরের আত্মীয়স্বজন। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় শুরু হওয়া এ সভা শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। সভার সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রামের আহ্বায়ক হাসান মারুফ রুমি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ